অর্থনীতি

অর্থনীতি সমিতির নেতৃত্ব নিয়ে চরম বিশৃঙ্খলা, ২৩ দিন কার্যালয় তালাবদ্ধ

বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির নেতৃত্ব নিয়ে চরম বিশৃঙ্খলা চলছে। একটি পক্ষ নিজেদের অন্তর্বর্তী বা অ্যাডহক কমিটি দাবি করে গত ১২ ফেব্রুয়ারি সংগঠনের কার্যালয় দখলে নিয়ে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে। ফলে সমিতির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী অধ্যাপক মাহবুব উল্লাহর নেতৃত্বে গঠিত অন্তর্বর্তী কমিটির সদস্যরা কার্যালয়ে যেতে পারছেন না। এভাবে ২৩ দিন ধরে সমিতির কার্যালয় ও কার্যক্রম দুটিই বন্ধ রয়েছে।

নেতৃত্বের টানাপোড়েন

অর্থনীতি সমিতির সদস্যরা জানান, নেতৃত্ব নিয়ে পাল্টাপাল্টি কমিটি গঠন এবং কার্যালয়ে হামলা ও দখলের ঘটনায় সমিতির ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে। গত দেড় দশকে সমিতি আওয়ামী লীগের ঘনিষ্ঠ একটি গোষ্ঠীর কাছে জিম্মি ছিল বলে অভিযোগ উঠেছে।

অন্তর্বর্তী কমিটির আহ্বায়ক মাহবুব উল্লাহ বলেন, “তারা (নতুন অ্যাডহক কমিটি) যা করেছে, তা কোনো সভ্য মানুষ করতে পারে না। আমরা প্রশাসনকে অবহিত করেছি। আশা করছি অচিরেই অচলাবস্থার নিরসন হবে।”

ইতিহাস ও বর্তমান পরিস্থিতি

১৯৭৪ সালে গঠিত অর্থনীতি সমিতির সদস্যসংখ্যা বর্তমানে প্রায় চার হাজার। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে দেশের প্রখ্যাত অর্থনীতিবিদেরা এ সমিতির নেতৃত্ব দিয়েছেন। গত বছরের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পদত্যাগের পর বিভিন্ন ব্যবসায়ী ও পেশাজীবী সংগঠনের নেতৃত্ব নিয়ে টানাপোড়েন শুরু হয়।

অর্থনীতি সমিতির গত নির্বাচনে পরাজিত প্যানেলের সদস্যরা আন্দোলন শুরু করেন। আন্দোলনকারীরা ৩০ সেপ্টেম্বর সমিতির কার্যালয়ে বৈঠক করার ঘোষণা দিলে কমিটির সদস্যরা ফটকে তালা লাগান। এরপর আন্দোলনকারীরা তালা ভেঙে কার্যালয়ে বৈঠক করে অ্যাডহক কমিটি গঠন করেন।

সমাধানের পথ

অ্যাডহক কমিটির সভাপতি আজিজুর রহমান বলেন, “অচলাবস্থা নিরসনে প্রয়োজনে আমরা আলোচনায় বসতে রাজি আছি।”

বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সিপিডির সম্মাননীয় ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, “অর্থনীতি সমিতির নেতৃত্ব নিয়ে যা হচ্ছে, তা খুবই অনভিপ্রেত। যত দ্রুত সম্ভব আলোচনার মাধ্যমে সমাধানে আসা প্রয়োজন।”

অর্থনীতি সমিতির এই অচলাবস্থা দেশের অর্থনীতির গবেষণা ও উন্নয়ন কার্যক্রমে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। দ্রুত সমাধানের মাধ্যমে সংগঠনটির কার্যক্রম পুনরায় সচল করা জরুরি।

মন্তব্য করুন

Related Articles

Back to top button