ক্রিকেট

তাইজুলের ভেলকি, শেষ সেশনে গেল ৭ উইকেট

চট্টগ্রাম টেস্টের প্রথম দিনে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দাপট দেখিয়ে ৭ উইকেট তুলে নিয়েছেন বাংলাদেশের বাঁহাতি স্পিনার তাইজুল ইসলাম। তার দুর্দান্ত বোলিংয়ে জিম্বাবুয়ে ২২৭ রানে ৯ উইকেটে অলআউট হয়ে যায়, এবং শেষ সেশনে ৭ উইকেট পড়ে যাওয়ায় বাংলাদেশের জন্য জয়লাভের পথ পরিষ্কার হয়ে উঠেছে।

প্রথম দিন: জিম্বাবুয়ের দুর্দান্ত শুরু

রোদঝলমলে এক দিনে, বাংলাদেশ দলের জন্য হতাশার শুরু হয়। প্রথম সেশনে অনেকটা চাপের মধ্যে ছিল বাংলাদেশ। তবে, পরবর্তীতে নাঈম হাসান এবং তাইজুল ইসলামের দুর্দান্ত বোলিংয়ে বাংলাদেশ ম্যাচে ফিরে আসে। চট্টগ্রামের বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান স্টেডিয়ামে, টস জিতে ব্যাটিংয়ে নামে জিম্বাবুয়ে। প্রথম দিকে তেমন কোনো বিপদ দেখা না দিলেও, তীব্র গরমের কারণে ব্যাটসম্যানরা দ্রুত ভুগতে শুরু করেন।

শুরুতে ২০০ রান পর্যন্ত নিরাপদ অবস্থানে থাকার পর, জিম্বাবুয়ে শেষ পর্যন্ত ২২৭ রানে ৯ উইকেটে থেমে যায়। প্রথম সেশনে ব্যাটিং করা জিম্বাবুয়ের ব্যাটসম্যান নিক ওয়েলচ মাংসপেশির সমস্যা নিয়ে মাঠ ছাড়েন, যা তাদের জন্য বড় ধাক্কা হয়ে দাঁড়ায়। ওয়েলচের ৫৪ রানের দুর্দান্ত ইনিংস ছিল তাদের পক্ষে উল্লেখযোগ্য।

তাইজুলের জাদু

তাইজুল ইসলামের বোলিং ছিল দলের জন্য চট্টগ্রাম টেস্টের বড় আক্রমণ। প্রথম দিনের দ্বিতীয় সেশনে শুরু থেকেই তিনি আক্রমণাত্মক বোলিং করতে থাকেন এবং খুব দ্রুত উইকেট পেতে শুরু করেন। ওপেনার বেন কারান এবং ওয়েলিংটন মাসাকাদজা সহ একাধিক ব্যাটসম্যানকে সাজঘরে ফেরান তিনি।

তাইজুলের বোলিং ছিল একেবারে অসাধারণ। তিনি প্রথমে বেন কারানকে ফিরিয়ে শুরু করেন, এরপর ওয়েসলি মাধেভেরের ক্যাচ নিয়ে আরো একটি উইকেট তুলে নেন। যখন জিম্বাবুয়ের রান ২২৭ পার করতে চলছিল, তখন তাইজুলের স্পিনে প্রতিরোধ ভেঙে যায় এবং বাংলাদেশের সুযোগ তৈরি হয়।

তাইজুলের গতি ও কৌশল দেখে, দর্শকরা কিছু সময়ের জন্য শিহরিত হয়ে ওঠে। ৮০তম ওভারে, তার এক ধারাবাহিক বলেই ওয়েলিংটন মাসাকাদজাকে এলবিডব্লিউ আউট করা হয়, পরবর্তী বলেই রিচার্ড এনগারাভাকে আউট করে, তিনি হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনা তৈরি করেছিলেন। যদিও হ্যাটট্রিক হয়নি, তবে আরো দুটি উইকেট নিয়ে তিনি সেশনটি নিজের করে নেন।

বাংলাদেশের দুর্দান্ত ফিল্ডিং

তাইজুল ইসলামের বোলিংয়ের পাশাপাশি, বাংলাদেশের ফিল্ডিংও ছিল নজরকাড়া। বিশেষ করে, তানজিম হাসান এবং সাদমান ইসলাম ও জাকের আলীর দুর্দান্ত থ্রো ও ক্যাচগুলো ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেয়। তানজিমের হাতে শন উইলিয়ামসের ক্যাচটি নেয়া ছিল একেবারে খাস; কেননা, ৬৭ রান করে উইলিয়ামস বাংলাদেশের জন্য বড় বিপদ হয়ে দাঁড়াচ্ছিলেন।

জিম্বাবুয়ের আঘাত

জিম্বাবুয়ের জন্য দিনটা কালো হতে থাকে যখন নিক ওয়েলচ ব্যথার কারণে মাঠ ছাড়েন। তিনি ফিরে যাওয়ার পর, তাদের ব্যাটিং ভেঙে পড়ে। পরবর্তীতে ক্রেইগ আরভিন এবং শন উইলিয়ামস সহ একাধিক ব্যাটসম্যান একে একে আউট হয়ে যান। শেষ পর্যন্ত, জিম্বাবুয়ে ২২৭ রানে ৯ উইকেটে অলআউট হয়ে যায়।

শেষে স্বস্তির হাসি

প্রথম দিনের খেলা শেষে, স্বস্তির হাসি নিয়ে মাঠ ছাড়ছে বাংলাদেশ দল। যদি শেষের পাঁচ ওভারে তারা শেষ উইকেটটি তুলে নিতে পারত, তাহলে তাদের ব্যাটিংয়ের জন্য অপেক্ষা করার সময়ও কমে আসত। তবে বাংলাদেশের বোলিং লাইনআপের শক্তি স্পষ্টভাবেই জিম্বাবুয়েকে কাঁপিয়ে দিয়েছিল।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

জিম্বাবুয়ে ১ম ইনিংস:
৯০ ওভারে ২২৭/৯ (উইলিয়ামস ৬৭, ওয়েলচ ৫৪, বেনেট ২১, কারেন ২১; তাইজুল ৫/৬০, নাঈম ২/৪২, তানজিম ১/৪৯)।

মন্তব্য করুন

Related Articles

Back to top button