২০২৫-২৬ বাজেটে কৃষিকাজ থেকে ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত করমুক্ত আয়

ভারতের সমান্তরালে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক কাঠামোয় কৃষিক্ষेत्रের গুরুত্ব অপরিসীম। বর্তমান সরকারের দূরদর্শী নীতি বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে কৃষি থেকে আয়সরকারিকে অবলম্বন করে করমুক্ত রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে। অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ সোমবার বাজেট বক্তৃতায় ঘোষণা করেন, “কৃষি উৎপাদনকে উৎসাহিত করার লক্ষ্যে কোনো স্বাভাবিক ব্যক্তির ‘কৃষি হইতে আয়’ অনধিক ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত করমুক্ত রাখা হয়েছে।”
বাজেটের এই ধারা মূলত ভোক্তা নিরাপত্তা, খাদ্য সুরক্ষা এবং কৃষকদের আর্থিক স্বচ্ছলতা নিশ্চিত করার উদ্দেশ্যেই নেওয়া হয়েছে। দীর্ঘমেয়াদে এ নীতি গ্রামীণ অর্থনীতিতে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে ব্যাপকভাবে। নীচে এই সিদ্ধান্তের পটভূমি, বিস্তৃত অর্থনৈতিক প্রভাব এবং সংশ্লিষ্ট অন্যান্য প্রস্তাবনা নিয়ে বিশদভাবে আলোচনা করা হলো।
২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটের মূল বিন্দুসমূহ
২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য অন্তর্বর্তী সরকার ৭ লাখ ৮৯ হাজার ৯৯৯ কোটি টাকার বাজেট অনুমোদন করেছে । বাজেটের আকার গত বছরের তুলনায় প্রায় ৭ হাজার কোটি টাকা কম হলেও, কর্মসংস্থান সৃষ্টির ক্ষেত্র, করমুক্ত আয়সীমা ও সামাজিক সুরক্ষা ব্যবস্থায় বেশ কিছু উল্লেখযোগ্য ইতিবাচক সংস্কার করা হয়েছে। দেশের ৫৪তম বাজেট হওয়ায় এটি বিশেষ গুরুত্ব বহন করছে, কারণ এটি অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন সরকারের প্রথম পূর্ণাঙ্গ বাজেট। সংসদ না থাকায় বাজেট বক্তৃতার সব তথ্য রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন সহ বেসরকারি গণমাধ্যমে সরাসরি সম্প্রচার করা হয় ।
কৃষি আয় থেকে করমুক্ত নিয়মের পটভূমি ও প্রয়োজনীয়তা
কৃষিক্ষেত্রের বর্তমান চ্যালেঞ্জ
বাংলাদেশের কৃষিক্ষেত্র এখনও আঞ্চলিক অর্থনীতির হৃদয় হিসেবে বিবেচিত। দেশের প্রায় ৪০% জনসংখ্যা সরাসরি কৃষির সাথে সংশ্লিষ্ট এবং কৃষি জিডিপিতে অবদান রাখে প্রায় ১১%। যাত্রাগতভাবে খরিফ-রিক্সার চক্র, প্রাকৃতিক বিপর্যয়, মূল্যস্ফীতি, প্রণোদনা সিস্টেমের দুর্বলতা প্রভৃতি কারণে চাষিরা প্রায়ই আর্থিক ঝুঁকিতে থাকেন। বিশেষ করে বর্তমান মূল্যস্ফীতির প্রেক্ষিতে চাহিদা-যোগান অনিশ্চিত হওয়ায় কৃষকের উৎপাদন খরচ বেড়ে গেছে।
করমুক্ত আয়সীমা বৃদ্ধির উদ্দেশ্য
করমুক্ত আয়সীমা বৃদ্ধির মাধ্যমে সরকার চাষিদের দেয়া উৎসাহ বৃদ্ধি করতে চায়। করমুক্ত সুবিধা থাকলে উৎপাদন খরচের একটি অংশ সাশ্রয় হবে, যা পুনরায় বিনিয়োগ হিসেবে ফিরে আসতে পারে। ফলে মাটির উর্বরতা রক্ষা, ফসলের বৈচিত্র্য ও প্রযুক্তিগত আধুনিকীকরণে উৎসাহিত হওয়া সম্ভব হবে। এই পদক্ষেপ কৃষি খাতে ঋণগ্রস্ততা হ্রাসে মাধ্যমও হতে পারে। কৃষি উপনীতিতে আস্থা ফিরে পেলে তরুণ সমাজও অধিক আগ্রহ দেখাবে, যা জমি জাগানের ক্ষেত্রে ইতিবাচক।
