শিক্ষা

কুয়েটে-হামলার-ঘটনায়-বিশ্ববিদ্যালয়-প্রশাসনের-মামলা

খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন মামলা দায়ের করেছে। বুধবার, ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, কুয়েট প্রশাসনের পক্ষ থেকে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের (কেএমপি) খানজাহান আলী থানায় মামলাটি করা হয়। মামলায় অজ্ঞাত ৪০০-৫০০ জনকে আসামি করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কবির হোসেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) শাহেদুজ্জামান শেখ মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। কুয়েটের ৯৮তম জরুরি সিন্ডিকেট সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এই মামলা দায়ের করা হয়।

হামলার পটভূমি মঙ্গলবার, ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, বিশ্ববিদ্যালয়ে একদল বহিরাগত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায় বলে অভিযোগ ওঠে। শিক্ষার্থীরা জানায়, তারা প্রশাসনের কাছে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছিল। তবে, হঠাৎ করে সংঘর্ষের ঘটনায় অনেকে আহত হয়। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাৎক্ষণিকভাবে তদন্ত কমিটি গঠন করে এবং সিন্ডিকেট সভায় বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করে।

সিন্ডিকেট সভার সিদ্ধান্ত বুধবার ভার্চুয়াল মাধ্যমে অনুষ্ঠিত কুয়েটের ৯৮তম সিন্ডিকেট সভায় বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

১. বিশ্ববিদ্যালয়ে সব ধরনের রাজনৈতিক সংগঠনের কার্যক্রম নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত বহাল রাখা। ২. শিক্ষার্থীদের রাজনৈতিক সংগঠনের সঙ্গে জড়িত থাকা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ ঘোষণা। ৩. শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ততা নিষিদ্ধ করা। ৪. আইন অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষে চাকরিচ্যুতিসহ কঠোর শাস্তির বিধান রাখা। ৫. হামলায় জড়িত প্রকৃত দোষীদের খুঁজে বের করা ও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ। ৬. রাজনৈতিক কার্যক্রমে জড়িত শিক্ষার্থীদের আজীবন বহিষ্কার ও ছাত্রত্ব বাতিলের সিদ্ধান্ত।

শিক্ষার্থীদের প্রতিক্রিয়া কুয়েট শিক্ষার্থীরা প্রশাসনের এ সিদ্ধান্তকে মিশ্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। অনেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে নিরাপদ পরিবেশ তৈরির জন্য প্রশাসনের উদ্যোগকে স্বাগত জানালেও, কিছু শিক্ষার্থী রাজনৈতিক কার্যক্রম সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্তের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তাদের মতে, শিক্ষার্থীদের গণতান্ত্রিক অধিকার সুরক্ষিত রাখার বিষয়টি প্রশাসনের বিবেচনায় নেওয়া উচিত।

বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ ও প্রশাসনিক ব্যবস্থা হামলার ঘটনায় ক্যাম্পাসে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। শিক্ষার্থীদের মধ্যে উদ্বেগ কাজ করছে, বিশেষ করে যারা নিয়মিত ক্লাস ও গবেষণার সঙ্গে জড়িত। বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক বিভাগের শিক্ষার্থীরা জানান, প্রশাসনের কার্যকর উদ্যোগ ছাড়া ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা আবারও ঘটতে পারে। নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করা প্রয়োজন বলে মত দেন অনেকে।

বিশ্লেষকদের মতামত বিশ্লেষকদের মতে, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরে রাজনীতি নিষিদ্ধ করা হলেও বহিরাগত হস্তক্ষেপ বন্ধ না হলে সমস্যা সমাধান হবে না। শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে আরও কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।

মন্তব্য করুন

Related Articles

Back to top button