বানিজ্য

ব্যবসায় ন্যায্যতা ফেরাতে সময় এসেছে, মানুষ চায় সততা ও সহানুভূতি

Advertisement

দেশের অর্থনীতিতে বড় ব্যবসায়ীদের প্রভাব অনস্বীকার্য। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে তাদের কার্যক্রম নিয়ে সামাজিক উদ্বেগ দিন দিন বাড়ছে। সাধারণ মানুষের চোখে বড় ব্যবসায়ীদের যেন একমাত্র লক্ষ্য “লাভ অর্জন”। এজন্য দাম বৃদ্ধি, গুদামজাত ও সিন্ডিকেটের মাধ্যমে বাজারে অস্বচ্ছতা সৃষ্টি করা। এসব কারণে দেশের গরীব ও মধ্যবিত্ত শ্রেণীর কষ্ট বহুগুণে বেড়েছে।

বাজার এবং দামে কারসাজির প্রকৃতি


২০২৫ সালের মে মাসে চালের মূল্যস্ফীতি প্রায় ৪০ শতাংশ প্রদানের ওপর নির্ভর ছিল, অর্থাৎ food inflation–এ চালের ভূমিকা ছিল গুরুত্বপূর্ণ।

বিভিন্ন সময়ে বাজারে পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকার পরও দাম বাড়ানোর অভিযোগ উঠে — কারণ ব্যবসায়ীরা স্টক ধরে রাখে এবং চাহিদা অনুযায়ী বাজারে কম ছাড়ে। এটা নীতি নৈতিকতাহীন এর  প্রচলন, বিশেষ করে পণ্যের হার ও মান প্রভাবিত করার জন্য কৃত্রিম সংকট তৈরি করা হয় — যা সাধারণ মানুষের পকেটে বোঝা বাড়ায়।

অর্থনীতিবিদ এবং বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, সামনের দৃষ্টিভঙ্গি (future price signaling) দামে প্রভাব ফেলে। ব্যবসায়ীরা আগেভাগেই ঘোষণা দেয় “মূল্য বৃদ্ধি হবে” — এবং তারপর আস্তে আস্তে দাম বাড়িয়ে দেয়।

শিল্প ও বিনিয়োগে প্রভাব

গ্যাস মূল্য বৃদ্ধি:
সরকার গ্যাস মূল্যে প্রস্তাবিত ১৫০ শতাংশ বৃদ্ধি শিল্পখাতকে চ্যালেঞ্জ দিচ্ছে। বড় ব্যবসায় গোষ্ঠীগুলি এ সিদ্ধান্তকে যুক্তি দিচ্ছে — “নবীন ও পুরাতন বিনিয়োগকারীদের জন্য বৈষম্যমূলক” — এবং বলছে, এটি বিদেশি ও অভ্যন্তরীণ বিনিয়োগ প্রতিহত করবে।

শিল্প বন্ধ হওয়ার আশঙ্কা:
Bangladesh Textile Mills Association (BTMA) সতর্ক করে বলেছে, গ্যাসের অতিরিক্ত মূল্যবৃদ্ধি হলে অনেক কারখানা বন্ধ হবে।

শিল্প প্রতিযোগিতামূলক প্রভাব:
উচ্চ উৎপাদন খরচ দেশকে বেশি আমদানিকৃত পণ্য নির্ভরশীল করে তুলতে পারে।

সামাজিক ও নৈতিক দৃষ্টিকোণ


ব্যবসা করা নবীজী (ﷺ) এর সুন্নত। অর্থাৎ, সৎভাবে, ন্যায়সঙ্গতভাবে ও সামাজিকভাবে দায়িত্ব নিয়ে ব্যবসা করাই সঠিক পথ। ব্যবসায়ীদের প্রতি আহ্বান: আল্লাহকে ভয় করুন, মানুষের সাথে সহানুভূতি রাখুন, ন্যায্য ও মানুষের জীবনধারণকে বিবেচনায় রেখে মূল্য নির্ধারণ করুন।

বর্তমান দ্রুত দাম পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে মানুষের জীবনপন্থায় স্থিতিশীলতা হারিয়ে ফেলছে। পুষ্টি ও খাদ্যাভ্যাস পর্যন্ত প্রভাবিত হচ্ছে — গরীব ও মধ্যবিত্তদের পক্ষে চাল, ডাল, তেল, সবজি ক্রয় করা কঠিন হয়ে পড়েছে।

সরকারের ভূমিকা ও কার্যকর পদক্ষেপ

বাজারের শৃঙ্খলা রক্ষা করতে এবং দাম ও বাজার মনিটরিং কারসাজি মোকাবিলা করতে উচিত সরকারী নজরদারি।

অধিকার আইন (Consumer Rights Act) ও অপরাধমূলক সিন্ডিকেট আইন প্রয়োগ করা জরুরি।

যেসব শ্রেণি বেশি ক্ষতিগ্রস্ত, তাদের জন্য চাল, তেল বা খাদ্যদ্রব্যে ভর্তুকি বা সরাসরি বিতরণ।

• বিনিয়োগ ও শিল্প রক্ষা এ ধরনের মূল্যবৃদ্ধি যেসব শিল্প বন্ধ হয়ে যাবে, তার পুনরুজ্জীবন ও নতুন বিনিয়োগ আকর্ষণ করার সুবিধা দেওয়া।

বর্তমানে বড় ব্যবসায়ীদের আচরণ ও বাজার নিয়ন্ত্রণের ধরনের প্রতি সমালোচনার ঢেউ দেশের সাধারণ মানুষের অধিকার রক্ষা ও ন্যায্য ব্যবসার পক্ষে গুরুত্বপূর্ণ আলোচ্য বিষয়। লাভ কখনোই দোষ নয় — কিন্তু কীভাবে লাভ করা হচ্ছে, মানবিক মূল্যবোধ ঠিক রাখা হচ্ছে কি না — সেটাই প্রমাণ করে একটা সমাজ কতটুকু ন্যায্য।

NA-100007,signalbd.com

মন্তব্য করুন
Advertisement

Related Articles

Back to top button