বাংলাদেশ

অস্ট্রেলিয়ান হাইকমিশনারের সঙ্গে পিআর পদ্ধতি নিয়ে জামায়াতের আলোচনা

ঢাকায় নিযুক্ত অস্ট্রেলিয়ান হাইকমিশনার সুসান রাইলের সঙ্গে বৈঠক করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর একটি প্রতিনিধি দল। বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) রাজধানীতে হাইকমিশনারের বাসভবনে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
এ বৈঠকে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন, প্রোপোরশনাল রিপ্রেজেন্টেশন (পিআর) পদ্ধতি, গণতন্ত্রের কার্যকারিতা, নারী অধিকার ও অর্থনৈতিক খাতের সম্ভাবনা নিয়ে বিস্তৃত আলোচনা হয়।

আলোচনায় উঠে আসা মূল বিষয়

জামায়াতের পক্ষ থেকে জানানো হয়, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে গণতান্ত্রিকভাবে অর্থবহ করতে পিআর পদ্ধতির গুরুত্ব অপরিসীম। প্রতিনিধি দল দাবি করে, এই পদ্ধতি চালু হলে জনগণের প্রকৃত মতামত সংসদে প্রতিফলিত হবে।
এছাড়া নারী অধিকার ও সমাজে নারীর অবস্থান নিয়েও আলোচনা হয়। জামায়াত প্রতিনিধি দল উল্লেখ করে, নারীদের অর্থনৈতিক ও সামাজিক ক্ষেত্রে স্বাধীনভাবে কাজ করার সুযোগ নিশ্চিত করা হলে দেশের সামগ্রিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত হবে।

অর্থনীতি ও উন্নয়নের প্রসঙ্গ

বৈঠকে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সম্ভাবনার বিষয়টিও আলোচনায় স্থান পায়। বিশেষ করে তৈরি পোশাক খাত, জ্বালানি খাত ও কর্মসংস্থান বৃদ্ধির দিকগুলো নিয়ে আলোচনা হয়। জামায়াত নেতারা বলেন, দুর্নীতিমুক্ত অর্থনীতি গড়ে তুলতে পারলেই দেশ আরও দ্রুত অগ্রসর হবে।
অস্ট্রেলিয়ান হাইকমিশনার বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সম্ভাবনা সম্পর্কে ইতিবাচক মন্তব্য করেন এবং স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক ব্যবস্থার গুরুত্ব তুলে ধরেন।

জামায়াতের প্রতিনিধিদল

বৈঠকে জামায়াতের নায়েবে আমির ও সাবেক এমপি ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো. তাহের নেতৃত্ব দেন। তার সঙ্গে ছিলেন কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও কেন্দ্রীয় প্রচার ও মিডিয়া বিভাগের সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ, মহিলা বিভাগের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য অ্যাডভোকেট সাবিকুন্নাহার মুন্নি এবং ডা. হাবিবা চৌধুরি সুইট।
অন্যদিকে অস্ট্রেলিয়ান হাইকমিশনের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন ডেপুটি হাইকমিশনার ক্লিন্টন পোবকে ও পলিটিক্যাল ফার্স্ট সেক্রেটারি আনা পিটারসন।

প্রাসঙ্গিকতা

বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে আগামী জাতীয় নির্বাচনকে ঘিরে নানা আলোচনা চলছে। বিশেষ করে পিআর পদ্ধতি নিয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও বিশ্লেষকরা মতামত দিয়ে আসছেন। এই পদ্ধতিতে ভোটের প্রতিফলন তুলনামূলক বেশি ভারসাম্যপূর্ণ হয় বলে দাবি করা হয়।
আগেও বিভিন্ন রাজনৈতিক দল বিদেশি কূটনীতিকদের সঙ্গে বৈঠক করেছে। সেসব আলোচনায় মূলত নির্বাচনী প্রক্রিয়া, গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন গুরুত্ব পেয়েছে।

প্রতিক্রিয়া ও বিশ্লেষণ

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, অস্ট্রেলিয়ান হাইকমিশনারের সঙ্গে জামায়াতের বৈঠক আসন্ন নির্বাচনের প্রেক্ষাপটে গুরুত্বপূর্ণ একটি ইঙ্গিত বহন করছে। এতে জামায়াত তাদের রাজনৈতিক অবস্থান তুলে ধরতে এবং আন্তর্জাতিক মহলে নিজেদের গ্রহণযোগ্যতা দেখাতে চেয়েছে।
তবে সমালোচকরা বলছেন, শুধু বৈঠক বা আলোচনার মাধ্যমে গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করা সম্ভব নয়; কার্যকর পদক্ষেপ এবং রাজনৈতিক সদিচ্ছাই প্রকৃত পরিবর্তন আনতে পারে।

ভবিষ্যৎ দিকনির্দেশনা

বৈঠক শেষে উভয়পক্ষই বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক যাত্রা এবং উন্নয়নের অগ্রগতি নিয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করে। বিশেষজ্ঞদের মতে, আগামী দিনগুলোতে যদি রাজনৈতিক দলগুলো বাস্তবসম্মত প্রস্তাবনা ও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করে, তবে দেশ একটি অংশগ্রহণমূলক ও জবাবদিহিমূলক নির্বাচনী প্রক্রিয়ার দিকে এগোতে পারবে।

এম আর এম – ১২৭১,Signalbd.com

মন্তব্য করুন
Advertisement

Related Articles

Advertisement
Back to top button