বিশ্ব

গাজা থেকে ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হানলো ইসরায়েলে

Advertisement

ইসরায়েলি গণমাধ্যমের দাবি অনুযায়ী, ফিলিস্তিনি যোদ্ধারা গাজার দিক থেকে ছোড়া একটি ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলের অধিকৃত নিরিম এলাকায় আঘাত হেনেছে। হামলায় বস্তুগত ক্ষতির খবর পাওয়া গেছে। দীর্ঘমেয়াদি আগ্রাসন ও অবরোধের মধ্যেও ফিলিস্তিনিদের প্রতিরোধ অব্যাহত রয়েছে।

ক্ষেপণাস্ত্র হামলার বিস্তারিত 

ইসরায়েলি টেলিভিশন চ্যানেল ১২ জানিয়েছে, রবিবার রাতে গাজার দিক থেকে ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্রটি নিরিম এলাকার একটি নির্মাণাধীন আবাসিক ভবনে আঘাত করে। এ সময় বিস্ফোরণের আওয়াজ আশপাশের এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে দেয়। স্থানীয় প্রশাসনের বরাতে জানা গেছে, যদিও এই হামলায় কোনো প্রাণহানি ঘটেনি, তবে ভবনের বড় একটি অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, এটি ছিল উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র। এটি অত্যন্ত লক্ষ্যনির্ভরভাবে হামলা করেছে, যা প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার ফাঁক গলে নির্ধারিত টার্গেটে পৌঁছে গেছে।

দীর্ঘমেয়াদি সংঘাত ও অবরোধ 

ফিলিস্তিনি অঞ্চল গাজা প্রায় দুই দশক ধরে ইসরায়েলি অবরোধের শিকার। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরের হামাসের ‘আল-আকসা ফ্লাড’ অভিযানের পর থেকে ইসরায়েল গাজায় ব্যাপক সামরিক অভিযান শুরু করে। এতে হাজার হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং অবকাঠামোগত ধ্বংস হয়েছে শহরের অধিকাংশ অংশ।

সাম্প্রতিক মাসগুলোতে গাজা থেকে একাধিকবার ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়েছে। প্রতিবারই ইসরায়েল পাল্টা হামলা চালিয়েছে। তবুও ফিলিস্তিনিদের প্রতিরোধ অভিযান থেমে নেই। গাজার প্রতিরোধ বাহিনী প্রতিনিয়ত ইসরায়েলি বাহিনীর ওপর পাল্টা হামলা চালাচ্ছে।

হামলার প্রতিক্রিয়া ও প্রভাব 

ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (IDF) এখনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি না দিলেও, অভ্যন্তরীণ সূত্রে জানা গেছে, তারা এই হামলাকে “জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি” হিসেবে দেখছে। ইতিমধ্যে সীমান্তবর্তী এলাকায় সেনা মোতায়েন বাড়ানো হয়েছে এবং ড্রোন নজরদারি জোরদার করা হয়েছে।

অন্যদিকে, ফিলিস্তিনি পক্ষ থেকে এখনো কোনো মন্তব্য আসেনি। তবে অতীতের মতো, এই হামলা যে তাদের পক্ষ থেকে প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপ, তা অনেকেই ধারণা করছেন। আন্তর্জাতিক মহল উদ্বেগ প্রকাশ করেছে যে, এই ঘটনার জেরে আবারও সংঘর্ষের মাত্রা বাড়তে পারে।

ইয়েমেন থেকেও হামলা: মধ্যপ্রাচ্য জুড়ে উত্তেজনা 

এই ঘটনার পাশাপাশি একই দিন ভোরে ইয়েমেন থেকে ইসরায়েলের দখলকৃত ভূখণ্ড লক্ষ্য করে দুটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হয়। ইরান-সমর্থিত হুতি গোষ্ঠী এই হামলার দায় স্বীকার করেছে। তারা দাবি করেছে, ইসরায়েল সম্প্রতি ইয়েমেনের বন্দর ও বিদ্যুৎ কেন্দ্রে বোমা হামলা চালানোর প্রতিশোধ স্বরূপ এই আঘাত হানা হয়েছে।

এই সব হামলার ফলে গোটা মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনার পারদ চরমে উঠেছে। একদিকে গাজা, অন্যদিকে ইয়েমেন — দুই ফ্রন্টে একযোগে চাপের মুখে পড়ছে ইসরায়েল।

ভবিষ্যৎ পরিস্থিতির দিকনির্দেশনা 

বিশ্লেষকদের মতে, বর্তমান পরিস্থিতি আরো জটিল হতে পারে। একদিকে গাজার অভ্যন্তরে ক্ষুধা, দারিদ্র্য ও ধ্বংস; অন্যদিকে প্রতিনিয়ত প্রতিরোধের সাহস। পরিস্থিতি শান্ত করতে আন্তর্জাতিক মহলের হস্তক্ষেপ জরুরি হয়ে পড়ছে।

“মধ্যপ্রাচ্যের এই নতুন সুরে উত্তেজনার দাম শুধু রাজনৈতিক নয়, মানবিক বিপর্যয়ও ডেকে আনছে”—একজন আন্তর্জাতিক বিশ্লেষক।

সারসংক্ষেপ 

ফিলিস্তিনের গাজা অঞ্চল থেকে ছোড়া একটি ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলের অধিকৃত নিরিম এলাকায় সরাসরি আঘাত হেনেছে। রবিবার রাতে সংঘটিত এই হামলার পর ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যমগুলো নিশ্চিত করেছে, ক্ষেপণাস্ত্রটি ভবনে আঘাত হানায় বস্তুগত ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। হামলার দায় এখনো কেউ আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকার না করলেও, এটি ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ যোদ্ধাদের পরিকল্পিত প্রতিক্রিয়া বলে ধারণা করা হচ্ছে।

গাজা থেকে ইসরায়েলি ভূখণ্ডে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা নতুন কিছু নয়। তবে সাম্প্রতিক এই হামলা যুদ্ধক্ষেত্রে পাল্টাপাল্টি অবস্থানকে আবারও সামনে নিয়ে এসেছে। বিশ্বের নজর এখন এই অঞ্চলের দিকেই, এবং প্রশ্ন রয়ে গেছে—এই সংঘাত কি কখনো শেষ হবে?

এম আর এম – ০২০৭, Signalbd.com

মন্তব্য করুন
Advertisement

Related Articles

Back to top button