
দক্ষিণ আফ্রিকার ক্রিকেট দলের জয়রথ অব্যাহত! ইংল্যান্ডের বিপক্ষে দাপুটে জয় তুলে নিয়ে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির সেমিফাইনালে জায়গা করে নিয়েছে প্রোটিয়ারা। শুধু তাই নয়, গ্রুপ ‘বি’ তে শীর্ষস্থান অর্জন করেও শেষ চার নিশ্চিত করেছে তারা।
প্রথম ইনিংসে ইংল্যান্ডের ব্যর্থতা
দক্ষিণ আফ্রিকা মাঠে নামার আগেই তাদের জন্য সুখবর আসে। ইংল্যান্ডের ব্যাটিং লাইনআপ সুবিধা করতে পারেনি এবং ১৭৯ রানে অলআউট হয়। প্রোটিয়া পেসার মার্কো ইয়ানসেন ও উইয়ান মুল্ডারের দুর্দান্ত বোলিং ইংল্যান্ডের ব্যাটসম্যানদের বেঁধে রাখে। পুরো ইনিংসে ইংল্যান্ডের কোনো ব্যাটসম্যান বড় ইনিংস খেলতে পারেননি, যা তাদের দুর্দশার অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
ইংল্যান্ডের এই পরাজয়ের ফলে তাদের বিদায়ঘণ্টা বেজে যায় এবং আফগানিস্তানকেও একই পরিণতি বরণ করতে হয়। অন্যদিকে, দক্ষিণ আফ্রিকার সেমিফাইনালে খেলা নিশ্চিত হয়ে যায়।
প্রোটিয়াদের সহজ জয়
মাত্র ১৮০ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে দক্ষিণ আফ্রিকা শুরুটা খুব একটা ভালো করতে পারেনি। দলীয় ৪৭ রানের মাথায় দুই ওপেনার রায়ান রিকেলটন ও ত্রিস্তান স্তাবস জফরা আর্চারের শিকার হন। তবে এখান থেকে দলের দায়িত্ব কাঁধে তুলে নেন রাসি ফন ডার ডুসেন ও হেনরিখ ক্ল্যাসেন।
তৃতীয় উইকেট জুটিতে ১২৭ রানের দুর্দান্ত পার্টনারশিপ গড়ে তারা ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিজেদের হাতে নিয়ে নেয়। এই জুটির ওপর ভর করেই দক্ষিণ আফ্রিকা জয়ের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে যায়। যদিও জয় নিশ্চিত হওয়ার ঠিক আগে ৬৪ রানে আউট হন ক্ল্যাসেন, তবে ডেভিড মিলারের ছক্কায় জয় নিশ্চিত হয় প্রোটিয়াদের।
ডুসেন ৭২ রানে অপরাজিত থেকে দলের জয়কে সহজ করে তোলেন। দক্ষিণ আফ্রিকা মাত্র ১২৫ বল হাতে রেখে ৭ উইকেটে বিশাল জয় তুলে নেয়।
ইংল্যান্ডের হতাশাজনক পারফরম্যান্স
এই হারে ইংল্যান্ড চ্যাম্পিয়নস ট্রফির একমাত্র দল হিসেবে কোনো পয়েন্ট না পেয়েই টুর্নামেন্ট শেষ করেছে। দলের অধিনায়ক জস বাটলার হতাশা প্রকাশ করেছেন এবং স্বীকার করেছেন, পুরো টুর্নামেন্ট জুড়ে তারা নিজেদের মান অনুযায়ী খেলতে পারেনি।
এদিকে, বাংলাদেশের অবস্থান ষষ্ঠ স্থানে নিশ্চিত হয়েছে। যদিও দলটি সেমিফাইনালে যেতে পারেনি, তবে অন্যান্য দলের তুলনায় কিছুটা ভালো অবস্থানেই থেকে টুর্নামেন্ট শেষ করেছে।
সেমিফাইনালের চূড়ান্ত লাইনআপ
দক্ষিণ আফ্রিকার এই জয়ের ফলে সেমিফাইনালের চিত্রও স্পষ্ট হয়েছে। গ্রুপ ‘বি’ থেকে দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গী হয়েছে অস্ট্রেলিয়া। অন্যদিকে, গ্রুপ ‘এ’ থেকে সেরা হয়েছে ভারত, তাদের সঙ্গে শেষ চারে খেলবে নিউজিল্যান্ড।
সেমিফাইনালের সূচি অনুযায়ী, আগামী ৪ মার্চ প্রথম সেমিফাইনালে মুখোমুখি হবে ভারত ও অস্ট্রেলিয়া। এরপর ৬ মার্চ দ্বিতীয় সেমিফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রতিপক্ষ হবে নিউজিল্যান্ড। এই দুই ম্যাচের জয়ী দল ফাইনালে একে অপরের মোকাবিলা করবে।
প্রোটিয়াদের সাফল্যের চাবিকাঠি
দক্ষিণ আফ্রিকার দলে এখন ব্যাটিং ও বোলিং উভয় বিভাগেই দারুণ ভারসাম্য রয়েছে। ইয়ানসেন, মুল্ডারের পেস অ্যাটাক প্রতিপক্ষ ব্যাটসম্যানদের জন্য আতঙ্কের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। অন্যদিকে, ব্যাটিংয়ে ডুসেন ও ক্ল্যাসেন দুর্দান্ত ফর্মে রয়েছেন।
প্রোটিয়াদের বর্তমান পারফরম্যান্স দেখে বলা যায়, এবার তারা ট্রফির অন্যতম দাবিদার। তবে সেমিফাইনালে তাদের সামনে শক্তিশালী নিউজিল্যান্ড থাকবে, যারা প্রতিপক্ষের বিপক্ষে কঠিন লড়াই উপহার দিতে সক্ষম।
সুতরাং, আগামী ম্যাচগুলোতে আরও উত্তেজনা ও প্রতিদ্বন্দ্বিতা দেখার অপেক্ষায় ক্রিকেটপ্রেমীরা।