ওয়াশিংটন ডিসিতে গুলিতে নিহত দুই ইসরায়েলি দূতাবাস কর্মী

ঘটনাস্থলে ‘ফিলিস্তিন মুক্ত করো’ স্লোগান, ইহুদিবিদ্বেষী হামলার অভিযোগ
যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে ক্যাপিটাল জিউইশ মিউজিয়ামের বাইরে বন্দুকধারীর গুলিতে ইসরায়েলি দূতাবাসের দুই কর্মী নিহত হয়েছেন। স্থানীয় সময় বুধবার (২১ মে) রাতে এ ঘটনা ঘটে। হামলার পর সন্দেহভাজন একজনকে আটক করেছে পুলিশ। হামলাকারীকে আটক করার পর তিনি ‘ফ্রি প্যালেস্টাইন, ফ্রি প্যালেস্টাইন’ বলে স্লোগান দেন বলে জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা।
ঘটনাটি ঘটেছে ওয়াশিংটন ডিসির তৃতীয় ও এফ স্ট্রিটের সংযোগস্থলে, যেখানে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (FBI) এবং মার্কিন অ্যাটর্নির অফিস অবস্থিত। নিহত দুইজন—একজন পুরুষ ও একজন নারী—ইসরায়েলি দূতাবাসের কর্মী এবং একটি ইহুদি ধর্মীয়-সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশ নিচ্ছিলেন।
সন্দেহভাজন ব্যক্তি গ্রেপ্তার, হামলার উদ্দেশ্য এখনও অস্পষ্ট
ওয়াশিংটন পুলিশের প্রধান পামেলা স্মিথ বলেন, ঘটনার সময় জাদুঘরের বাইরে একজন ব্যক্তি ঘোরাঘুরি করছিলেন। পরে তাকেই সন্দেহভাজন হিসেবে আটক করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে ফিলিস্তিনপন্থী স্লোগান দিতে থাকে।
ইসরায়েলি দূতাবাসের মুখপাত্র তাল নাইম কোহেন বলেন, “দুই কর্মীকে খুব কাছ থেকে গুলি করা হয়েছে। এটি একটি পূর্বপরিকল্পিত হামলা হতে পারে বলে আমরা আশঙ্কা করছি।”
তবে হামলাকারী কিংবা হামলার উদ্দেশ্য সম্পর্কে এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানায়নি দূতাবাস কর্তৃপক্ষ।
মার্কিন কর্মকর্তাদের নিন্দা ও তদন্ত ঘোষণা
মার্কিন হোমল্যান্ড সিকিউরিটি সেক্রেটারি ক্রিস্টি নোয়েম এক্স (সাবেক টুইটার)-এ লিখেছেন, “আমরা ঘটনাটির তদন্ত করছি এবং অপরাধীর বিচার নিশ্চিত করব।” তিনি আরও জানান, ঘটনাটি জাতীয় নিরাপত্তার সঙ্গে সম্পর্কিত হওয়ায় তদন্তে একাধিক ফেডারেল সংস্থা জড়িত।
FBI পরিচালক ক্যাশ প্যাটেল বলেন, “আমরা ঘটনাটি নিয়ে মেট্রোপলিটন পুলিশ বিভাগের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছি। তদন্তে FBI সক্রিয়ভাবে সহযোগিতা করছে।”
ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাটর্নি জেনারেল পাম বন্ডি এবং ওয়াশিংটন ডিসির অ্যাটর্নি জিনিন পিরো।
ইসরায়েলি প্রতিক্রিয়া: ‘ইহুদিবিদ্বেষী সন্ত্রাস’
জাতিসংঘে নিযুক্ত ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূত ড্যানি ড্যানন এ হামলাকে ‘একটি হীন ও ইহুদিবিদ্বেষী সন্ত্রাসী হামলা’ বলে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেন, “দূতাবাস কর্মী এবং ইহুদি সম্প্রদায়ের ওপর হামলা বিশ্বজুড়ে বেড়ে চলেছে, যা সহ্য করা হবে না। আমরা আশা করছি যুক্তরাষ্ট্র কঠোর পদক্ষেপ নেবে।”
রাজনৈতিক উত্তেজনার মধ্যে ঘটনাটি ঘটল
এই হামলা এমন সময় ঘটল, যখন গাজা যুদ্ধ ও ফিলিস্তিনি-ইসরায়েলি সংঘাত নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে ব্যাপক উত্তেজনা বিরাজ করছে। ওয়াশিংটন ডিসিসহ বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ অব্যাহত রয়েছে। এই ঘটনার পর ইহুদি সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে মার্কিন প্রশাসনের ওপর চাপ বাড়ছে।
মেট্রোপলিটন পুলিশের বিবৃতি আসছে
ওয়াশিংটন ডিসির মেট্রোপলিটন পুলিশ বিভাগ জানিয়েছে, তারা শিগগিরই সাংবাদিক সম্মেলনের মাধ্যমে ঘটনার বিস্তারিত তথ্য জানাবে। এখন পর্যন্ত ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা, হামলার ধরন ও হামলাকারীর পটভূমি নিয়ে তদন্ত চলছে।