জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে দেশের ১৪টি জেলায় নতুন জেলা প্রশাসক (ডিসি) নিয়োগ দিয়েছে সরকার। রোববার রাতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে নতুন ডিসিদের দায়িত্ব কার্যকর হতে অবিলম্বে বলা হয়েছে।
নতুন ডিসি নিয়োগে জেলা প্রশাসক পদে কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতিনিধি হিসেবে জেলা প্রশাসনের প্রশাসনিক কার্যক্রম, আইনশৃঙ্খলা রক্ষা এবং উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড তদারকির দায়িত্ব গ্রহণ করবেন।
কোন কোন জেলায় নতুন ডিসি
নতুন ডিসি পাওয়া জেলাগুলো হলো: ব্রাহ্মণবাড়িয়া, ঝিনাইদহ, নড়াইল, জামালপুর, মেহেরপুর, কিশোরগঞ্জ, ঝালকাঠি, গোপালগঞ্জ, চুয়াডাঙ্গা, পঞ্চগড়, জয়পুরহাট, ময়মনসিংহ, মানিকগঞ্জ ও চাঁদপুর।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, শারমিন আক্তার জাহানকে নড়াইল থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়, মোহাম্মদ আবদুল ছালামকে মেহেরপুর থেকে নড়াইলে, পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক মো. আব্দুল্লাহ আল মাসউদকে ঝিনাইদহে এবং খুলনার জোনাল সেটেলমেন্ট অফিসার মোহাম্মদ ইউসুপ আলীকে জামালপুরে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপসচিব লুৎফুন নাহারকে মেহেরপুর, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা মো. আসলাম মোল্লাকে কিশোরগঞ্জ, নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তরের পরিচালক মো. মমিন উদ্দিনকে ঝালকাঠি, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মো. আরিফ-উজ-জামানকে গোপালগঞ্জ এবং অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের উপসচিব মো. কামাল হোসেনকে চুয়াডাঙ্গা জেলার ডিসি হিসেবে পদায়ন করা হয়েছে।
অন্যান্য নিয়োগগুলো হলো: গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের উপসচিব কাজী মো. সায়েমুজ্জামান পঞ্চগড়, প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের পরিচালক মো. আল-মামুন মিয়া জয়পুরহাট, কৃষি মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মো. সাইফুর রহমান ময়মনসিংহ, স্থানীয় সরকারের উপপরিচালক নাজমুন আরা সুলতানা মানিকগঞ্জ এবং প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের পরিচালক মো. নাজমুল ইসলাম সরকার চাঁদপুর।
জেলা প্রশাসকদের ভূমিকা ও দায়িত্ব
জেলা প্রশাসকরা কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতিনিধি হিসেবে জেলা প্রশাসনের সার্বিক কার্যক্রম তদারকি করেন। তারা জেলা ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করেন, কালেক্টর হিসেবে ভূমি ব্যবস্থাপনার বিষয় দেখেন এবং নির্বাচিত সরকারের কর্মসূচি বাস্তবায়নে তদারকি করেন।
নির্বাচনের সময় ডিসির ভূমিকা বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। তারা ভোটের নিরাপত্তা, ভোট কেন্দ্র প্রস্তুতি এবং সাধারণ জনগণের সুষ্ঠু ভোটাধিকার নিশ্চিত করার দায়িত্ব পালন করেন।
এর আগে, শনিবার (৮ নভেম্বর) মধ্যরাতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে ১৫টি জেলায় নতুন ডিসি নিয়োগ দেওয়া হয়। এই নিয়োগে ছয়জনকে রদবদল করা হয়েছে এবং নয়জনকে নতুন মুখ হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
এ ধরনের নিয়োগ প্রক্রিয়া নির্বাচনের পূর্বে প্রশাসনিক প্রস্তুতি দৃঢ় করার অংশ হিসেবে গ্রহণ করা হয়। এর মাধ্যমে প্রশাসনিক কার্যক্রম স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ রাখা যায়।
প্রভাব ও প্রতিক্রিয়া
নতুন ডিসি নিয়োগের মাধ্যমে জেলা পর্যায়ে প্রশাসনিক কার্যক্রমের গতিশীলতা বৃদ্ধি পাবে। এই পদমর্যাদার কর্মকর্তারা স্থানীয় প্রশাসন ও উন্নয়ন প্রকল্প তদারকি করবেন।
রাজনীতিবিদ এবং স্থানীয় প্রশাসন বিষয়ক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, নির্বাচনকে সামনে রেখে এমন পদায়ন নির্বাচনী প্রস্তুতিকে আরও কার্যকর করবে। জনগণও আশা করছে যে নতুন ডিসিরা নিরপেক্ষ ও কার্যকরভাবে দায়িত্ব পালন করবেন।
মতামত
একজন প্রশাসনিক বিশেষজ্ঞ বলেন, “নতুন জেলা প্রশাসকরা স্থানীয় প্রশাসনকে শক্তিশালী করবেন। নির্বাচনের সময় তাদের ভূমিকা বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। তাদের কার্যক্রম জনগণের আস্থা বৃদ্ধি করবে।”
অন্য বিশেষজ্ঞ মনে করেন, “নির্বাচনের আগে এমন পদায়ন প্রশাসনিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে সাহায্য করে। এটি নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে আরও স্বচ্ছ করে তোলে।”
জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে আরও ১৪ জেলায় নতুন জেলা প্রশাসক নিয়োগ নির্বাচনের প্রস্তুতি দৃঢ় করার একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। নতুন ডিসিরা জেলা প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষা, উন্নয়ন কর্মকাণ্ড তদারকি এবং নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরাপদ করার দায়িত্ব পালন করবেন।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই পদায়ন স্থানীয় প্রশাসনের কার্যকারিতা বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে এবং নির্বাচনী পরিবেশকে আরও স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ রাখবে।
এম আর এম – ২১৬০,Signalbd.com



