
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, যারা জুলাই আন্দোলন ও গ্রাফিতির বিরোধিতা করেছেন, তারা আর কখনও ফিরে আসবে না। তিনি বলেন, জুলাই আন্দোলনে যারা আত্মত্যাগ করেছেন, তাদের ত্যাগ বৃথা যাবে না।
শনিবার মুন্সীগঞ্জের লৌহজংয়ে পদ্মা সেতুর মাওয়া প্রান্তে “জুলাই বীরত্ব” ও “জুলাই আত্মত্যাগ” শিরোনামের গ্রাফিতি উন্মোচন অনুষ্ঠানে তিনি এই মন্তব্য করেন। উক্ত গ্রাফিতি মাধ্যমে জুলাই আন্দোলনে শহীদ ও বীরযোদ্ধাদের আত্মত্যাগ ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।
জুলাই আন্দোলনের তাৎপর্য
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থান কেবল একটি আন্দোলন নয়। এটি অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে সত্য ও ন্যায় প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম। তিনি বলেন, এই আন্দোলন গণমানুষের প্রত্যাশাকে একত্রিত করে জাতিকে নতুন পথের দিশা দিয়েছে।
তিনি আরও যোগ করেন, “জুলাই বীরত্ব ও জুলাই আত্মত্যাগ” গ্রাফিতি আমাদের স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রের জন্য তরুণ সমাজের আত্মত্যাগের কথা স্মরণ করিয়ে দেবে। তিনি সকলকে আশ্বস্ত করেন, এই গ্রাফিতি সব সময়ে স্থায়ীভাবে থাকবে এবং ভবিষ্যতে নির্বাচিত সরকারও এটি অপসারণ করতে পারবে না।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত বিশেষ অতিথিরা
গ্রাফিতি উন্মোচন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রেলপথ সচিব ফাহামিদুল ইসলাম, সেতু বিভাগের সচিব মমতাজ বেগম, পুলিশের ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি রেজাউল করিম মল্লিক, মুন্সীগঞ্জ জেলা প্রশাসক ফাতেমা তুল জান্নাত, শরীয়তপুর জেলা প্রশাসক তাহসিনা বেগম, মুন্সীগঞ্জ পুলিশ সুপার মুহম্মদ শামসুল আলম সরকার, শরীয়তপুর পুলিশ সুপার নজরুল ইসলাম, বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের পরিচালক (প্রশাসন) ও যুগ্ম সচিব আলতাফ হোসেন এবং পরিচালক (পিঅ্যান্ডডি) ও যুগ্ম সচিব ভিখারুদ্দৌলা চৌধুরী।
তাদের উপস্থিতি অনুষ্ঠানের গুরুত্ব বৃদ্ধি করেছে এবং জুলাই আন্দোলনের স্মরণে দেশের নাগরিকদের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি করেছে।
গ্রাফিতির গুরুত্ব ও বার্তা
এই গ্রাফিতি শুধু শিল্পকর্ম নয়, এটি ইতিহাসের একটি স্মরণচিহ্ন। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, এটি তরুণ সমাজকে উৎসাহিত করবে এবং গণতন্ত্র ও স্বাধীনতার জন্য লড়াই চালিয়ে যাওয়ার অনুপ্রেরণা জোগাবে।
গ্রাফিতিতে জুলাই আন্দোলনের শহীদদের প্রতিকৃতি, আন্দোলনের মূল ঘটনা ও বীরত্বের চিত্রায়ন করা হয়েছে। এটি শিক্ষার্থীদের মধ্যে দেশপ্রেম এবং ন্যায়বিচারের চেতনা জাগাতে সাহায্য করবে।
প্রভাব ও সামাজিক প্রতিক্রিয়া
গ্রাফিতি উন্মোচন অনুষ্ঠানের পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এই বার্তা ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। অনেক তরুণ এবং ছাত্রসংগঠন এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে। শিক্ষার্থীরা মন্তব্য করেছেন, এটি তাদের জন্য একটি প্রেরণার উৎস এবং জুলাই আন্দোলনের শহীদদের স্মরণ করবার সুযোগ।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এই ধরনের উদ্যোগ শুধু ইতিহাসের স্মরণ নয়, বরং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য শিক্ষণীয়। এটি তরুণ সমাজকে দেশের জন্য নিজস্ব ভূমিকা নিতে উদ্বুদ্ধ করবে।
মতামত
রাজনৈতিক বিশ্লেষক অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম বলেন, “জুলাই আন্দোলন বাংলাদেশের গণতন্ত্র ও স্বাধীনতার ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। গ্রাফিতি হিসেবে শহীদদের স্মরণ রাখা, তরুণ প্রজন্মকে প্রেরণা দেবে।”
তাদের মতে, সরকারের পক্ষ থেকে এই ধরনের উদ্যোগ গ্রাফিতি বা স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের মাধ্যমে ইতিহাসের পাঠ সংরক্ষণ ও জনগণের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধিতে সহায়ক।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর মন্তব্য এবং গ্রাফিতি উন্মোচন অনুষ্ঠান একদিকে জুলাই আন্দোলনের শহীদদের স্মরণ করল, অন্যদিকে তরুণ সমাজকে ন্যায়বিচার ও স্বাধীনতার জন্য সচেতন করল।
এ ধরনের উদ্যোগ ভবিষ্যতে জাতিকে আরও সচেতন ও ঐক্যবদ্ধ করবে। শিক্ষার্থীদের আত্মত্যাগ বৃথা যাবে না এবং সমাজে সত্য ও ন্যায় প্রতিষ্ঠার জন্য এগিয়ে যাওয়ার বার্তা দেওয়া হয়েছে।
এম আর এম – ১৪৩১,Signalbd.com