বাংলাদেশ

হজে যেতে নিবন্ধন করেছেন ৪৩,৩৭৪ জন

Advertisement

আগামী বছরের হজে অংশ নেওয়ার জন্য এখন পর্যন্ত ৪৩,৩৭৪ জন মুসল্লি নিবন্ধন করেছেন। ধর্ম মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, রোববার (১২ অক্টোবর) রাত ১২টায় এই বছরের হজ নিবন্ধন কার্যক্রম শেষ হয়েছে। তবে, এখনও হজের কোটার প্রায় এক-তৃতীয়াংশ অংশই ফাঁকা রয়েছে।

ধর্ম মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, হজের কোটার বাকি অংশ পূর্ণ হওয়া, নিবন্ধন বাড়ানো বা সীমা নির্ধারণের বিষয়টি সৌদি আরবের সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করছে। সৌদি কর্তৃপক্ষের চূড়ান্ত নির্দেশনা পাওয়ার পরই আগামী হজের চূড়ান্ত পরিকল্পনা প্রকাশ করা হবে।

হজ নিবন্ধন এবং কোটার তথ্য

বাংলাদেশ থেকে প্রতি বছর সৌদি আরবে হজে অংশগ্রহণকারীর সংখ্যা নির্ধারিত থাকে। ২০২৬ সালের হজে অংশগ্রহণের জন্য ৪৩,৩৭৪ জন মুসল্লি ইতিমধ্যে নিবন্ধিত। ধর্ম মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এই সংখ্যা পুরো কোটার মাত্র একটি অংশ।

হজের কোটার এক-তৃতীয়াংশ অংশ এখনও অব্যবহৃত থাকায় ধর্ম মন্ত্রণালয় সিদ্ধান্ত নিচ্ছে, নিবন্ধনের সময় বাড়ানো হবে কি না। আজ সোমবার (১৩ অক্টোবর) এই বিষয়ের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত প্রকাশ করা হবে।

হজ এজেন্সিস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব) ইতিমধ্যেই সরকারকে আবেদন করেছে, নিবন্ধনের সময় আগামী ৫ নভেম্বর পর্যন্ত বৃদ্ধি করার জন্য। হাবের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, অনেক মুসল্লি এখনও বিভিন্ন কারণে নিবন্ধন করতে পারেননি। সময় বাড়ালে তারা সুবিধা নিয়ে হজে অংশগ্রহণ করতে পারবে।

হজের প্রস্তুতি এবং ধর্ম মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব

ধর্ম মন্ত্রণালয় হজে অংশগ্রহণকারীদের নিবন্ধন, তথ্য যাচাই, ভিসা ও অন্যান্য আনুষঙ্গিক কাজের দায়িত্ব পালন করে। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, নিবন্ধন প্রক্রিয়া সফলভাবে সম্পন্ন হলেও সৌদি আরবের চূড়ান্ত অনুমোদন না পাওয়া পর্যন্ত চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করা যাবে না।

এছাড়া, ধর্ম মন্ত্রণালয় হজে যাওয়ার জন্য নির্ধারিত ফি, স্বাস্থ্যবিধি এবং ভিসা প্রক্রিয়া সম্পর্কে মুসল্লিদের তথ্য সরবরাহ করছে। এ বছর বিশেষভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার উপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।

হজের তারিখ এবং সৌদি আরবের প্রস্তুতি

চাঁদ দেখা অনুযায়ী, আগামী বছরের ২৬ মে ২০২৬ সালে পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হবে। প্রতি বছর সৌদি আরব সরকার বিশ্বব্যাপী মুসল্লিদের জন্য হজের সঠিক সময়সূচি ঘোষণা করে।

মুসল্লি সংগঠন এবং হজ এজেন্সিগুলি ইতিমধ্যেই সৌদি আরবের মসজিদুল হারাম এবং মসজিদুন নববী সহ অন্যান্য হজরীতির প্রস্তুতি শুরু করেছে। প্রতি সপ্তাহে প্রায় ১ কোটি ৩০ লাখ মুসল্লি মসজিদুল হারাম ও নববীতে অংশ নেয়।

বাংলাদেশের হজ এজেন্সি ও ধর্ম মন্ত্রণালয় যৌথভাবে মুসল্লিদের পরিবহন, আবাসন ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করার কাজ করছে। এ জন্য বিভিন্ন প্রস্তুতি সভা এবং কার্যক্রম ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে।