সরকারের দিকে থেকে করমুক্ত আয় পরিস্থিতি রেখে কৃষকদের আড়াই-তিন-চোখে পরবর্তী স্বস্তির উপদানের পাশাপাশি দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি দেয়া হলো।
করমুক্ত আয়সীমা সংশ্লিষ্ট বিস্তারিত তথ্য
কৃষি আয় করমুক্তের শর্তাবলী
কার জন্য প্রযোজ্য:
সাধারণ (স্বাভাবিক) ব্যক্তি করদাতাদের ক্ষেত্রে ‘কৃষি হইতে আয়’ অনধিক ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত করমুক্ত হবে।
অর্থবছর ও বাজেটের প্রেক্ষাপট:
- ২০২৫-২৬ অর্থবছরে কৃষি আয় থেকে ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত করমুক্তের প্রস্তাব করা হয়েছে। বাজেট আকার ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে, যা চলতি বাজেটের তুলনায় ৭ হাজার কোটি টাকা কম ।
- দেশের ৫৪তম বাজেট এবং অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস নেতৃত্বাধীন সরকার এর প্রথম বাজেট হওয়ায় এ নীতি বিশেষ গুরুত্বের সাথে নেয়া হয়েছে।
অন্যান্য করমুক্ত আয়সীমা:
- স্বাভাবিক ব্যক্তি করদাতা: সাধারণ করদাতাদের জন্য করমুক্ত আয়সীমা ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা; তবে কৃষি আয়ের ক্ষেত্রে করমুক্ত সীমা ৫ লাখ টাকা ।
- নারী ও ৬৫ বা তার বেশি বয়সের করদাতা: ৪ লাখ টাকা পর্যন্ত করমুক্ত ।
- তৃতীয় লিঙ্গ করদাতা ও প্রতিবন্ধী স্বাভাবিক ব্যক্তি: পৌনে ৫ লাখ টাকার (৪ লাখ ৭৫ হাজার) পর্যন্ত করমুক্ত।
- গেজেটভুক্ত মুক্তিযোদ্ধা করদাতা: ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত করমুক্ত
- প্রতিবন্ধী ব্যক্তির মাতা–পিতা বা আইনানুগ অভিভাবকের প্রত্যেক সন্তান বা পোষ্যের জন্য অতিরিক্ত ৫০ হাজার টাকা করমুক্ত আয়সীমা (অর্থাৎ মোট পৌনে ৫ লাখ ৫০ হাজার)
- গেজেটভুক্ত জুলাই গণঅভ্যুত্থান ২০২৪-এর আহত জুলাই যোদ্ধা করদাতা: ২০২৬-২৭ অর্থবছর থেকে ৫ লাখ ২৫ হাজার টাকা পর্যন্ত করমুক্ত রাখার প্রস্তাব (যদিও ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে এই সুবিধা প্রযোজ্য নয়)
করমুক্ত আয়সীমা বৃদ্ধির সম্ভাব্য প্রভাব
কৃষিক্ষেত্রে বিনিয়োগ ও উৎপাদন বৃদ্ধি
কৃষি আয়ের করমুক্ত সীমা ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত বাড়লে, কৃষকেরা অগ্রিম বাজারের দিকটি ভেবে পেসিং নিয়ে উৎপাদন বাড়াতে পারবে। বিনিয়োগের মূলধন আয়ের অংশ থেকে সরাসরি আসতে পারলে, খোঁড়াখুঁড়ি, সার ও কীটনাশক সামগ্রী কেনা ও প্রযুক্তিগত উন্নয়নে বিনিয়োগ বৃদ্ধি পাবে। এর ফলে:
- উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি: উন্নত বীজ ও প্রযুক্তি ব্যবহার করে উৎপাদন বাড়বে।
- আয় বাড়বে: আয়ের একটি বড় অংশ করমুক্ত থাকায় নেট আয় বৃদ্ধি পাবে।
- ঋণ নির্ভরতা হ্রাস: চাহিদা মেটাতে ঋণের উপর নির্ভর কম হবে, ঋণগ্রস্ততা কমবে।
খাদ্য নিরাপত্তা ও মূল্য স্থিতিশীলতা
বাজারে খাদ্য পরিবেশের স্বচ্ছতা বজায় রাখতে হলে উৎপাদন তরল রাখতে হবে। কৃষকদের উপার্জন বাড়লে উৎসাহিত হয়ে তারা ফসলের পরিমাণ ও বৈচিত্র্য উন্নত করবেন। ফলে বাজারে পণ্য সরবরাহ বেড়ে দামের ওঠা-নামা কিছুটা নিয়ন্ত্রিত হবে।
