শিক্ষা

ঢাকা শিক্ষা বোর্ড ষষ্ঠ ও অষ্টম শ্রেণির বাদপড়া শিক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশন সময় বাড়ল

Advertisement

ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড কর্তৃক ঘোষিত, ২০২৪ শিক্ষাবর্ষের ষষ্ঠ ও অষ্টম শ্রেণির বাদপড়া শিক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশন করার সময়সীমা বাড়িয়ে ৩১ জুলাই ২০২৫ পর্যন্ত করা হয়েছে। এই নির্দেশনা বোর্ডের চেয়ারম্যানের অনুমোদনে বিদ্যালয় পরিদর্শক অধ্যাপক কাজী ফয়জুর রহমান স্বাক্ষরিত আদেশের মাধ্যমে জারি করা হয়েছে।

বাদপড়া শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ সুবিধা

ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের আওতাধীন অনুমোদিত এবং স্বীকৃত সব মাধ্যমিক, স্কুল ও কলেজ পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যেসব শিক্ষার্থী ষষ্ঠ বা অষ্টম শ্রেণিতে পড়ার সুযোগ থেকে বাদ পড়েছিলেন, তাদের পুনরায় শিক্ষাবর্ষে ভর্তি ও রেজিস্ট্রেশনের জন্য এই সুযোগ দীর্ঘায়িত করা হলো। বিশেষ করে শিক্ষার্থীদের একাডেমিক ক্ষতি যাতে না হয় সেজন্য এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

রেজিস্ট্রেশন সময়সীমার বিস্তারিত তথ্য

  • সময়সীমা: ৩১ জুলাই ২০২৫ তারিখ পর্যন্ত বাদপড়া শিক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশন করা যাবে।
  • সীমা পার হলে: ৩১ জুলাইয়ের পর কোনোভাবেই বাদপড়া শিক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশন গ্রহণযোগ্য হবে না। এই দায়িত্ব পুরোপুরি সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের প্রধানের উপর থাকবে।
  • অন্যান্য বোর্ড থেকে আসা শিক্ষার্থী: যারা অন্য শিক্ষা বোর্ড থেকে ট্রান্সফার সার্টিফিকেট (টিসি) নিয়ে এসেছেন, তাদেরকেও একই সময়সীমার মধ্যে রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করতে হবে।

শিক্ষাব্যবস্থায় বাদপড়া শিক্ষার্থীদের গুরুত্ব

বাংলাদেশে শিক্ষার সার্বিক উন্নয়নের পাশাপাশি সবচেয়ে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে ‘শিক্ষা থেকে বাদ পড়া’ বা ‘ছাড়পত্র না পাওয়া’ শিক্ষার্থীদের পুনর্বাসনের ওপর। বিশেষত প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ে শিক্ষার্থীরা নানা কারণে পড়াশোনা থেকে ছিটকে যেতে পারে। যেমন- আর্থিক অসচ্ছলতা, পারিবারিক সমস্যা, বিদ্যালয়ের দূরত্ব ইত্যাদি।

ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের এই পদক্ষেপে শিক্ষার্থীদের পুনরায় স্কুলে ফিরিয়ে আনতে এবং শিক্ষার ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে সহায়তা করবে।

অভিভাবক ও শিক্ষকদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্য

  • অভিভাবক ও শিক্ষকদের সতর্কতা: রেজিস্ট্রেশন সময়সীমা শেষ হওয়ার আগেই দ্রুত আপনার সন্তানের রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করুন। সময়মতো না করলে পরবর্তীতে রেজিস্ট্রেশন অসম্ভব হবে।
  • বিদ্যালয়ের দায়িত্ব: বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে নিশ্চিত করতে হবে যে, সকল বাদপড়া শিক্ষার্থীর রেজিস্ট্রেশন সময়মতো সম্পন্ন হয়েছে। ব্যর্থতার ক্ষেত্রে দায়ভার প্রতিষ্ঠান প্রধানের ওপর বর্তাবে।

বাদপড়া শিক্ষার্থীদের পুনঃরেজিস্ট্রেশন কেন জরুরি?

