রাজনীতি

জামালপুরে জামায়াত প্রার্থীর গণসংযোগে যুবদলের হামলার অভিযোগ, আহত ১০

Advertisement

জামালপুরে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী মনোনীত এমপি প্রার্থী মাওলানা আব্দুস সাত্তারের নির্বাচনী গণসংযোগ চলাকালীন হামলার অভিযোগ উঠেছে যুবদলের বিরুদ্ধে। শনিবার দুপুরে সদর উপজেলার রানাগাছা ইউনিয়নের বানারেরপাড় বাজারে এই ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে জামায়াতের অন্তত ১০ কর্মী-সমর্থক আহত হন।

হামলার পরিস্থিতি ও প্রাথমিক চিকিৎসা

জামালপুর-৫ (সদর) আসনের জামায়াত প্রার্থী মাওলানা আব্দুস সাত্তার অভিযোগ করেন, দুপুরে কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে তিনি গণসংযোগ শুরু করলে বানারেরপাড় বাজার এলাকায় পৌঁছানোর পর রানাগাছা ইউনিয়ন যুবদলের সাধারণ সম্পাদক জাকিউল্লাহ শিপলুর নেতৃত্বে ৩০–৩৫ জনের একটি দল তাদের ওপর হামলা চালায়। হামলায় অন্তত ১০ জন কর্মী-সমর্থক আহত হন এবং তারা স্থানীয় বেসরকারি ক্লিনিকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরে যান।

জামায়াতের পক্ষ থেকে জানানো হয়, হামলার কারণে স্থানীয় বাজারে আতঙ্ক ছড়ায় এবং কর্মীদের নিরাপত্তা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়।

পাল্টা অভিযোগ ও রাজনৈতিক উত্তেজনা

যুবদলের পক্ষ থেকে পাল্টা অভিযোগ করা হয়েছে যে, হামলার আগে জামায়াতের নেতাকর্মীরা তাদের এক নেতাকে আঘাত করেছিলেন। ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি রিজভী আহমেদ জুয়েল জানান, “জামায়াতের কর্মীরা প্রথমে হামলা চালালে আমাদের নেতাকে আঘাত করা হয়। পরে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।”

এই পাল্টা অভিযোগে পরিস্থিতি আরও উত্তেজনাপূর্ণ হয়ে ওঠে। স্থানীয়রা জানান, একই এলাকায় জামায়াত ও যুবদলের পক্ষ থেকে পৃথক প্রতিবাদ সমাবেশ ও মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।

স্থানীয় প্রতিক্রিয়া ও বিক্ষোভ

হামলার প্রতিবাদে স্থানীয় জামায়াতে ইসলামী নেতা-কর্মীরা বানারেরপাড় বাজারে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করেন। তারা হামলাকারীদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানান। জামায়াতের সাবেক আমির শরিফুল ইসলাম বলেন, “দাঁড়িপাল্লা প্রতীকের প্রচারের সময় যুবদলের নেতা-কর্মীরা অতর্কিত হামলা চালিয়েছে। এতে অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন।”

পরে একই এলাকায় পাল্টা বিক্ষোভ মিছিল করে রানাগাছা ইউনিয়ন যুবদল। সমাবেশে তারা দাবি করেন, জামায়াতের আনা অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন।

পুলিশি পদক্ষেপ ও আইনগত দিক

সদর থানার ওসি অপারেশন নুর মোহাম্মদ জানান, পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। তিনি বলেন, “বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে। কোনো পক্ষই থানায় লিখিত অভিযোগ দিচ্ছে না। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

পুলিশ জানিয়েছে, উভয় পক্ষকে শান্তি বজায় রাখতে অনুরোধ করা হয়েছে এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা প্রতিরোধে নজরদারি বাড়ানো হবে।

নির্বাচনপ্রক্রিয়ায় রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা

জামালপুর-৫ আসনে জামায়াত ও যুবদলসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মধ্যে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বিশেষ করে নির্বাচনী গণসংযোগ ও জনসভায় এই ধরনের সংঘর্ষে সাধারণ ভোটারদের মাঝে আতঙ্ক সৃষ্টি হতে পারে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, “স্থানীয় নির্বাচন এলাকা প্রভাবিত হতে পারে যদি এমন সংঘর্ষের ঘটনা চলতে থাকে।”

জামালপুরে আগে থেকে স্থানীয় রাজনৈতিক দলের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। বিশেষ করে নির্বাচনী সময়ে প্রতিপক্ষের প্রতি হুমকি, প্রতিবাদ এবং সংঘর্ষ সাধারণ ঘটনা হিসেবে ধরা হয়ে থাকে। এই ঘটনার ফলে এবারের নির্বাচনী পরিবেশ আরও উত্তেজনাপূর্ণ হয়ে উঠেছে।

জামালপুরে জামায়াত প্রার্থীর গণসংযোগে সংঘর্ষের ঘটনা স্থানীয় রাজনৈতিক উত্তেজনা বাড়িয়েছে। অভিযোগপত্র ও পাল্টা অভিযোগের মধ্যে প্রকৃত দোষী পক্ষ চিহ্নিত করা পুলিশি তদন্তের ওপর নির্ভর করছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখা এবং ভোটারদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।

এম আর এম – ২১৩৮,Signalbd.com

মন্তব্য করুন
Advertisement

Related Articles

Back to top button