গ্রামীণ অর্থনীতিতে স্থান সৃষ্টি
কৃষি ক্ষেত্রে বিনিয়োগ বাড়লে অনগ্রসর ও অপরিবর্তিত হতে থাকা গ্রামীণ এলাকা গুলোর অর্থনৈতিক গতিশীলতা বৃদ্ধি পাবে। যুবকরা গ্রামে থেকে কৃষি উন্নয়নমূলক কাজে পদক্ষেপ নেবে। এ ধারা গ্রামীণ অডিয়েন্স ভিত্তিক ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসা বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে।
বিশেষ নাগরিক ও অন্যান্য প্রান্তিক গোষ্ঠীর সুবিধা
নারী ও প্রবীণ করদাতা
নারী করদাতা ও ৬৫ বছরের বেশি বয়সী করদাতাদের ক্ষেত্রে ৪ লাখ টাকা করমুক্ত চালু থাকলেও, কৃষি আয় বিষয়ে আর্থিক উন্নয়নের সুযোগ থাকে ৫ লাখ টাকার পার্থক্য। ফলে নারীরা অর্ধেক করমুক্ত সুবিধা থেকে বেশি বিস্তৃত সুবিধা পাবেন। প্রবীণরা যদি কৃষিকে পেশা হিসাবে ধরে রাখতে চান, তাহলেও পর্যাপ্ত করমুক্ত সুযোগ পাবেন।
তৃতীয় লিঙ্গ ও প্রতিবন্ধী করদাতা
তৃতীয় লিঙ্গ এবং প্রতিবন্ধী করদাতাদের পৌনে ৫ লাখ পর্যন্ত (৪ লাখ ৭৫ হাজার + ৫০ হাজার) করমুক্ত রাখা হয়েছে। এ পদক্ষেপ সামাজিক ন্যায্যতা ও সাম্যবাদী নীতির প্রতিফলন। অগ্রাধিকার সুবিধা দিয়ে এগুলোকে মূল বাজেটের অংশ করা হয়েছে।
গেজেটভুক্ত মুক্তিযোদ্ধা ও আহত জুলাই যোদ্ধারা
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে অবদান রাখার স্বীকৃতিস্বরূপ গেজেটভুক্ত মুক্তিযোদ্ধা করদাতাদের ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত করমুক্ত সুযোগ রাখা হয়েছে। একই সাথে আগামী অর্থবছর (২০২৬-২৭) থেকে আহত জুলাই যোদ্ধাদের করমুক্ত আয়সীমা ৫ লাখ ২৫ হাজার টাকা পর্যন্ত বৃদ্ধির প্রস্তাব দেয়া হয়েছে।
নতুন করদাতাদের জন্য ন্যূনতম কর ও অন্যান্য কর ব্যবস্থা
২০২৫-২৬ বাজেটে নতুন ব্যক্তি করদাতাদের জন্য ন্যূনতম কর ১ হাজার টাকা নির্ধারণের প্রস্তাব করা হয়েছে। এর মানে, কোনো করদাতা আয়ের পরিমাণ নির্বিশেষে ১ হাজার টাকা কর প্রদান করলে করদাতা হিসেবে বিবেচিত হবেন। বর্তমান অবস্থায় যারা করদাতা হিসেবে বিবেচিত হতে চান তাদের জন্য মানদণ্ড ছিল ঢাকা ও চট্টগ্রাম সিটিতে ৫ হাজার, অন্যান্য সিটিতে ৪ হাজার, সিটিকরপোরেশন বাদে অন্যান্য এলাকায় ৩ হাজার টাকা কর দান। নতুন করদাতা বাধ্যতামূলক ১ হাজার টাকা কর দিয়ে করদাতা হিসেবে গণ্য হবেন।
এর পাশাপাশি আয়ের কর হার পুনর্বিন্যাস করা হয়েছে।
- প্রথম ৩.৫ লাখ টাকার পরবর্তী আয়ের জন্য কর হার বিভিন্ন স্তরে নির্ধারণ:
- পরবর্তী ১ লাখ টাকার জন্য ৫%
- পরবর্তী ৪ লাখ টাকার জন্য ১০%
- পরবর্তী ৫ লাখ টাকার জন্য ১৫%
- পরবর্তী ৫ লাখ টাকার জন্য ২০%
- পরবর্তী ২০ লাখ টাকার জন্য ২৫%
- বাকি অর্থের ওপর ৩০% কর আরোপ করা হবে।
এই কর কাঠামো মধ্যবিত্ত ও উচ্চ আয়কারী উভয় ক্ষেত্রেই কর আহরণের স্বচ্ছতা বাড়ায় এবং প্রান্তিক পরিমাণে মানুষকে আর্থিক স্বস্তি দেয়।
বিশেষ প্রস্তাবনা ও অন্যান্য প্রভাব
খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি সম্প্রসারণ
