রাজনীতি

দেশকে অস্থিতিশীলতার দিকে নিচ্ছে জামায়াত; দাবি ফখরুলের

Advertisement

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সম্প্রতি মন্তব্য করেছেন যে, জামায়াতে ইসলামী অযথা অস্থিরতা সৃষ্টি করে দেশকে বিপর্যয়ের দিকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে। তিনি বলেছেন, এই ধরনের কার্যক্রম দেশের গণতন্ত্রের জন্য হুমকি স্বরূপ এবং জনগণ এইসব দমনমূলক কৌশল বরদাস্ত করবে না।

সোমবার (১০ নভেম্বর) সন্ধ্যায় ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার রুহিয়া উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে দলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এই মন্তব্য করেন। সভায় তিনি দেশ ও রাজনীতির বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য রাখেন।

ফখরুলের বক্তব্যের মূলবিন্দু

মির্জা ফখরুল বলেন, “আমরা সব সময় সুযোগ পাই না দেশকে উন্নত করার, দেশকে ভালো করার। গত ১৫ বছর আমাদেরকে ভোট দিতে দেওয়া হয়নি। এবার আমরা ভোট দিতে পারব। আমরা ভোট দেব দেশের উন্নতির জন্য।”

তিনি আরও বলেন, বিএনপি সরকারে গেলে তারা কৃষকদের সমস্যার সমাধানে গুরুত্ব দেবে। তিনি স্পষ্ট করেন, “বীজের সমস্যা, সারের সমস্যা এবং পানির সমস্যা—এই তিনটি মূল সমস্যা আমরা সমাধানের চেষ্টা করব। আমরা অতীতেও করেছি।”

মহিলা ও কৃষকদের জন্য বিশেষ সুবিধা দেওয়ার কথাও উল্লেখ করেন ফখরুল। তিনি বলেন, “আমরা ফ্যামিলি কার্ড দেব মহিলাদের জন্য, যাতে তারা ন্যায্যমূল্যে পণ্য ক্রয় করতে পারে। এছাড়া ফারমার কার্ড দেব কৃষকদের জন্য, যার মাধ্যমে তারা বীজ, সার ও পানি ন্যায্যমূল্যে পেতে পারবে।”

তিনি আরও ঘোষণা করেন, এক কোটি মানুষের জন্য চাকরির ব্যবস্থা করা হবে। রুহিয়াকে উন্নত উপজেলা হিসেবে গড়ে তোলার পরিকল্পনার কথাও উল্লেখ করেন তিনি।

রাজনীতির প্রেক্ষাপট

বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি দীর্ঘদিন ধরেই উত্তপ্ত। বিএনপি এবং জামায়াতের বিরোধ বাংলাদেশের রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব রাখে। বিশেষত নির্বাচনের আগে এই ধরনের বিবৃতি সাধারণত রাজনৈতিক উত্তেজনা বাড়াতে পারে।

ফখরুলের মন্তব্যে স্পষ্ট হয় যে, বিএনপি দেশের গণতন্ত্র ও স্থিতিশীলতার প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, এবং কোনোভাবেই দেশের রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার সুযোগ গ্রহণ করবে না।

এছাড়া তিনি ভোটাধিকার ও নাগরিক অধিকার বিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ও তুলে ধরেন। তিনি উল্লেখ করেন, দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে দেশের মানুষকে স্বতঃসিদ্ধ ভোটাধিকার ব্যবহার করতে বাধা দেওয়া হয়েছে। এবারের নির্বাচনে জনগণ যাতে স্বাধীনভাবে ভোট দিতে পারে, তা নিশ্চিত করতে বিএনপি কঠোরভাবে কাজ করবে।

কৃষক এবং সাধারণ মানুষের কল্যাণে পরিকল্পনা

ফখরুলের বক্তব্যের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো কৃষক এবং সাধারণ মানুষের কল্যাণে বিএনপির পরিকল্পনা। তিনি বলেন, কৃষকরা দীর্ঘদিন ধরে বীজ, সার এবং পানির অভাবের কারণে সমস্যায় ভুগছে। সরকারে গেলে বিএনপি এই সমস্যাগুলি সমাধানে বিশেষ উদ্যোগ নেবে।

তিনি আরও বলেন, মহিলাদের জন্য ফ্যামিলি কার্ড চালু করা হবে, যার মাধ্যমে তারা ন্যায্যমূল্যে বাজারজাত পণ্য কিনতে পারবে। একই সঙ্গে কৃষকদের জন্য ফারমার কার্ড চালু করা হবে, যা বীজ, সার এবং পানি ন্যায্যমূল্যে সরবরাহ নিশ্চিত করবে।

এই উদ্যোগ দেশের গ্রামীণ অর্থনীতিকে শক্তিশালী করবে এবং কৃষকদের জীবনমান উন্নত করবে।

রুহিয়ার উন্নয়নে বিএনপির পরিকল্পনা

মির্জা ফখরুল রুহিয়াকে উন্নত উপজেলা হিসেবে গড়ে তোলার পরিকল্পনাও তুলে ধরেন। তিনি বলেন, উন্নত শিক্ষা, অবকাঠামো, স্বাস্থ্যসেবা এবং কৃষি ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে হবে।

রুহিয়ার গ্রামীণ অর্থনীতি এবং সামাজিক উন্নয়নে বিশেষ মনোযোগ দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেন বিএনপি। এ ধরনের উদ্যোগ শুধুমাত্র স্থানীয় মানুষের জন্য নয়, বরং পুরো জেলা ও দেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

দেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার গুরুত্ব

ফখরুলের মন্তব্য থেকে বোঝা যায়, দেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করা বিএনপির প্রধান অগ্রাধিকার। তিনি বলেন, “যে কোনো অযৌক্তিক বা অস্থিতিশীল পরিস্থিতি দেশের উন্নয়ন ব্যাহত করতে পারে। জনগণ এই ধরনের অপচেষ্টা মেনে নেবে না।”

রাজনীতির এই দৃষ্টিকোণ থেকে বিএনপি জামায়াতের কর্মকাণ্ডকে দেশের অস্থিতিশীলতার জন্য হুমকি হিসেবে বিবেচনা করছে।

ভবিষ্যতের রূপরেখা

ফখরুলের বক্তব্য অনুযায়ী, বিএনপি সরকারে গেলে দেশের শিক্ষা, কৃষি, স্বাস্থ্য ও চাকরির সুযোগকে অগ্রাধিকার দেবে। তিনি বলেন, দেশের মানুষ যদি ভোটের মাধ্যমে সরকার নির্বাচিত করে, তবে সেই সরকার জনগণের কল্যাণ এবং দেশের উন্নয়নের লক্ষ্যে কাজ করবে।

একটি সফল নির্বাচনের মাধ্যমে দেশের গণতন্ত্রের পুনর্নির্মাণ সম্ভব, এবং দেশের রাজনৈতিক পরিবেশ স্থিতিশীল হবে।

MAH – 13745 I Signalbd.com

মন্তব্য করুন
Advertisement

Related Articles

Back to top button