দেশে এখন বেকার কত, ২৭ লাখ, নাকি সোয়া এক কোটি

বাংলাদেশে প্রকৃত বেকার সংখ্যা নিয়ে কোনো সঠিক হিসাব নেই। সরকার যে বেকারের সংখ্যা দেয়, তা অনেকের কাছে অবিশ্বাস্য মনে হচ্ছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) হিসাবে, এক দশক ধরে দেশে বেকারের সংখ্যা ২৫ থেকে ২৭ লাখের মধ্যে সীমাবদ্ধ রয়েছে।
বেকারের সংখ্যা ও সংজ্ঞা
১৭ কোটি মানুষের দেশে মাত্র ২৭ লাখ বেকার, যা অনেকেই মানতে রাজি নন। তবে বেকারের সংজ্ঞার কারণে এই সংখ্যা সত্য। দেশে প্রায় এক কোটি মানুষ মনমতো কাজ পান না, যাদের ছদ্মবেকার বলা হয়। তারা পড়াশোনা করেন না এবং কাজেও নেই, কিন্তু জীবিকার জন্য কোনো না কোনোভাবে কাজ করেন।
চাকরির বাজারে প্রবেশ
প্রতিবছর কমপক্ষে ২০-২২ লাখ মানুষ চাকরির বাজারে প্রবেশ করেন। তাদের মধ্যে এক-তৃতীয়াংশ বিদেশে কর্মসংস্থান পান, বাকি ১৪-১৫ লাখ দেশে কর্মসংস্থান হয়। বেকারের সংখ্যা অপরিবর্তিত থাকায় বোঝা যায়, প্রতিবছর যত তরুণ-তরুণী কর্মবাজারে প্রবেশ করেন, ঠিক তত সংখ্যক কর্মসংস্থান হয়।
শ্রমশক্তি জরিপ
২০২২ সালের শ্রমশক্তি জরিপ অনুযায়ী, বাংলাদেশে বেকার লোকের সংখ্যা প্রায় ২৭ লাখ এবং বেকারত্বের হার ৪ দশমিক ২ শতাংশ। বিবিএসের সর্বশেষ ত্রৈমাসিক হিসাবে, গত সেপ্টেম্বর মাস শেষে ২৬ লাখ ৬০ হাজার বেকার আছেন।
ছদ্মবেকারদের সংখ্যা
বাংলাদেশে প্রায় এক কোটি নিষ্ক্রিয় তরুণ-তরুণী আছেন, যাদের বয়স ১৫ থেকে ২৯ বছর। এই তরুণ-তরুণীরা পড়াশোনা, কাজ বা প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন না, তাই তাদের ছদ্মবেকার বলা হয়। ২০২২ সালের শ্রমশক্তি জরিপ অনুযায়ী, এই সংখ্যা ৯৬ লাখ ৪০ হাজার।
বেকারত্বের প্রকারভেদ
বেকারত্ব মোটাদাগে তিন ধরনের:
- সামঞ্জস্যহীনতাজনিত বেকারত্ব: শ্রমবাজারের চাহিদা ও সরবরাহের মধ্যে ঘাটতি।
- বাণিজ্য চক্রজনিত বেকারত্ব: অর্থনীতির চাঙাভাব বা মন্দাভাবের কারণে।
- কাঠামোগত বেকারত্ব: প্রযুক্তির পরিবর্তনের কারণে।
বাংলাদেশে বেকারত্বের প্রকৃত চিত্র নিয়ে আলোচনা ও গবেষণা প্রয়োজন। সরকার ও নীতিনির্ধারকদের উচিত এই সমস্যা সমাধানে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা। দেশের তরুণদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করা অত্যন্ত জরুরি।