হজ এজেন্সির আবেদন এবং সরকারী নীতিমালা

হাবের পক্ষ থেকে সরকারকে জানানো হয়েছে, অনেক মুসল্লি সর্বশেষ মুহূর্তে নিবন্ধন করতে পারেন, তাই নিবন্ধনের সময় বাড়ানো হলে সুবিধা হবে। ধর্ম মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, নিবন্ধন বৃদ্ধির চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত সৌদি আরবের অনুমোদনের পরেই হবে।

এছাড়া, বাংলাদেশ থেকে হজে অংশগ্রহণের জন্য নতুন ৪৮টি হজ এজেন্সিকে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এর ফলে হজে অংশগ্রহণের সুযোগ আরও বাড়বে। হজে যাওয়া মুসল্লিদের নিরাপদ ও সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করার জন্য সরকার এই নতুন এজেন্সিগুলোর মাধ্যমে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেবে।

বাংলাদেশে হজের গুরুত্ব

বাংলাদেশের মুসল্লিদের জন্য হজ শুধুমাত্র ধর্মীয় দায়িত্ব নয়, এটি এক ধরনের আত্মশুদ্ধি, আধ্যাত্মিকতা এবং সামাজিক সংযোগের মাধ্যম। প্রতি বছর হাজার হাজার মানুষ এই পবিত্র তীর্থযাত্রার অংশগ্রহণ করে।

হজের জন্য নিবন্ধন করা মুসল্লিদের চূড়ান্ত স্বাস্থ্য পরীক্ষা, করোনা প্রটোকল, ভ্যাকসিনেশন এবং ভিসা যাচাই করা হয়। এছাড়া, ধর্ম মন্ত্রণালয় নিশ্চিত করে যে, সব মুসল্লি নিরাপদভাবে হজ করতে পারবেন।

হজে অংশগ্রহণের প্রস্তুতি

হজের নিবন্ধন শেষ হলেও, মুসল্লিদের জন্য প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। হজে অংশ নেওয়া মুসল্লিদের জন্য সরকার এবং হজ এজেন্সি নিরাপদ পরিবহন, হোটেল এবং খাদ্য ব্যবস্থা নিশ্চিত করছে।

এছাড়া, ধর্ম মন্ত্রণালয় হজ যাত্রীদের জন্য শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ কর্মসূচি চালু করেছে। এতে মুসল্লিরা হজের সময় করণীয় নিয়মকানুন, স্বাস্থ্যবিধি, এবং সাধারণ আচরণের বিষয়ে শিক্ষিত হচ্ছেন।

হজের অর্থনীতি এবং সামাজিক প্রভাব

বাংলাদেশে হজ শুধু আধ্যাত্মিকতা নয়, অর্থনৈতিক ও সামাজিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ। হজ এজেন্সি, পরিবহন, হোটেল, খাদ্য ও অন্যান্য খাতের মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিতে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখে।

হজের সময় বিপুল পরিমাণ অর্থ দেশের ব্যাংকিং সেক্টর, ভিসা ফি, বিমান খরচ এবং অন্যান্য খাতে প্রবাহিত হয়। এ সময় হাজার হাজার মানুষ সরাসরি ও পরোক্ষভাবে কর্মসংস্থানের সুযোগ পায়।

সারসংক্ষেপ

  • হজে নিবন্ধিত মুসল্লির সংখ্যা: ৪৩,৩৭৪ জন
  • কোটার অব্যবহৃত অংশ: প্রায় এক-তৃতীয়াংশ
  • নিবন্ধন সময় বৃদ্ধির সম্ভাবনা: ৫ নভেম্বর পর্যন্ত (হাবের প্রস্তাব)
  • নতুন অনুমোদিত হজ এজেন্সি: ৪৮টি
  • পবিত্র হজের তারিখ: ২৬ মে ২০২৬ (চাঁদ দেখা অনুযায়ী)
  • সৌদি আরবের সিদ্ধান্ত: চূড়ান্ত অনুমোদন অনুযায়ী হজের পরিকল্পনা

ধর্ম মন্ত্রণালয় এবং হজ এজেন্সিগুলো যৌথভাবে সকল নিবন্ধিত মুসল্লির নিরাপত্তা, স্বাস্থ্য এবং সুষ্ঠু হজ প্রক্রিয়া নিশ্চিত করতে কাজ করছে। মুসল্লিদের উদ্দেশ্যে বলা হয়েছে, সময়মতো নিবন্ধন নিশ্চিত করা, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা এবং হজের সকল নিয়ম অনুসরণ করা অত্যন্ত জরুরি।

MAH – 13301 I Signalbd.com

মন্তব্য করুন
Advertisement

Related Articles

Back to top button