বাংলাদেশ

জাকসু নির্বাচনের ভোট গণনা চলছে

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জাকসু) এবং হল সংসদ নির্বাচনের ভোট গণনা বৃহস্পতিবার রাত ১০টা ১৫ মিনিটে শুরু হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট হলে এই গণনা কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ভোট গণনার প্রক্রিয়াটি সরাসরি এলইডি স্ক্রিনে প্রদর্শন করা হচ্ছে, যাতে বিশ্ববিদ্যালয় অভ্যন্তরের শিক্ষার্থীরা তা অনুসরণ করতে পারেন।

এ বছর ভোটগ্রহণে অংশগ্রহণের হার ছিল ৬০ থেকে ৬৫ শতাংশ। ভোটগ্রহণ সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হয়েছে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ২১টি হলের ২২৪টি বুথে ভোটাররা তাদের মতামত প্রদান করেছেন।

ভোটার ও প্রার্থী সংখ্যা

এবারের নির্বাচনে মোট ভোটার সংখ্যা ১১,৭৫৯ জন। কেন্দ্রীয় সংসদের ২৫টি পদে ১৭৮ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে ভিপি পদে ৯ জন, জিএস পদে ৯ জন এবং এজিএস পদে ৬ জন নারী ও ১০ জন পুরুষ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

মোট প্রার্থীর মধ্যে ২৫ শতাংশ নারী এবং ৭৫ শতাংশ পুরুষ। জিএস পদে ১৫ জন প্রার্থীর মধ্যে মাত্র ২ জন নারী। চারটি পদে কোনো নারী প্রার্থী নেই। সবগুলো হল সংসদ মিলিয়ে মোট প্রার্থীর ২৪.৪ শতাংশই ছাত্রী। এছাড়া কিছু হলের ১৫টি পদে কোনো নারী প্রার্থী ছিল না।

নির্বাচনের প্রক্রিয়া ও নিরাপত্তা

নির্বাচন কমিশন ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ভোটের সময় পুরো নির্বাচনী প্রক্রিয়ার নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছে। প্রতিটি বুথে পর্যবেক্ষক রাখা হয়েছে এবং ভোটাররা মুখের স্বীকৃতি ও ভোটার আইডি যাচাই সাপেক্ষে ভোট দিতে পেরেছেন।

ভোট গণনা প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা বজায় রাখতে নির্বাচনের সমস্ত ফলাফল অনলাইনে আপডেট করা হচ্ছে। এছাড়া নির্বাচনের সময় কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা বা অভিযোগ রেকর্ড হয়নি।

প্রভাব ও প্রতিক্রিয়া

এই ভোটের ফলাফলের ওপর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সমাজের নজর রয়েছে। জাকসু নির্বাচনের ফলাফলের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা জানবে কোন দল বা প্রার্থী তাদের কণ্ঠস্বর প্রতিনিধিত্ব করবে।

কেন্দ্রীয় সংসদের পদগুলোর পাশাপাশি হল সংসদে নির্বাচিত প্রার্থীরাও ছাত্রদের দৈনন্দিন কার্যক্রম, হোস্টেল ও শিক্ষামূলক কার্যক্রম পরিচালনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

নির্বাচন সংক্রান্ত বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ভোট গণনার ফলাফল শিক্ষার্থীদের মাঝে রাজনৈতিক সচেতনতা বৃদ্ধি এবং বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনায় ছাত্র অংশগ্রহণের গুরুত্ব তুলে ধরবে।

পূর্ববর্তী নির্বাচন ও তুলনা

গত বছর জাকসু নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি ছিল প্রায় ৫৫ থেকে ৬০ শতাংশ। এই বছর ভোটার উপস্থিতি সামান্য বেড়েছে। এছাড়া, মোট প্রার্থীর সংখ্যা এবং নারীর অংশগ্রহণের হারও আগের বছরের তুলনায় কিছুটা পরিবর্তিত হয়েছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, ছাত্রসমাজের মধ্যে নারীর অংশগ্রহণ বাড়ছে, যদিও এখনও কিছু পদে নারীর উপস্থিতি সীমিত। ভবিষ্যতে নারীর অংশগ্রহণ আরও বাড়ানো প্রয়োজন।

বিশেষজ্ঞ মতামত

রাজনীতি ও শিক্ষা বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, জাকসু নির্বাচনের ফলাফল শুধুমাত্র শিক্ষার্থী প্রতিনিধিত্বে সীমাবদ্ধ নয়। এটি ভবিষ্যতের নেতৃত্ব গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। নির্বাচনের সময় শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ ও ভোটের সঠিক গণনা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বচ্ছ ও ন্যায়সঙ্গত প্রক্রিয়ার প্রমাণ।

একজন রাজনৈতিক বিশ্লেষক বলেন, “এ ধরনের নির্বাচন শিক্ষার্থীদের মধ্যে রাজনৈতিক সচেতনতা বাড়ায় এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের সঙ্গে সম্পর্ক আরও দৃঢ় করে।”

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে জাকসু নির্বাচনের ভোট গণনা এখন চলছে। শিক্ষার্থীরা আগ্রহভরে ফলাফলের দিকে নজর রাখছেন। নির্বাচনের ফলাফলের মাধ্যমে কেন্দ্রীয় ও হল সংসদে নতুন নেতৃত্ব নির্ধারিত হবে, যা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সমাজের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোর সমাধান ও উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে।

বিশ্লেষকরা সতর্ক করেছেন, শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ এবং স্বচ্ছ ভোট গণনা বজায় রাখা আগামী দিনের বিশ্ববিদ্যালয় রাজনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

এম আর এম – ১৩০৩,Signalbd.com

মন্তব্য করুন
Advertisement

Related Articles

Advertisement
Back to top button