বাংলাদেশ

নির্বাচন কমিশনকে ‘গণিমতের মাল’ হিসেবে ভাগ করে নেওয়ার অভিযোগ এনসিপির

Advertisement

 জাতীয় নাগরিক পার্টির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী অভিযোগ করেছেন, নির্বাচন কমিশনকে সেনাবাহিনী, বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী ভাগ করে নিয়েছে। তিনি বলেন, এনসিপি এই প্রতিষ্ঠানকে জনগণের একটি প্রতিষ্ঠান হিসেবে দেখতে চায়।

অভিযোগ ও বৈঠকের বিবরণ

রোববার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) জ্যেষ্ঠ সচিব আখতার আহমেদের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, “নির্বাচন কমিশনকে গণিমতের মাল হিসেবে ভাগ করে নেওয়া হয়েছে। আর্মি এক ভাগ নিয়েছে, বিএনপি এক ভাগ নিয়েছে, জামায়াত এক ভাগ নিয়েছে।”
এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ, যুগ্ম আহ্বায়ক খালেদ সাইফুল্লাহ ও যুগ্ম সদস্যসচিব জহিরুল ইসলাম বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। বৈঠক দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত চলে।

কমিশনকে জনগণের প্রতিষ্ঠান হিসেবে দেখতে চায় এনসিপি

নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, “আমরা চাই নির্বাচন কমিশন কোনো দলের নয়, জনগণের। এটি জুডিশিয়ারি, সিভিল সার্ভিস বা ক্যান্টনমেন্টের নিয়ন্ত্রণে থাকা উচিৎ নয়। বর্তমান নির্বাচন কমিশনকে চার ভাগে ভাগ করা হয়েছে এবং এটি দেশের সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য গুরুতর হুমকি।”
তিনি আরও বলেন, যারা গত ১৫ বছরে কমিশনের কার্যক্রমে যুক্ত ছিলেন, তাদের বিচারের আওতায় আনার দাবি রয়েছে।

নির্বাচন কমিশনের অবস্থা ও সমালোচনা

হাসনাত আবদুল্লাহ অভিযোগ করেন, নির্বাচন কমিশন ‘মেরুদণ্ডহীন’ এবং তার রিমোট কন্ট্রোল অন্য জায়গা থেকে পরিচালিত হয়। কমিশন স্বেচ্ছাচারীভাবে সিদ্ধান্ত নিচ্ছে এবং প্রধান নির্বাচন কমিশনারের পদক্ষেপও রাজনৈতিক প্রভাবিত।
তিনি বলেন, “শাপলা প্রতীক নিয়ে আইনগত ব্যাখ্যা ছাড়া কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কমিশন অংশগ্রহণমূলক ও নিরপেক্ষভাবে নির্বাচন পরিচালনায় সক্ষম নয়।”

প্রভাব ও প্রতিক্রিয়া

এনসিপি নেতা অভিযোগ করেছেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে নির্বাচন সুষ্ঠু ও স্বচ্ছ হবে না। আর্মি, বিএনপি ও জামায়াতের অংশগ্রহণ কমিশনের স্বতন্ত্রতা হ্রাস করছে। এছাড়া প্রিসাইডিং অফিসার থেকে শুরু করে স্থানীয় পর্যায়ের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারাও দলের প্রভাবাধীন।
তিনি বলেন, “মাঠ পর্যায়ে নির্বাচন পরিচালনায় রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ থাকলে জনগণের অংশগ্রহণও প্রভাবিত হবে। আমাদের আশা, কমিশন শাপলা প্রতীক দ্রুত তালিকাভুক্ত করবে।”

পরিসংখ্যান ও বাস্তবতা

  • ১৫ বছরের মধ্যে কমিশনের কার্যক্রম বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রভাবাধীন ছিল।
  • বর্তমানে কমিশন চার ভাগে ভাগ করা হয়েছে—আর্মি, বিএনপি, জামায়াত এবং অন্য রাজনৈতিক প্রভাব।
  • নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী দাবি করেন, কমিশন দুর্নীতিগ্রস্ত এবং ভোটার তালিকায় মৃত ও প্রবাসী ব্যক্তিরা এখনও অন্তর্ভুক্ত।

বিশ্লেষণ

রাজনীতিবিদ ও বিশ্লেষকরা মনে করেন, এই ধরনের অভিযোগ নির্বাচন প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা নিয়ে জাতীয় বিতর্ক তৈরি করবে। নির্বাচনের প্রস্তুতি ও প্রতীক বরাদ্দ প্রক্রিয়ায় রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ থাকলে জনগণের আস্থা কমে যায়। এনসিপির লক্ষ্য হলো নির্বাচন কমিশনকে জনগণের হাতে ফেরানো এবং অংশগ্রহণমূলক, স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন নিশ্চিত করা।

নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী ও এনসিপি নেতাদের মতে, কমিশনের স্বতন্ত্রতা ফিরিয়ে না আনা হলে আগামী নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না। তারা আশা করছেন, শাপলা প্রতীক সহ অন্যান্য বিষয় দ্রুত সমাধান হবে। জনগণ ও রাজনৈতিক দলগুলোর স্বার্থে কমিশনের স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতা রক্ষা করা গুরুত্বপূর্ণ।

এম আর এম – ১৮৪৫,Signalbd.com

মন্তব্য করুন
Advertisement

Related Articles

Back to top button