বাংলাদেশ

পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন আসিফ, স্বতন্ত্র পদে লড়বেন ঢাকা থেকে

Advertisement

স্থানীয় সরকার ও যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ঢাকা-১০ থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার প্রস্তুতি

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্থানীয় সরকার এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ঢাকা থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লড়বেন। তিনি জানিয়েছেন, নির্বাচনের জন্য সরকার থেকে পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নেবেন এবং ভোটার হিসেবে নিজের অধিকার প্রয়োগ করতে ইতিমধ্যেই পদক্ষেপ নিয়েছেন।

রবিবার (৯ নভেম্বর) বিকেল ৩টা ৫০ মিনিটে তিনি রাজধানীর গ্রিন রোডে অবস্থিত ধানমণ্ডি থানা নির্বাচন অফিসে উপস্থিত হয়ে ভোটার স্থানান্তরের আবেদন করেন।

আসিফের পদত্যাগ ও স্বতন্ত্র নির্বাচনের ঘোষণা

উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ বলেন,

“নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য সরকার থেকে পদত্যাগ করব। এটি সরকারের উচ্চ পর্যায়ের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে নির্ধারিত হবে। ঢাকা থেকে স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচন করার পরিকল্পনা এখন পর্যন্ত নিশ্চিত। আমি আমার সিদ্ধান্ত এককভাবে নিয়েছি এবং কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা হয়নি।”

তিনি আরও জানান, “যেহেতু ঢাকা থেকে নির্বাচন করব, তাই নিজের ভোট ঢাকায় নিয়ে আসা নিশ্চিত করব। এটি যাতে অপচয় না হয়, তাই পূর্বপ্রস্তুতি নিচ্ছি। আমি ভোটার হয়েছি আগে, কিন্তু কোনো নির্বাচনে ভোট দিতে পারিনি। আমার ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ এই নির্বাচনে নিশ্চিত করতে চাই।”

ঢাকা-১০ আসনের প্রেক্ষাপট

ঢাকা-১০ নির্বাচনী আসনটি ধানমণ্ডি, নিউ মার্কেট, কলাবাগান ও হাজারীবাগ থানা নিয়ে গঠিত। এই আসন থেকে বিএনপি এখনো প্রার্থী ঘোষণা করেনি, তবে জামায়াতের পক্ষ থেকে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জসীম উদ্দিন সরকারকে প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে।

স্থানীয় রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, আসিফের স্বতন্ত্র প্রার্থীত্ব নির্বাচনে নতুন রাজনৈতিক গতিশীলতা আনতে পারে। এটি মূলত ভোট ভাগাভাগি এবং রাজনৈতিক সংযোগের দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়াবে।

ভোটার স্থানান্তর ও নির্বাচনী প্রস্তুতি

আসিফ মাহমুদ জানান, তিনি ধানমণ্ডি থানা নির্বাচন অফিসার ওয়াজাহাত নূরের কাছে ভোটার স্থানান্তরের আবেদন করেছেন। তার উদ্দেশ্য, নিজ ভোটার হিসেবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা এবং ভোটের অপচয় রোধ করা।

তিনি বলেন, “এটি আমার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রক্রিয়া। কারণ ভোটার হিসেবে ভোট দিতে না পারলে আমার নিজস্ব প্রার্থীত্ব এবং নির্বাচনে অংশগ্রহণ প্রভাবিত হবে।”

রাজনৈতিক দিকনির্দেশনা ও প্রতিক্রিয়া

আসিফ বলেন, “নির্বাচন কোথা থেকে করব, এ বিষয়ে এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি, তবে ঢাকাই আমার প্রধান লক্ষ্য। স্বতন্ত্রভাবে অংশগ্রহণের পরিকল্পনা আছে। কোন রাজনৈতিক দল কোন আসন ফাঁকা রাখল বা রাখল না, সেটি আমার দেখার বিষয় নয়।”

স্থানীয় রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা মন্তব্য করেছেন, “স্বতন্ত্র প্রার্থীর আগমন ভোটের গতিশীলতাকে প্রভাবিত করতে পারে। বিশেষ করে ঢাকা-১০-এর মতো গুরুত্বপূর্ণ আসনে, এটি রাজনৈতিক সমীকরণে বড় পরিবর্তন আনতে পারে।”

স্বতন্ত্র প্রার্থীর সম্ভাব্য প্রভাব

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, স্বতন্ত্র প্রার্থীরা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করলে সাধারণত ভোট বিভাজন ঘটে। আসিফের প্রার্থীত্ব বিশেষভাবে ঢাকা-১০-এর মতো কেন্দ্রশাসিত এলাকায় নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় নতুন সমীকরণ তৈরি করতে পারে।

তবে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন যে, স্বতন্ত্র প্রার্থীর প্রতিযোগিতা মূল রাজনৈতিক দলের প্রার্থীদের জন্য চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াতে পারে। তারা বলেন, “ভোটাররা রাজনৈতিক দলের সাথে সম্পৃক্ত না থাকলে স্বতন্ত্র প্রার্থী ভোটের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখতে পারেন।”

নির্বাচনী প্রস্তুতি ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা

আসিফ মাহমুদ বলেন, “আমি নির্বাচনকে সুন্দর ও সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি। ভোটার হিসেবে অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে ইতিমধ্যেই ধাপগুলো নিয়েছি। নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার পর পদত্যাগের বিষয় চূড়ান্ত হবে।”

তিনি বলেন, “আমার লক্ষ্য হলো ভোটারদের বিশ্বাস অর্জন করা এবং তাদের জন্য প্রতিশ্রুতিশীল প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করা।”

স্থানীয় সরকার ও যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের স্বতন্ত্র প্রার্থীত্ব ঢাকার রাজনৈতিক মহলে নতুন দৃষ্টিকোণ আনবে। ঢাকা-১০-এর মতো গুরুত্বপূর্ণ আসনে তাঁর প্রার্থীত্ব এবং পদত্যাগের সিদ্ধান্ত ভোটপ্রক্রিয়া এবং রাজনৈতিক সমীকরণে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারে।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, আসিফ মাহমুদের পদক্ষেপ সাধারণ ভোটারদের জন্যও প্রভাবশালী হতে পারে, কারণ এটি রাজনৈতিক স্বতন্ত্রতা এবং ভোটাধিকার প্রয়োগের দিক থেকে একটি নজির স্থাপন করছে।

এম আর এম – ২১৫৬,Signalbd.com

মন্তব্য করুন
Advertisement

Related Articles

Back to top button