প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ৫৭ লাখ পরিবারকে টিসিবির মাধ্যমে সঞ্চালিত স্মার্ট ফ্যামিলি কার্ড প্রণালীর আওতায় মসুর ডাল, সয়াবিন তেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য সরবরাহ করা হচ্ছে। পরবর্তী অর্থবছরে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির মেয়াদ ৬ মাসে উন্নীত করার প্রস্তাব করা হয়েছে। এছাড়া বর্তমানে সহায়তাপ্রাপ্ত ৫০ লাখ পরিবারের পাশাপাশি অতিরিক্ত ৫ লাখ পরিবারকে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় আনার প্রস্তাব করা হয়েছে ।
নারী উদ্যোক্তা তহবিল
নারী উদ্যোক্তা বৃন্দের অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন বাড়াতে বাজেটে ১২৫ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে। উদ্যোক্তা সুরক্ষা, শিক্ষা–প্রশিক্ষণ, সংস্কৃতি অবকাঠামো নির্মাণসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে এই তহবিল থেকে সুবিধা পাবে নারী উদ্যোক্তারা ।
অন্যান্য করছাড় ও প্রণোদনা
বাজেটে বিভিন্ন পণ্য যেমন চিনি, আইসক্রিম, কলমসহ কিছু গুরুত্বপূর্ণ পণ্যের শুল্ক-কর কমানোর ঘোষণা দেয়া হয়েছে, যা এ শিল্পের উৎপাদন ও ব্যবসায় সাশ্রয়ী অবস্থা তৈরি করবে । এছাড়া ব্যাংকে আমানত সঞ্চয়ে শুল্ক ছাড়, বিদ্যুৎ খাতে বিনিয়োগ, স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ–এসব পুরোপুরি তুলে ধরা হয়নি মূল আলোচনাতে, তবে পর্যায়ক্রমে ঘোষণা করা হয়েছে।
বিশেষজ্ঞ মতামত
চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট ও কর বিশেষজ্ঞ স্নেহাশীষ বড়ুয়া মনে করেন, “কৃষিক্ষেত্রে করমুক্ত সুবিধা বাড়ানোর ফলে প্রান্তিক কৃষকরা কিছুটা স্বস্তি পাবে। তবে নারী, বৃদ্ধ এবং প্রতিবন্ধীদের ক্ষেত্রেও সমানভাবে সুবিধা বাড়ানো উচিত ছিল। কৃষি খাতের উন্নয়নে দীর্ঘমেয়াদে বিনিয়োগ বাড়ানো জরুরি।”
অর্থনীতিবিদদের একাংশ বলছেন, “করমুক্ত অবস্থান কৃষিজমিতে নতুন প্রযুক্তির ব্যবহার ত্বরান্বিত করবে এবং কৃত্রিম সার, বীজ উদ্বোধন, আধুনিক কৃষি যন্ত্রপাতি ব্যবহার বৃদ্ধি পাবে; ফলে উৎপাদনশীলতার গ্রাফ ঊর্ধ্বমুখী হবে।” তবে কিছু বিশ্লেষক যুক্তি দেন, “যদি বাজেটের অন্য প্রবলেম যেমন দারিদ্র্য বিমোচন, সুবিধাবঞ্চিতদের সুরক্ষা ব্যবস্থা ঠিকমতো না থাকে, তাহলে কৃষিকে উৎসাহিত করলেও সাধারণ মানুষের জীবনে পরিবর্তনটা অপেক্ষাকৃত অপ্রতিসাময়িক হতে পারে।”
২০২৫-২৬ বাজেটে কৃষি থেকে ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত আয় করমুক্ত রাখার সিদ্ধান্ত গ্রামীণ অর্থনীতিতে সুষম প্রভাব ফেলতে পারে। করমুক্ত সুযোগ যদি সঠিকভাবে প্রয়োগ করা হয়, তা হলে কৃষক সম্প্রদায়ের হাতে আর্থিক ল্যাঞ্চন হবে, উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি পাবে এবং দেশের খাদ্য নিরাপত্তা বলবৎ হবে। তবে এই সুযোগ অব্যাহত রাখা এবং পর্যায়ক্রমে পরিমার্জিত করা কার্যকরি প্রতিষ্ঠানগুলোকে শক্তিশালী করতে হবে।
অর্থনৈতিক কাঠামো তথা বাজেট নীতিতে কৃষিক্ষেত্রকে অগ্রাধিকার না দিলে দেশের অগ্রগতি কল্পিত লক্ষ্যগুলো অর্জন কঠিন হয়ে দাঁড়াবে। তাই এ করমুক্ত আয়সীমা বৃদ্ধির পাশাপাশি অন্যান্য প্রণোদনা ব্যবস্থা, কৃষি প্রযুক্তি অবকাঠামো বিনিয়োগ, কৃষি শিক্ষায় সহায়তা এবং বিপণন ব্যবস্থার উন্নয়নে মনোযোগ দেওয়া প্রয়োজন।