রাজনীতি

বিএনপির মনোনয়ন না পেয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথ অবরোধ, বিক্ষোভ

Advertisement

কুমিল্লা-১০ ও চট্টগ্রাম-৪ আসনের বিএনপি মনোনয়নবঞ্চিত সমর্থকরা ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথে বিক্ষোভ মিছিল ও অবরোধ চালিয়েছে। এ ঘটনায় যাত্রী ও ট্রেন চলাচলে ব্যাঘাত সৃষ্টি হয়েছে।

রেলপথ অবরোধ ও বিক্ষোভের ঘটনা

বুধবার বিকেলে কুমিল্লা-১০ আসনের মনোনয়নবঞ্চিত বিএনপি নেতা মোবাশ্বের আলম ভূঁইয়ার সমর্থকরা নাঙ্গলকোট উপজেলার রেলস্টেশনে ঢুকে ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথ অবরোধ করেন। তারা ট্রেন চলাচলে বাধা সৃষ্টি করতে রেললাইনের ওপর টায়ার জ্বালিয়ে মিছিল ও স্লোগান দেন।
এর ফলে লাকসাম স্টেশনে সাগরিকা এক্সপ্রেস, হাসানপুর মহানগর গোধুলীসহ একাধিক ট্রেন আটকা পড়ে। রেলস্টেশন মাষ্টার জামাল হোসেন জানান, রেললাইনে অবরোধের কারণে ট্রেন চলাচল বিপর্যস্ত হয়েছে।

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বিএনপি নেতা আসলাম চৌধুরীর অনুসারীরা রাত ১০টার দিকে রেললাইন অবরোধ করেন। এতে চট্টলা এক্সপ্রেসসহ দুটি চট্টগ্রামমুখী ট্রেন থেমে যায়। রেলওয়ে পুলিশ ও স্টেশনমাস্টার অবরোধ সমাধান না হওয়া পর্যন্ত ট্রেনগুলো চট্টগ্রামের উদ্দেশে ছাড়াতে পারেননি।

কুমিল্লা-১০ আসনে বিএনপি থেকে মনোনয়ন পেয়েছেন সাবেক সংসদ সদস্য আবদুল গফুর ভূঁইয়া। মনোনয়নবঞ্চিত প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন কেন্দ্রীয় বিএনপির নির্বাহী সদস্য মোবাশ্বের আলম ভূঁইয়া।
চট্টগ্রাম-৪ (সীতাকুণ্ড) আসনে মনোনয়ন পেয়েছেন চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক কাজী মোহাম্মদ সালাউদ্দিন। মনোনয়নবঞ্চিত নেতা আসলাম চৌধুরীর অনুসারীরা মনোনয়ন পরিবর্তনের প্রতিবাদে অবরোধ ও বিক্ষোভ চালায়।

বিক্ষোভকারীদের দাবি

মোবাশ্বের আলম ভূঁইয়ার সমর্থকরা দাবি করেন, দীর্ঘদিন ধরে তারা বিএনপির জন্য নিবেদিতভাবে কাজ করে আসছেন। কেন্দ্রীয় নেতাদের মনোনয়ন পুনর্বিবেচনার জন্য তারা রেলপথ অবরোধের মাধ্যমে প্রতিবাদ প্রকাশ করেছেন।
বিএনপি নেতা মো. ইউসুফ মজুমদার বলেন, দলের মনোনয়ন কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ পুনঃ বিবেচনা করলে বিএনপি সমর্থকরা শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন শেষ করতে প্রস্তুত।

সীতাকুণ্ডে বিক্ষুব্ধ নেতা–কর্মীরা ঢাকা–চট্টগ্রাম মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে টায়ার জ্বালিয়ে আগুন ধরিয়ে বিক্ষোভ দেখান। এতে যান চলাচল ব্যাহত হয় এবং স্থানীয়রা ভোগান্তিতে পড়েন।

যাত্রী ও ট্রেন চলাচলে প্রভাব

রেলওয়ে পুলিশের ইনচার্জ উপপরিদর্শক আশরাফ ছিদ্দিক জানান, অবরোধের কারণে সীতাকুণ্ড স্টেশনে চট্টলা এক্সপ্রেস থামানো হয়। রেললাইন নিরাপদ হলে ট্রেনগুলো চট্টগ্রামের উদ্দেশে ছেড়ে দেওয়া হবে।
নাঙ্গলকোট স্টেশনে আটক ট্রেনগুলোতে থাকা যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে রেলস্টেশন কর্মকর্তারা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেন।

রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, মনোনয়নবঞ্চিত নেতাদের প্রতিক্রিয়া বিএনপির অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বকে ফুটিয়ে তুলেছে।
এ ধরনের বিক্ষোভ নির্বাচনী প্রক্রিয়ার উত্তাপ ও দলের কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তকে প্রশ্নবিদ্ধ করে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, মনোনয়ন বিতর্ক দলের একটি গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচনী এলাকায় সমর্থকের অসন্তোষের কারণে রাজনৈতিক উত্তেজনা বাড়াতে পারে।

ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথে অবরোধ ও বিক্ষোভ প্রমাণ করে, বিএনপির মনোনয়ন বিতর্কের কারণে রাজনৈতিক উত্তেজনা স্থানীয় পর্যায়ে দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে।
যাত্রী ও ট্রেন চলাচলের ক্ষেত্রে বিরূপ প্রভাব এ ধরনের ঘটনা ভবিষ্যতেও ঘটতে পারে। রাজনৈতিক দলের জন্য এটি সতর্কবার্তা, যাতে কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত ও স্থানীয় সমর্থকদের মতামত সমন্বয় করা হয়।

এম আর এম – ২১০৩,Signalbd.com

মন্তব্য করুন
Advertisement

Related Articles

Back to top button