বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, ফ্যাসিস্ট শক্তি ও তাদের অনুসারীরা দেশের গণতান্ত্রিক যাত্রা ব্যাহত করতে গুপ্ত অবস্থায় সক্রিয় হতে পারে। তিনি আহ্বান জানান, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ও গণতান্ত্রিক শক্তিগুলো যেন এ বিষয়ে সতর্ক থাকে এবং পরাজিত শক্তিকে পুনর্বাসনের সুযোগ না দেয়।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, দেশের গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রাকে বাধাগ্রস্ত করতে পরাজিত ফ্যাসিবাদী শক্তি ও তাদের দোসররা আবারও সক্রিয় হওয়ার পাঁয়তারা করছে। তাই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ও ফ্যাসিবাদবিরোধী রাজনৈতিক শক্তিগুলোকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান তিনি। শনিবার (৮ নভেম্বর) সন্ধ্যায় মাতুয়া বহুজন সমাজ ঐক্যজোট আয়োজিত হিন্দু প্রতিনিধি সম্মেলনে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
ফ্যাসিস্ট শক্তির গুপ্ত তৎপরতা নিয়ে সতর্কবার্তা
তারেক রহমান বলেন, ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনের অংশ হিসেবে যারা দীর্ঘদিন দেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে ভূমিকা রেখেছেন, তাদের অনেকের অবস্থান এখন গুরুত্বপূর্ণ। তবে তিনি সতর্ক করে বলেন, “ফ্যাসিবাদী শক্তি ও তাদের অনুসারীরা নানা দলে গুপ্তভাবে অবস্থান নিয়ে দেশের গণতান্ত্রিক ধারা ব্যাহত করার চেষ্টায় লিপ্ত হতে পারে।”
তিনি আরও বলেন,
“দেশ যদি অস্থিতিশীল হয়, তাহলে সেই পরাজিত শক্তি পুনরায় সংগঠিত হয়ে জনগণের রায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে পারে। তাই এখনই সময় ঐক্যবদ্ধ থাকার।”
গণতন্ত্র রক্ষায় ঐক্যের ওপর জোর
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, “গুপ্ত অপশক্তির কৌশল থেকে রক্ষা পাওয়ার একমাত্র উপায় হলো ফ্যাসিবাদবিরোধী জাতীয় ঐক্য বজায় রাখা।” তিনি মনে করেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ও গণতান্ত্রিক দলগুলো যদি একসঙ্গে কাজ করে, তবে দেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় থাকবে এবং নতুন করে কোনো অপশক্তি মাথাচাড়া দিতে পারবে না।
তারেক রহমান আরও বলেন,
“আমাদের ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলন একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য ছিল। সেই আন্দোলনের অর্জন যেন কেউ ভেতর থেকে ক্ষুণ্ন করতে না পারে, সেদিকে সকলকে সজাগ থাকতে হবে।”
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ভূমিকা নিয়ে মন্তব্য
তারেক রহমান বলেন, “একটি গণতান্ত্রিক ও জবাবদিহিমূলক সরকার প্রতিষ্ঠা করা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান দায়িত্ব। কোনো ব্যক্তি বা দলের স্বার্থ বাস্তবায়ন নয়, বরং জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটানোই এই সরকারের মূল কাজ।”
তিনি আরও যোগ করেন, “আমরা আশা করি, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার তাদের দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করবে এবং গণতান্ত্রিক উত্তরণের পথকে বাধাগ্রস্ত করার কোনো প্রচেষ্টা সফল হতে দেবে না।”
গণতন্ত্রবিরোধী চক্রান্ত নিয়ে উদ্বেগ
তারেক রহমান বলেন,
“৫ আগস্টের পরাজিত অপশক্তি এখনো বিভিন্ন নামে বা পরিচয়ে সংগঠিত হওয়ার চেষ্টা করছে। কেউ কেউ বিভিন্ন দলে আশ্রয় নিয়ে অস্থিতিশীলতা তৈরির পাঁয়তারা করছে। এই ধরনের গুপ্ত তৎপরতা বন্ধ না হলে দেশের গণতান্ত্রিক যাত্রা বাধাগ্রস্ত হবে।”
তিনি আরও সতর্ক করেন, “এই মুহূর্তে যদি আমরা বিভক্ত হই, তাহলে সেই সুযোগ নেবে পরাজিত শক্তি। তাই সবাইকে দলীয় ও ব্যক্তিগত স্বার্থের ঊর্ধ্বে উঠে দেশের বৃহত্তর স্বার্থে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।”
সমঝোতা ও সহযোগিতার পথে বিএনপি
তারেক রহমান বলেন, “বিএনপি সবসময় ফ্যাসিবাদবিরোধী জাতীয় ঐক্য বজায় রাখার স্বার্থে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সহযোগিতা করে আমরা দেশের স্থিতিশীলতা ও গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ রক্ষার চেষ্টা করছি।”
তিনি মনে করেন, “ভিন্নমত থাকা গণতন্ত্রের সৌন্দর্য, তবে তা যেন বিভাজনে পরিণত না হয়। বিএনপি বরাবরই সমঝোতা ও পরামর্শের মাধ্যমে রাজনৈতিক সংকট সমাধানের পক্ষে।”
ভবিষ্যতের দিকনির্দেশনা ও আহ্বান
তারেক রহমান দলের নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, “দলীয় ঐক্য বজায় রাখতে হবে, যাতে প্রতিপক্ষ আমাদের ভেতরের কোনো দুর্বলতা কাজে লাগাতে না পারে। আমাদের লক্ষ্য গণতন্ত্রকে সুসংহত করা, কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর ক্ষমতা পুনঃপ্রতিষ্ঠা নয়।”
তিনি আরও আহ্বান জানান, “ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনের যে সাফল্য আমরা অর্জন করেছি, তা যেন স্থায়ী হয়। জনগণের ভোটে নির্বাচিত সরকার গঠনের মধ্য দিয়েই সেই সাফল্যের পূর্ণতা আসবে।”
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের বক্তব্যে মূল বার্তা ছিল—গণতন্ত্রের পথে বাধা সৃষ্টিকারী যেকোনো পরাজিত বা গুপ্ত শক্তিকে ঠেকাতে রাজনৈতিক ঐক্য ও সতর্কতা এখন সময়ের দাবি। তিনি বিশ্বাস করেন, জনগণ ও গণতান্ত্রিক শক্তির সম্মিলিত প্রয়াসেই বাংলাদেশ একটি জবাবদিহিমূলক ও স্থিতিশীল রাষ্ট্র হিসেবে এগিয়ে যাবে।
এম আর এম – ২১৩১,Signalbd.com



