বাংলাদেশ

প্রধান উপদেষ্টা ভারতের রাষ্ট্রপ্রধানসহ পাঁচ দেশের নেতাদের আম উপহার পাঠাচ্ছেন

Advertisement

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ভারতের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারি, প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ, ভুটানের রাজা ও প্রধানমন্ত্রী, নেপালের রাষ্ট্রপতি, উপরাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী, এবং মালদ্বীপের রাষ্ট্রপ্রধানদের সম্মানে বিশেষ আম উপহার পাঠাচ্ছেন।

সরকারের এক বিশ্বস্ত সূত্র থেকে জানা যায়, এই আম পাঠানো হচ্ছে দুই দেশের মধ্যকার সৌহার্দ্য ও কূটনৈতিক সম্পর্ক আরও মজবুত করার উদ্দেশ্যে। আগামী কয়েক দিনের মধ্যে এই বিশেষ আমগুলো উক্ত দেশের সরকারি উচ্চ পর্যায়ের নেতাদের হাতে পৌঁছাবে। ফ্লাইট সময়সূচীর ওপর নির্ভর করে এই উপহার পৌঁছানোর সময় পরিবর্তিত হতে পারে।

উৎসবমুখর আমের উৎসব: প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ উদ্যোগ

বাংলাদেশের গ্রীষ্মকালীন সোনালি আম বিশ্বখ্যাত। প্রতিটি মৌসুমে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আসে আমের বিভিন্ন জাত, যার মধ্যে হিমসাগর, হাঁড়িভাঙা, ল্যাংড়া ও দোস্তই বিশেষভাবে সুগন্ধি ও মিষ্টতার জন্য সমাদৃত। এ বছরের আমের মৌসুমে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এই গুণসম্পন্ন আমগুলো ভারতের, পাকিস্তানের, ভুটান, নেপাল ও মালদ্বীপের শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের কাছে পাঠিয়ে দ্বিপাক্ষিক সৌহার্দ্য বৃদ্ধির এক নতুন উদাহরণ স্থাপন করেছেন।


আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ও সাংস্কৃতিক বন্ধুত্বের নতুন সেতু

ড. মুহাম্মদ ইউনূসের পক্ষ থেকে ভারতের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির প্রতি বিশেষ আম উপহার প্রেরণের খবর সেখানকার কূটনৈতিক মহলে ইতিবাচক সাড়া ফেলেছে। একই সাথে পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারি ও প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের জন্যও পাঠানো হয়েছে বাংলার আম।

এই উদ্যোগ কেবল আমের মিষ্টতা উপস্থাপন করছে না, বরং দেশের বন্ধুত্ব ও শান্তির বার্তা বহন করছে, যা দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক ও বহুপাক্ষিক সম্পর্ক আরও দৃঢ় করতে সাহায্য করবে।


প্রতিবেশী দেশগুলোতে বাংলাদেশের আমের চাহিদা ও জনপ্রিয়তা

বাংলাদেশের আম বছরের পর বছর প্রতিবেশী দেশগুলোর মধ্যে খুবই জনপ্রিয়। বিশেষ করে ভারতীয় বিভিন্ন রাজ্যে, যেখানে আমের বিভিন্ন জাতের চাষ হয়, বাংলাদেশের আমের স্বাদ ও মানের বিশেষ কদর রয়েছে।

ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রীকে ইতিমধ্যেই হাঁড়িভাঙা আম উপহার হিসেবে দেওয়া হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও শিগগিরই আম উপহার দেওয়া হবে। ভারতের বিভিন্ন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের জন্যও আম পাঠানো হচ্ছে প্রধান উপদেষ্টা ও পররাষ্ট্র উপদেষ্টার পক্ষ থেকে।


আম: বাংলাদেশের অর্থনীতি ও কৃষিতে এক বড় অগ্রগতি

আম শুধু বাংলাদেশের জন্য একটি জনপ্রিয় ফলই নয়, এটি দেশের অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ একটি স্তম্ভ। বাংলাদেশে প্রতিবছর প্রায় এক লাখ হেক্টর জমিতে আমের চাষ হয় এবং এতে কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয় লক্ষাধিক কৃষকের। দেশের রফতানির মধ্যেও আম একটি উল্লেখযোগ্য পণ্য হিসেবে স্থান পেয়েছে।

বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশের আম রফতানি বৃদ্ধি পাচ্ছে, বিশেষ করে ইউরোপ, আমেরিকা ও এশিয়ার বিভিন্ন দেশে। তবে প্রতিবেশী দেশগুলোতে আম উপহার হিসেবে পাঠানোর মাধ্যমে কূটনৈতিক সম্পর্কের পাশাপাশি দেশের আমের বাজারও বৃদ্ধি পাচ্ছে।


প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কূটনৈতিক গুরুত্ব

ড. মুহাম্মদ ইউনূস, যিনি বিশ্বখ্যাত অর্থনীতিবিদ ও গ্রামীণ উন্নয়নের পথপ্রদর্শক, তার এই উদ্যোগ কূটনীতিক পর্যায়ে এক নতুন রূপরেখা তৈরি করেছে। শুধু দেশের ভেতরে নয়, আন্তর্জাতিক পর্যায়েও বাংলাদেশের সুনাম ও সংস্কৃতির পরিচয় বহন করছে তার এই কাজ।

তিনি সবসময়ই দেশের উন্নয়ন ও শান্তি প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বারোপ করেছেন। এই আম উপহার প্রকল্পও তার মানবতাবাদী দৃষ্টিভঙ্গির একটি চমৎকার উদাহরণ।


বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের নতুন অধ্যায়: আমের সৌজন্যে

বাংলাদেশ ও ভারতের সম্পর্ক সবসময়ই বন্ধুত্বপূর্ণ ও পারস্পরিক সহযোগিতাপূর্ণ। উভয় দেশের জনগণ বহু সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক বন্ধনে আবদ্ধ। খাদ্য সংস্কৃতির মধ্যে ‘আম’ একটি বিশেষ স্থান অধিকার করে আছে।

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের এই উদ্যোগ ভারতীয় রাষ্ট্রপ্রধান ও প্রধানমন্ত্রীর প্রতি বাংলাদেশের সৌজন্য প্রকাশ করছে, যা দুদেশের মধ্যে বন্ধুত্ব ও পারস্পরিক সম্মানকে আরো প্রগাঢ় করবে।


অন্যান্য প্রতিবেশী দেশের প্রতি বাংলাদেশের প্রণয়: ভুটান, নেপাল ও মালদ্বীপে আম উপহার

বাংলাদেশের নিকট প্রতিবেশী ভুটান, নেপাল ও মালদ্বীপের রাষ্ট্রপ্রধান ও প্রধানমন্ত্রীর কাছে আম পাঠানোর মাধ্যমে কেবলমাত্র খাদ্য উপহার দেওয়া নয়, বরং সাংস্কৃতিক বিনিময় ও পারস্পরিক সম্মানের বহিঃপ্রকাশ ঘটছে।

বিশেষ করে ভুটানের রাজা ও প্রধানমন্ত্রী, নেপালের রাষ্ট্রপতি, উপরাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী, মালদ্বীপের রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠানো এই আম দেশের সঙ্গে ঐতিহাসিক বন্ধনকে আরও শক্তিশালী করবে।


উপসংহার

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের উদ্যোগে ভারতসহ প্রতিবেশী পাঁচ দেশের শীর্ষ নেতাদের কাছে বাংলার সোনালি আম উপহার হিসেবে পাঠানো বাংলাদেশের কূটনৈতিক ইতিহাসে একটি বিশেষ অধ্যায় হিসেবে বিবেচিত হবে। এই উদ্যোগ শুধু আমের স্বাদ ও গুণের প্রশংসা নয়, বরং আন্তর্জাতিক সম্পর্কের মধুরতা, পারস্পরিক সম্মান ও বন্ধুত্বের এক নতুন সেতুবন্ধন রচনা করেছে।

মন্তব্য করুন
Advertisement

Related Articles

Back to top button