রাজনীতি

দাওয়াত না দেয়ায় মাদরাসার অনুষ্ঠানের সব খাবার খেয়ে গেলেন বিএনপির নেতাকর্মীরা

বরগুনার আমতলী উপজেলার একটি মাদরাসার অনুষ্ঠানে দাওয়াত না পাওয়ায় বিএনপির নেতাকর্মীরা মাদরাসার খাবার খেয়ে নষ্ট করেছেন। ঘটনায় উত্তেজনা ও নিন্দার ঝড় উঠেছে।

বিস্তারিত

বরগুনার আমতলী উপজেলার গুলিশাখালী ন ম ম আমজাদিয়া আলিয়া মাদরাসায় মাদরাসা কমিটির প্রথম সভা ১১ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হয়। এই সভার জন্য ৫০ জন আমন্ত্রিত অতিথির জন্য দুপুরের খাবারের আয়োজন করা হয়েছিল। তবে, স্থানীয় ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড বিএনপির নেতাকর্মীদের দাওয়াত দেওয়া হয়নি।

ঘটনাস্থল সূত্রে জানা গেছে, ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি মাহবুব কাজী ও সাধারণ সম্পাদক রিপন কাজীর নেতৃত্বে প্রায় ৩০-৩৫ জন নেতাকর্মী মাদরাসায় প্রবেশ করে। তারা অধ্যক্ষের কক্ষে গিয়ে দাওয়াত না দেয়ার কারণ জানতে চান। পরে শিক্ষকদের গালাগাল করে, আমন্ত্রিত অতিথিদের জন্য প্রস্তুত করা সব খাবার খেয়ে ফেলেন। অবশিষ্ট খাবারে তারা টিস্যু, পানি এবং খাওয়া অবশিষ্ট ফেলেন, যাতে অন্যরা তা ব্যবহার করতে না পারে।

অভিযুক্তদের বক্তব্য

ঘটনার সঙ্গে জড়িত রিপন কাজী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গ্রুপ ছবি পোস্ট করে জানিয়েছেন, মাদরাসায় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের জন্য আয়োজন করা অনুষ্ঠান এবং নিজেদের দাওয়াত না পাওয়ায় খাবার খেয়েছেন। তিনি দাবি করেছেন, কোনো খাবার নষ্ট করেননি।

মাদরাসা কর্তৃপক্ষের প্রতিক্রিয়া

মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা আলী হোসেন বলেন, “বিএনপির নেতাকর্মীরা সভা কক্ষে প্রবেশ করে শিক্ষক, কর্মচারী ও অতিথিদের গালাগাল করেছেন। অবশিষ্ট খাবার নষ্ট করেছেন এবং ভয়ে আমরা বিষয়টি কাউকে জানাইনি। আমরা ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের শাস্তির দাবি করছি।”

রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া

আমতলী উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব তুহিন মৃধা বিষয়টিকে দুঃখজনক বলেছেন এবং জানান, ঘটনার সঙ্গে জড়িত যেকোনো নেতার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বরিশাল বিভাগীয় বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আকন কুদ্দুসুর রহমান বলেন, অভিযোগ পেলে সংগঠন ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে।

স্থানীয় প্রশাসনের বক্তব্য

আমতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা দেওয়ান জগলুল হাসান জানিয়েছেন, এখন পর্যন্ত তাদের কাছে কোনো লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

প্রভাব ও বিশ্লেষণ

ঘটনাটি স্থানীয় রাজনৈতিক উত্তেজনা বৃদ্ধিতে প্রভাব ফেলেছে। মাদরাসা কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় বাসিন্দারা বিএনপির নেতাকর্মীদের কর্মকাণ্ডকে নিন্দার চোখে দেখছেন। শিক্ষাব্যবস্থার নিরাপত্তা ও অনুষ্ঠানকে শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করার গুরুত্ব নিয়ে নতুন প্রশ্ন উঠেছে।

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, রাজনৈতিক সংঘাতের কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এমন ঘটনা ঘটলে সমাজে শিক্ষার পরিবেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। প্রশাসনিক পদক্ষেপ ও রাজনৈতিক সংগঠনের অভ্যন্তরীণ নিয়ন্ত্রণ এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধ করতে গুরুত্বপূর্ণ।

মাদরাসার অনুষ্ঠানে দাওয়াত না পাওয়ায় বিএনপির নেতাকর্মীদের খাবার খাওয়া ও নষ্ট করার ঘটনায় উত্তেজনা ও নিন্দার ঝড় উঠেছে। স্থানীয় প্রশাসন ও রাজনৈতিক সংগঠনগুলো এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য জোর দিচ্ছে। আগামী দিনগুলোতে ঘটনার প্রকৃত কারণ ও দায়িত্বপ্রাপ্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা কী হবে তা নিয়েই নজর থাকবে।

এম আর এম – ১৩৫৮,Signalbd.com

মন্তব্য করুন
Back to top button