বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) চেয়ারপার্সন তারেক রহমানের সঙ্গে রাজধানীর গুলশানে ভার্চুয়ালি সাক্ষাৎ করেছেন চব্বিশের জুলাই গণঅভ্যুত্থানে নিহত ও আহত শহীদ পরিবারের সদস্যরা। এই বৈঠকে তারা জানিয়েছে, ভবিষ্যতে বিএনপির সঙ্গে একযোগে কাজ করার জন্য তারা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন শহীদ ওয়াসিমের বাবা শফি আলম, শহীদ মাহমুদুর রহমানের বোন সাবরিনা আফরোজ সেবন্তী, শহীদ মাহমুদুর রহমান সৈকতের বাবা মাহবুবুর রহমান, শহীদ ফয়সাল আহম্মেদ শান্তর বাবা মো. জাকির হোসেন এবং আহত মো. ফারহান জামিল। বিএনপির শীর্ষ নেতারা ও ‘আমরা বিএনপি পরিবার’-এর আহ্বায়ক আতিকুর রহমান রুমনও বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
বিএনপির সহায়তার প্রতিশ্রুতি
তারেক রহমান বলেন, “যারা আহত হয়েছেন বা পরিবারের সদস্য হিসেবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, তাদের যতটা সম্ভব সহযোগিতা করার চেষ্টা করা হবে। আমাদের লক্ষ্য হলো তাদের স্বাবলম্বী করে তোলা এবং তাদের মর্যাদা রক্ষা করা।” তিনি আরও জানান, বিএনপি সরকার গঠিত হলে চব্বিশের জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে শহীদ ও আহতদের নাম রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোতে নামকরণ করার প্রস্তাব দেবে।
তারেক রহমান বলেন, “ভবিষ্যতে আহতরা যাতে আবারও স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারে, তার জন্য প্রাথমিক সহায়তা হিসেবে হুইল চেয়ার প্রদান করা হচ্ছে। আমরা বিশ্বাস করি, বৈজ্ঞানিক ও সামাজিক সহায়তার মাধ্যমে তারা পুনরায় স্বাবলম্বী হতে সক্ষম হবেন।”
১৯৭৫ সালের ২৪ জুলাই গণঅভ্যুত্থান এবং পরবর্তীতে রাজনৈতিক হিংসার ঘটনায় অনেকেই শহীদ হন, আবার অনেকে আহত হন। দীর্ঘদিন ধরে শহীদ ও আহত পরিবারের সদস্যরা তাদের অধিকার এবং ক্ষতিপূরণের দাবিতে সচেষ্ট। বিএনপির এই উদ্যোগ এবং নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক তাদের দীর্ঘদিনের অপেক্ষার ফল বলে মনে করা হচ্ছে।
প্রভাব ও প্রতিক্রিয়া
শহীদ পরিবারের সদস্যরা আশা প্রকাশ করেছেন, বিএনপির সঙ্গে একযোগে কাজের মাধ্যমে তাদের দাবি এবং সমাজের ক্ষতিগ্রস্তদের সমস্যার সমাধান সম্ভব হবে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এ ধরনের সমন্বয় দলীয় কার্যক্রমকে আরও শক্তিশালী করবে এবং শহীদ ও আহত পরিবারের মানুষের কাছে রাজনৈতিক সহমর্মিতা প্রদর্শন করবে।
বিএনপির শীর্ষ নেতা মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, “শহীদ ও আহত পরিবারদের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক শুধু রাজনৈতিক নয়, এটি মানবিক ও নৈতিক দায়বদ্ধতার অংশ। আমরা তাদের পাশে আছি।”
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
তারেক রহমান বৈঠকে বলেন, “শহীদ ও আহতদের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে প্রস্তাবিত সহায়তা এবং বিএনপির নিজস্ব উদ্যোগ দুটোই সমান্তরালভাবে চলবে। আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে ক্ষতিগ্রস্তদের সামাজিক ও অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী করা।” তিনি আরও উল্লেখ করেন, “কোনও সহযোগিতা করার জন্য কারও কাছে অনুমতি নেওয়ার প্রয়োজন নেই, সবাই স্বেচ্ছায় এগিয়ে আসতে পারে।”
বৈঠকের শেষে শহীদ ও আহত পরিবারের সদস্যরা নিশ্চিত করেছেন, বিএনপির সঙ্গে একযোগে কাজ করার বিষয়ে তাদের সিদ্ধান্ত দৃঢ় এবং ভবিষ্যতে দলীয় কার্যক্রমে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করবেন।
২৪ জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ ও আহতদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে তারেক রহমানের এই ভার্চুয়াল বৈঠক রাজনৈতিক ও মানবিক দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ। এটি ভবিষ্যতে দলের কার্যক্রমে শহীদ পরিবারের মানুষের অংশগ্রহণ এবং সরকারের নীতিমালায় তাদের অধিকারের স্বীকৃতি বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
এম আর এম – ২১৪৪,Signalbd.com



