শিক্ষা

স্থগিতকৃত উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা আলাদা তারিখে নেয়া হবে

Advertisement

বিভিন্ন অনিবার্য কারণে স্থগিত হওয়া উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা সমূহ নতুন তারিখে গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে আন্তঃশিক্ষা বোর্ড পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক কমিটি। পুনঃনির্ধারিত সূচি প্রকাশ করা হয়েছে এবং ব্যবহারিক পরীক্ষার সময়সীমাও নির্ধারণ করা হয়েছে।

পরীক্ষার নতুন সূচি ঘোষণা করলো বোর্ড

২০২৫ সালের উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার কয়েকটি বিষয় অনিবার্য কারণে পূর্বঘোষিত তারিখে অনুষ্ঠিত না হওয়ায় এগুলোর জন্য পুনঃনির্ধারিত তারিখ ঘোষণা করেছে আন্তঃশিক্ষা বোর্ড পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক কমিটি।

বুধবার (২৩ জুলাই) কমিটির আহ্বায়ক ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক প্রফেসর এসএম কামাল উদ্দিন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, স্থগিত হওয়া পরীক্ষাগুলো আগামী আগস্ট মাসে নির্দিষ্ট তারিখে অনুষ্ঠিত হবে।

কোন কোন পরীক্ষার তারিখ পরিবর্তন হয়েছে?

স্থগিত হওয়া পরীক্ষাগুলোর নতুন সময়সূচি অনুযায়ী:

  • ১০ জুলাই ২০২৫ তারিখের পরীক্ষা নেওয়া হবে ১২ আগস্ট ২০২৫ তারিখে
  • ১৭ জুলাই ২০২৫ এর পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে ১৪ আগস্ট ২০২৫ তারিখে
  • ২২ জুলাই ২০২৫ তারিখের পরীক্ষা নেওয়া হবে ১৭ আগস্ট ২০২৫ তারিখে
  • ২৪ জুলাই ২০২৫ তারিখের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে ১৯ আগস্ট ২০২৫ তারিখে

এছাড়া ১৯ আগস্টে অনুষ্ঠিতব্য ‘প্রকৌশল অঙ্কন ও ওয়ার্কশপ প্র্যাকটিস (১ম পত্র)’ বিষয়ের পরীক্ষা শিক্ষার্থীদের নিজ নিজ কলেজে নেওয়া হবে।

বোর্ড নির্দেশনা দিয়েছে, সংশ্লিষ্ট কলেজের অধ্যক্ষ উক্ত তারিখে সকাল ৯টা থেকে প্রধান কেন্দ্র থেকে প্রশ্নপত্র সংগ্রহ করে পরীক্ষার আয়োজন করবেন। পরীক্ষাটি ড্রইং শিটে নিতে হবে। তবে শিক্ষার্থীর প্রবেশপত্রে যেই কেন্দ্র কোড উল্লেখ থাকবে, সেটিই ব্যবহার করতে হবে উত্তরপত্রসহ সব কাগজে।

ব্যবহারিক পরীক্ষার সময়সীমা ও জমাদানের নির্দেশনা

সাধারণ বিষয়সমূহের ব্যবহারিক পরীক্ষা গ্রহণের জন্য নির্ধারিত সময় ২১ আগস্ট ২০২৫ থেকে ৩১ আগস্ট ২০২৫ এর মধ্যে।

এই সময়সীমার মধ্যেই সংশ্লিষ্ট কলেজগুলোকে পরীক্ষা শেষ করতে হবে।

এছাড়া ব্যবহারিক নম্বর অনলাইনে এন্ট্রি করে পরীক্ষার উত্তরপত্র, স্বাক্ষরলিপি ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র রোল নম্বর অনুসারে সাজিয়ে সর্বশেষ ৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫ এর মধ্যে বোর্ডে জমা দিতে হবে। এটি করতে হবে বোর্ড কর্তৃক মনোনীত ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বা তার প্রতিনিধির মাধ্যমে।

স্থগিতের পেছনের কারণ ও শিক্ষার্থীদের প্রতিক্রিয়া

বোর্ড সরাসরি ‘অনিবার্য কারণ’ উল্লেখ করলেও শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে চলমান বন্যা পরিস্থিতি, যানবাহন সংকট, রাজনৈতিক কর্মসূচি এবং কিছু কেন্দ্রে প্রযুক্তিগত জটিলতা।

এই স্থগিতাদেশের ফলে অনেক শিক্ষার্থী মানসিকভাবে অস্থির হয়ে পড়ে। পুনরায় প্রস্তুতি নিতে অনেকের সময় ব্যবস্থাপনা বিঘ্নিত হয়েছে বলে জানিয়েছেন অভিভাবকরা। তবে নতুন তারিখ দ্রুত জানানোয় তারা কিছুটা স্বস্তি পাচ্ছেন।

ঢাকার এক পরীক্ষার্থী বলেন, “একবার মনোসংযোগ ভেঙে গেলে আবার নতুনভাবে পড়াশোনা শুরু করা কঠিন। তবুও নতুন তারিখ জানার পরে প্রস্তুতি নেওয়া সহজ হবে।”

অতীতেও এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল

২০২২ ও ২০২৩ সালেও প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ পাবলিক পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছিল। তখনো বিকল্প তারিখ নির্ধারণ করে যথাসময়ে পরীক্ষা নেওয়া হয়েছিল।

তবে এবারের মতো অল্প সময়ের ব্যবধানে চারটি পরীক্ষার তারিখ পরিবর্তন একসঙ্গে হওয়া বেশ ব্যতিক্রমধর্মী। এতে বোর্ডের তৎপরতা এবং দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণের বিষয়টি বিশেষভাবে প্রশংসিত হচ্ছে।

বিশ্লেষকদের মতামত

শিক্ষা বিশ্লেষক ড. মনজুর কাদির বলেন, “পরীক্ষা নিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে অস্থিরতা থাকাটা স্বাভাবিক। তবে বোর্ড যদি সময়মতো সঠিক ও পরিষ্কার নির্দেশনা দেয়, তাহলে সমস্যার সমাধান সম্ভব।”

তিনি আরও বলেন, “আশা করি, নতুন তারিখে নিরবচ্ছিন্নভাবে পরীক্ষা সম্পন্ন হবে এবং কোনো শিক্ষার্থী যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেদিকে নজর দেওয়া জরুরি।”

সারসংক্ষেপ  

স্থগিত হওয়া এইচএসসি পরীক্ষাগুলোর জন্য পুনঃনির্ধারিত তারিখ ঘোষণা বোর্ডের একটি সময়োপযোগী ও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ। শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে যে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছিল, এই ঘোষণার মাধ্যমে তা অনেকটাই নিরসন হয়েছে।

এম আর এম – ০৪৮৫  , Signalbd.com

মন্তব্য করুন
Advertisement

Related Articles

Back to top button