ছাত্রদের পড়াশোনা থেকে বাদ পড়া মানেই তাদের শিক্ষাজীবনে বিরতি বা থেমে যাওয়ার শঙ্কা। শিক্ষাব্যবস্থায় এমন অনেক শিক্ষার্থী আছেন যাদের নানা কারণে শিক্ষা থেকে ছিটকে যেতে হয়েছে। পুনঃরেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া তাদের পুনরায় পড়াশোনা শুরু করার সুযোগ করে দেয়। এতে করে:

  • শিক্ষার্থীরা শিক্ষার ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে পারবেন।
  • শিক্ষার্থীদের মানসিক আত্মবিশ্বাস ফিরে আসবে।
  • দীর্ঘমেয়াদে শিক্ষার গুণগত মান উন্নয়নে সহায়ক হবে।
  • দেশীয় শিক্ষা সূচকে ‘বাধাগ্রস্ত শিক্ষার্থী’ সংখ্যা কমবে।

অন্যান্য শিক্ষা বোর্ডের রেজিস্ট্রেশন সময়সূচী

ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের পাশাপাশি দেশের অন্যান্য শিক্ষা বোর্ডেও বাদপড়া শিক্ষার্থীদের পুনঃরেজিস্ট্রেশন নিয়ে নির্দিষ্ট সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়। তবে ঢাকা বোর্ডের ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের সংখ্যা বেশি হওয়ায় এটি বিশেষ গুরুত্ব বহন করে।

সরকার ও শিক্ষা বোর্ডের পদক্ষেপ

সরকার ও শিক্ষা বোর্ড মিলেমিশে শিক্ষাব্যবস্থার উন্নয়নে কাজ করছে। বিশেষ করে বাদপড়া শিক্ষার্থীদের পুনঃশিক্ষায় ফিরে আসার জন্য নানা কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়েছে। যেমন:

  • শিক্ষার্থী প্রত্যাবর্তন কর্মসূচি চালু।
  • আর্থিক সহায়তা ও বৃত্তি প্রদান।
  • স্কুল-কলেজ পর্যায়ে মনিটরিং ও পরামর্শ সেবা বৃদ্ধি।
  • শিক্ষক প্রশিক্ষণ ও শিক্ষার মান উন্নয়ন।

শিক্ষার্থীদের জন্য পরামর্শ

১. যত দ্রুত সম্ভব রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করুন, যেন শিক্ষা থেকে বাদ পড়ার সুযোগ না হয়।
২. বিদ্যালয়ের অফিসে নিয়মিত যোগাযোগ রাখুন এবং প্রয়োজনীয় কাগজপত্র প্রস্তুত রাখুন।
৩. যারা অন্য বোর্ড থেকে আসছেন, তাদের অবশ্যই ট্রান্সফার সার্টিফিকেট সহ প্রয়োজনীয় নথিপত্র নিয়ে আসতে হবে।
৪. পড়াশোনায় মনোযোগ বৃদ্ধি ও নিয়মিত স্কুলে উপস্থিত থাকার চেষ্টা করুন।
৫. অভিভাবকদের উচিত সন্তানের পড়াশোনায় সহযোগিতা করা এবং বিদ্যালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা।

যোগাযোগ ও আরও তথ্য

বাদপড়া শিক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশন সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য ও সাহায্যের জন্য ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে (www.dhakaeducationboard.gov.bd) যোগাযোগ করতে হবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোও নিয়মিত বিজ্ঞপ্তি ও নির্দেশনা প্রদান করবে।

ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের এই উদ্যোগে বাদপড়া শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবনে নতুন করে সুযোগ করে দেওয়া হলো। সময়সীমা বাড়ানো হয়েছে, যা তাদের শিক্ষায় ফিরতে সহায়ক হবে। তাই সংশ্লিষ্ট সবাই যেন এই সুযোগ কাজে লাগায় এবং কোনো শিক্ষার্থী শিক্ষার সুযোগ থেকে বঞ্চিত না হয়, সেদিকে সকলের দৃষ্টি দেওয়া জরুরি।

মন্তব্য করুন
Advertisement

Related Articles

Back to top button