গাজায় ২ মার্চের পর কোনো খাদ্যসহায়তা ঢোকেনি: জাতিসংঘ

ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার মানুষের জন্য ২ মার্চের পর থেকে কোনো খাদ্যসহায়তা প্রবেশ করেনি বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের আওতাধীন বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি)। সংস্থাটি গাজার ওপর আরোপ করা পূর্ণাঙ্গ অবরোধ তুলে নিতে আবারও ইসরায়েলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।
খাদ্য সংকটের অবস্থা
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে গতকাল রোববার দেওয়া এক পোস্টে ডব্লিউএফপি বলেছে, গাজায় ২ মার্চের পর থেকে কোনো খাবার প্রবেশ করেনি। সেখানে মানবিক সহায়তা ও বাণিজ্যিক পণ্য সরবরাহের জন্য সব সীমান্ত ক্রসিং বন্ধ রাখা হয়েছে। এর ফলে, আজ (১৭ মার্চ) অবধি টানা ১৫ দিন ধরে গাজাবাসীর জন্য কোনো ধরনের খাদ্যসহায়তা পাঠাতে পারেনি মানবিক সহায়তা দেওয়া সংস্থাগুলো।
মূল্যবৃদ্ধির প্রভাব
ডব্লিউএফপি আরও জানিয়েছে, সরবরাহ-সংকটের কারণে গাজায় নিত্যপণ্যের দাম অনেকটাই বেড়ে গেছে। কিছু প্রধান পণ্যের দাম ২০০ শতাংশের বেশি বেড়ে গেছে, যা গাজার মানুষের জন্য একটি গুরুতর সংকট সৃষ্টি করেছে।
যুদ্ধের প্রেক্ষাপট
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাস ইসরায়েলে হামলা চালায়, যার ফলে প্রায় ১ হাজার ২০০ মানুষ নিহত হন এবং ২৫১ জনকে জিম্মি করা হয়। এর জবাবে ইসরায়েল গাজায় নির্বিচার হামলা শুরু করে। হামাস পরিচালিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুসারে, ইসরায়েলের হামলায় নারী ও শিশুসহ ৪৮ হাজার ৫০০ জনের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
মানবিক সংকট
যুদ্ধের কারণে গাজার বেশিরভাগ বাসিন্দা বাস্তুচ্যুত হয়েছে। গাজায় প্রায় ৭০ শতাংশ ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বা পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে। স্বাস্থ্যসেবা, পানি, পয়োনিষ্কাশনসহ বিভিন্ন ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে, ফলে খাদ্য, জ্বালানি, ওষুধ ও আশ্রয়ের সংকট তৈরি হয়েছে।
যুদ্ধবিরতি আলোচনা
গত ১৯ জানুয়ারি গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়, যার প্রথম ধাপের মেয়াদ ১ মার্চ শেষ হয়। দ্বিতীয় ধাপের বিষয়ে ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে আলোচনা চলছে, যেখানে যুক্তরাষ্ট্র, কাতার ও মিসর মধ্যস্থতা করছে।