কর্মসংস্থান

প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ১৭৭০৯ শিক্ষক নিয়োগ দিচ্ছে সরকার

Advertisement

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মোট ১৭,৭০৯ জন শিক্ষক নিয়োগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, এর মধ্যে ১৫,৩২৭টি সহকারী শিক্ষক পদে দ্রুত নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এছাড়া ২,৩৮২টি প্রধান শিক্ষক পদেও সরাসরি নিয়োগ কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। নতুন নিয়োগ বিধিমালা বর্তমানে লেজিসলেটিভ বিভাগে ভেটিংয়ের জন্য পাঠানো হয়েছে।

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নতুন নিয়োগের বিস্তারিত

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানায়, সহকারী শিক্ষক নিয়োগের জন্য ‘সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক নিয়োগ বিধিমালা-২০১৯’ সংশোধনের খসড়া তৈরি করা হয়েছে। এই খসড়া লেজিসলেটিভ বিভাগে ভেটিংয়ের জন্য পাঠানো হয়েছে। আইন মন্ত্রণালয়ের ভেটিং সম্পন্ন হওয়ার পর আগামী এক মাসের মধ্যে নিয়োগ কার্যক্রম শুরু করা যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।

সহকারী শিক্ষক ও প্রধান শিক্ষক পদে শূন্যপদ

বর্তমানে দেশের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ১০,১৬১টি সহকারী শিক্ষক পদ শূন্য রয়েছে। এছাড়া সংগীত ও শারীরিক শিক্ষা বিষয়ে ৫,১৬৬টি পদ খালি রয়েছে। প্রধান শিক্ষকের পদেও বড় সংকট দেখা দিয়েছে। দেশে প্রধান শিক্ষকের ৩৪,১০৬টি পদ শূন্য রয়েছে। বিদ্যমান নীতিমালা অনুযায়ী এসব পদে ৬৫% পদোন্নতি ও ৩৫% সরাসরি নিয়োগের বিধান থাকলেও নতুন প্রস্তাবিত সংশোধনী অনুযায়ী অনুপাত পরিবর্তন করে ৮০:২০ করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।

নিয়োগ প্রক্রিয়া ও সময়সীমা

প্রধান শিক্ষক নিয়োগের জন্য সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) মাধ্যমে দ্রুত পরীক্ষা নেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। পদোন্নতির মাধ্যমে যে শূন্যপদ পূরণ করা সম্ভব, সেগুলোও দ্রুত সম্পন্ন করার পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সহকারী শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া দ্রুততার সঙ্গে সম্পন্ন করার জন্য আইন মন্ত্রণালয়ের ভেটিংয়ের অপেক্ষা রয়েছে। এছাড়া প্রধান শিক্ষক নিয়োগে পিএসসির সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখা হচ্ছে।

সরকারের পূর্ববর্তী উদ্যোগ ও কর্মপরিকল্পনা

গত ১৪ জুলাই প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত সভায় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস শূন্যপদ দ্রুত পূরণের নির্দেশ দেন। সভায় আগামী ছয় মাসের জন্য নিয়োগ সংক্রান্ত কর্মপরিকল্পনা উপস্থাপন করা হয়। সরকারের লক্ষ্য, দ্রুততম সময়ে শিক্ষার মান বজায় রেখে শূন্যপদ পূরণ করা।

নতুন নিয়োগ বিধিমালার গুরুত্ব

নতুন বিধিমালা অনুযায়ী সহকারী শিক্ষক ও প্রধান শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া আরও স্বচ্ছ ও সহজ হবে। শূন্যপদ পূরণের পাশাপাশি শিক্ষার মান বৃদ্ধি ও বিদ্যালয়ের কার্যক্রমকে সমন্বিত করা সম্ভব হবে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, নতুন নিয়োগ বিধিমালা কার্যকর হলে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক ঘাটতি কমবে এবং শিক্ষা ব্যবস্থা আরও শক্তিশালী হবে।

প্রভাব ও প্রত্যাশা

এই পদক্ষেপের ফলে লক্ষাধিক শিক্ষার্থী ও শিক্ষক সরাসরি উপকৃত হবেন। বিশেষ করে গ্রামীণ এলাকায় শিক্ষক সংকট দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষার মানকে প্রভাবিত করছিল। নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়া চালু হলে শিক্ষার্থীদের মানসম্মত শিক্ষা পাওয়ার সম্ভাবনা বৃদ্ধি পাবে।
এছাড়া নতুন নিয়োগের মাধ্যমে সরকার চাকরির সুযোগ তৈরি করছে, যা দেশের যুবসমাজের জন্য বড় একটি প্রেরণা হিসেবে কাজ করবে।

সমাপ্তি

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ১৭,৭০৯ জন শিক্ষক নিয়োগের পদক্ষেপটি শিক্ষাক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে গণ্য হচ্ছে। তবে বিশ্লেষকদের মতে, এই প্রক্রিয়া সঠিক সময়ে সম্পন্ন করা গেলে সরকারের শিক্ষা খাতে দীর্ঘমেয়াদী সুফল পাওয়া সম্ভব।

এম আর এম – ০৮৯০, Signalbd.com

মন্তব্য করুন
Advertisement

Related Articles

Back to top button