বাংলাদেশ

অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী দেখামাত্র গুলি করার নির্দেশ সিএমপি কমিশনারের

Advertisement

চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) কমিশনার হাসিব আজিজ সকল পুলিশ সদস্যকে বেতার বার্তায় জানিয়েছেন, যে কেউ অস্ত্র নিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে আসবে, তাকে অবিলম্বে গুলি করে মারা হবে।

কমিশনারের ঘোষণার বিবরণ

মঙ্গলবার চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) কমিশনার হাসিব আজিজ সকল থানা ও ফাঁড়িতে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যদের উদ্দেশ্যে বেতার বার্তায় নির্দেশনা দেন যে, অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীকে দেখামাত্র গুলি করা হবে।কমিশনার বলেছেন, 

“আমার নির্দেশনা শুধুমাত্র কথার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে না। যে কেউ হত্যার উদ্দেশ্যে অস্ত্র নিয়ে উপস্থিত হবে, তাকে অবিলম্বে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা হিসেবে গুলি করা হবে।”

তিনি আরও বলেন, “এই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বর্তমান নিরাপত্তা পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে। আমাদের নিশ্চিত করতে হবে যে, পুলিশের লুট হওয়া অস্ত্র সন্ত্রাসীদের হাতে ব্যবহার হচ্ছে কি না। গত নির্বাচনি গণসংযোগের সময় ঘটে যাওয়া গুলিবর্ষণের ঘটনায় ব্যবহৃত অটোমেটিক পিস্তলও হয়তো পুলিশের অস্ত্র হতে পারে।

পিছনের প্রেক্ষাপট

২০২৪ সালের আগস্টে চট্টগ্রামে বিভিন্ন থানার পুলিশ স্টেশনের অস্ত্র লুট হওয়ার ঘটনা ঘটে। এর ফলে অনেক অস্ত্র বাইরে চলে যায়। এই অস্ত্রগুলি সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে ব্যবহৃত হওয়ার সম্ভাবনা থাকায় কমিশনার এ ধরনের কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।

এর আগে, গত আগস্টেও কমিশনার একই রকম নির্দেশনা দিয়েছিলেন। তখন পুলিশের কোনো টহল দলের সামনে অথবা অভিযানকালে কেউ যদি অস্ত্র বের করতো, পুলিশকে সেই মুহূর্তে প্রতিরক্ষা হিসেবে গুলি চালাতে বলা হয়েছিল। এই পদ্ধতি দণ্ডবিধির ৭৫, ৭৬, ৯৬ থেকে ১০৬ ধারার আওতায় এসেছে।

নিরাপত্তা পরিস্থিতি ও প্রভাব

চট্টগ্রামে সম্প্রতি বেড়ে চলা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড, বিশেষ করে নির্বাচনের আগে সংঘটিত হিংসা, শহরের নিরাপত্তা পরিস্থিতি উদ্বেগজনক করেছে। পুলিশকে অবিলম্বে সন্ত্রাস প্রতিরোধ করতে প্রস্তুত রাখতে এই নির্দেশনার গুরুত্ব আরও বৃদ্ধি পেয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই ধরনের নীতি শহরে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড কমাতে কার্যকর হতে পারে, তবে তা আইনগত ও মানবাধিকার দিক থেকে সতর্কতার সঙ্গে প্রয়োগ করতে হবে।

আইনি ও প্রশাসনিক দিক

সিএমপি কমিশনার এ বিষয়ে উল্লেখ করেছেন যে, নির্দেশনা প্রয়োগ দণ্ডবিধির নির্দিষ্ট ধারার আওতায়। হত্যার উদ্দেশ্যে অস্ত্রধারীকে গুলি করা একটি প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা যা আইনের সীমার মধ্যে রয়েছে।

কমিশনারের এই ঘোষণার মাধ্যমে পুলিশকে ক্ষমতাবান এবং দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী হিসেবে প্রস্তুত করার পাশাপাশি সাধারণ নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্য রয়েছে।

পুলিশ ও সাধারণ মানুষের প্রতিক্রিয়া

সিএমপি সূত্রে জানা যায়, পুলিশ সদস্যরা এই নির্দেশনার সঙ্গে একমত এবং নিজেদের দায়িত্বের ক্ষেত্রে আরও সচেতন। শহরের বাসিন্দারা আশা করছেন, কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিলে শহরে সন্ত্রাস ও গুলির ঘটনা কমে আসবে।

কিন্তু কিছু বিশ্লেষক সতর্ক করেছেন যে, এমন নির্দেশনার যথাযথ প্রশিক্ষণ এবং নিয়মিত তদারকি না থাকলে আইন প্রয়োগের ক্ষেত্রে ভুল হতে পারে।

চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের এই নির্দেশনা শহরে নিরাপত্তা পরিস্থিতি কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করার প্রচেষ্টা। কমিশনারের বার্তা স্পষ্ট: অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী কোনোরূপ রেহাই পাবেন না। তবে, আইনগত সীমার মধ্যে এই নীতি কার্যকর করার মাধ্যমে শহরের সাধারণ মানুষকে সুরক্ষা প্রদান ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা মূল লক্ষ্য। আগামী দিনগুলোতে এই নির্দেশনার বাস্তব প্রভাব ও শহরের নিরাপত্তা পরিস্থিতি কেমন পরিবর্তন হয়, তা নজরদারির বিষয়।

এম আর এম – ২১৯৮,Signalbd.com

মন্তব্য করুন
Advertisement

Related Articles

Back to top button