জুলাই ২০২৫ সালে ঢাকায় অনুষ্ঠিত তিন ম্যাচের টি‑টোয়েন্টি সিরিজে বাংলাদেশ পাকিস্তানকে ২‑১ ব্যবধানে পরাজিত করেছে। এই সিরিজটি পাকিস্তানের জন্য একটি ইতিহাসস্মরণীয় ব্যর্থতা হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। সিরিজের পর সাবেক পাক ক্রিকেটাররা, বিশেষ করে রমিজ রাজা ও রশিদ লতিফ, দলের দুর্বলতা নিয়ে তীব্র সমালোচনা করেছেন। এই প্রতিবেদনে সিরিজের বিশ্লেষণ, সমালোচনা এবং পাকিস্তানের ভবিষ্যৎ চ্যালেঞ্জ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে।
সিরিজের সংক্ষিপ্ত বিবরণ
তারিখ ও স্থান
সিরিজটি ২০–২৪ জুলাই ২০২৫, ঢাকার শের‑ই‑বাংলা স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হয়।
সিরিজের পরিবর্তন
আসলে সিরিজটি প্রথমে পাঁচ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ হিসেবে পরিকল্পনা করা হয়েছিল, কিন্তু পরে এটি তিনটি টি‑টোয়েন্টি ম্যাচে রূপান্তরিত করা হয়। এই পরিবর্তনটি আসন্ন এশিয়া কাপ ও টি‑টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রস্তুতির জন্য করা হয়।
সিরিজ ফলাফল
বাংলাদেশ ২–১ ব্যবধানে সিরিজটি জিতে নেয়, যা পাকিস্তানের বিরুদ্ধে তাদের প্রথম টি‑টোয়েন্টি সিরিজ জয়।
স্ট্যাটিস্টিকস
- বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক: জাকার আলী ৭১ রান
 - পাকিস্তানের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক: সাহিবজাদা ফারহান ৬৩ রান
 - বাংলাদেশের বোলিংয়ে: তাসকিন আহমেদ ৬ উইকেট
 - পাকিস্তানের বোলিংয়ে: সালমান মির্জা ৭ উইকেট
 - টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড়: জাকার আলী (বাংলাদেশ)
 
সিরিজের ম্যাচ বিশ্লেষণ
প্রথম ম্যাচ
প্রথম ম্যাচে পাকিস্তান হেরে যায়, যদিও খেলা ছিল হাড্ডাহাড্ডি। বাংলাদেশ তাদের শক্তিশালী বোলিংয়ের মাধ্যমে পাকিস্তানের ব্যাটিং লাইনআপকে চাপে ফেলতে সক্ষম হয়।
দ্বিতীয় ম্যাচ
দ্বিতীয় ম্যাচে বাংলাদেশ পাকিস্তানকে ৮ রানে হারিয়ে সিরিজ নিশ্চিত করে। এই ম্যাচে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা দুর্দান্ত পারফরম্যান্স দেখান এবং পাকিস্তানের বোলিংকে চ্যালেঞ্জ করেন।
তৃতীয় ম্যাচ
তৃতীয় ম্যাচে পাকিস্তান সামান্য হলেও জয়লাভ করে, ৭৪ রানে। তবে সিরিজ হার রোধ করতে পারেনি।
সাবেক ক্রিকেটারদের সমালোচনা
রশিদ লতিফের মন্তব্য
সিরিজ পরবর্তী সময়ে রশিদ লতিফ বলেন, “বাংলাদেশের কাছে তারা (পাকিস্তান) পারফরম্যান্স দেখিয়ে সিরিজ হারানো উচিত ছিল না।” তিনি উল্লেখ করেন যে, শেষ কয়েক বছর ধরে পাকিস্তানের বোলিং আক্রমণের গতি ও মান প্রবলভাবে কমে গেছে।
তিনি আরো বলেন, “পাকিস্তান ক্রিকেট এখন আইসিইউতে—দ্রুত পেশাদার দৃষ্টি প্রয়োজন।” তিনি অভিযোগ করেন যে, যারা গত ৪-৫ বছরের মধ্যে পিসিবির চেয়ারম্যান হয়েছেন, তারা দলকে ধ্বংস করেছেন।
রমিজ রাজার গ্রহণ
রমিজ রাজা বলেন, “পেসিং আক্রমণের শোক” পাকিস্তান হারার অন্যতম কারণ। তিনি বলেন, “দীর্ঘদিন ধরেই আমাদের পেস বোলিং যখন ইতিহাসে এক শক্তিশালী অস্ত্র ছিল, আজ সে জৌলুস লুপ্ত।”
তিনি যুক্তি দেন যে, পাকিস্তান চাপ সামলাতে পারছে না, যা ফলাফলকে ব্যর্থতার দিকে নিয়ে যাচ্ছে।
চ্যালেঞ্জ ও আশির্ত সম্ভাবনা
এশিয়া কাপের প্রস্তুতি
আগামী এশিয়া কাপ ২০২৫ টি‑টোয়েন্টি সংস্করণে অনুষ্ঠিত হবে। পাকিস্তান ‘এ’ গ্রুপে রয়েছে ভারতের বিপক্ষে, যা রমিজ ও রশিদ উভয়ের মতে পাকিস্তানের জন্য চ্যালেঞ্জিং। রশিদ বলেন, “ভারতের বিপক্ষে ম্যাচ অনেক চ্যালেঞ্জিং হবে; এশিয়া কাপ যেন ঝামেলাবিহীন ভাবে শেষ হয়, সেই প্রত্যাশা।”
ফখর জামানের চোট ও বাবরের প্রত্যাবর্তন
তৃতীয় ম্যাচের সময় ফখর জামানের হ্যামস্ট্রিং চোট দলের জন্য বড় ধাক্কা। এ অবস্থায় বাবর আজমের আন্তর্জাতিক টি‑টোয়েন্টি দলে ফিরে আসার সম্ভাবনা বেড়েছে।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে ওয়ানডে সিরিজ
টি‑টোয়েন্টির পর পাকিস্তান ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ এখন ওয়ানডে সিরিজ খেলছে, যা ১০ ও ১২ আগস্ট ত্রিনিদাদে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এরপর আয়োজিত হবে ত্রিদেশীয় টি‑টোয়েন্টি সিরিজ, যা এশিয়া কাপের প্রস্তুতি হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ।
পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড ও নেতৃত্ব সমস্যা
রশিদ লতিফ পিসিবির গত কয়েক বছরের দায়িত্বশীলদের সমালোচনা করছেন। তিনি বলেন, “ফরম্যাট ও দল নির্বাচনে বিভ্রাট ও সিদ্ধান্ত গ্রহণের অযোগ্যতার বিষয়টি তুলে ধরেন।”
রমিজ রাজা সংস্কার ও নেতৃত্বের অভাব নিয়ে উদ্বিগ্ন। তিনি বলেন, “যে ব্যক্তি ক্যাপ্টেন নিয়োগ বা সিলেকশন কমিটি গঠন করতে পারে—তার উপরে সম্পূর্ণ ক্ষমতা দেয়া উচিত নয়।”
MAH – 12162 , Signalbd.com
				
					


