রোজা শুরুর আগেই দাম বেড়েছে যেসব পণ্যের

পবিত্র রমজান মাসের আগমনে বাজারে বিভিন্ন পণ্যের দাম বেড়ে গেছে। বিশেষ করে মুরগি, মাছ ও মাংসের দাম উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। এছাড়া লেবু, শসা ও বেগুনের দামও বাড়তি। তবে রোজার পণ্য হিসেবে পরিচিত খেজুর, ছোলা, চিড়া, মুড়ি ও গুড়ের দাম স্থিতিশীল রয়েছে।
বাজারের বর্তমান পরিস্থিতি
গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর শেওড়াপাড়া, মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেট ও টাউন হল বাজার ঘুরে দেখা গেছে, রোজা শুরু হতে আর দুই থেকে তিন দিন বাকি রয়েছে। মাসের শেষ সময় হওয়ায় ভোক্তারা বেশি করে বাজার করছেন, যার ফলে কিছু পণ্যের দাম বেড়েছে। ব্যবসায়ীরা জানান, চাহিদার তুলনায় পণ্যের সরবরাহ কম থাকায় দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে।
রাজধানীর মোহাম্মদিয়া হাউজিংয়ের গৃহিণী ফারহানা ইয়াসমিন বলেন, “পরিচিত দোকানে এক সপ্তাহ আগে বলে রেখেও সয়াবিন তেল কিনতে পারিনি। পরে কয়েক দোকান ঘুরে এক লিটার তেল কিনতে পেরেছি।”
মুরগি ও মাংসের দাম
বাজারে এক সপ্তাহের ব্যবধানে ব্রয়লার ও সোনালি মুরগির দাম কেজিতে ১০-২০ টাকা বেড়েছে। গতকাল প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ২০০-২১০ টাকায় বিক্রি হয়েছে, যা আগের সপ্তাহে ১৮০-২০০ টাকা ছিল। সোনালি মুরগির দাম বেড়ে ২৮০-৩১০ টাকা হয়েছে। বিক্রেতারা জানান, রোজার শুরুতে ক্রেতাদের সংখ্যা বাড়ায় মুরগির দাম বাড়ছে।
গরু ও খাসির মাংসের দামও বেড়েছে। ঢাকার বিভিন্ন বাজারে প্রতি কেজি গরুর মাংস ৭৫০-৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা সপ্তাহখানেক আগে কিছুটা কম ছিল। খাসির মাংসের দাম কেজিতে প্রায় ১০০ টাকা বেড়ে ১ হাজার ২০০ টাকায় পৌঁছেছে। ছাগলের মাংস বিক্রি হচ্ছে ১০৫০-১১০০ টাকায়।
মাছের দাম
চাষের চিংড়ি, কই, শিং, তেলাপিয়া, রুই ও পাঙাশ মাছের দাম কেজিতে ২০-৫০ টাকা বেড়েছে। তবে আলু, পেঁয়াজসহ অন্যান্য সবজির দাম আগের মতোই স্থিতিশীল রয়েছে। যেমন প্রতি কেজি আলু ২০-২৫ টাকা ও পেঁয়াজ ৪০-৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
লেবু, বেগুন ও শসার দাম
রমজান মাসে লেবু, বেগুন ও শসার চাহিদা বেশি থাকে। বাজারে এসব পণ্যের দাম বেড়েছে। গত ১৫ দিনের ব্যবধানে লেবুর দাম প্রায় দ্বিগুণ হয়ে গেছে। দুই সপ্তাহ আগে সাধারণ মানের লেবুর হালি ছিল ২০-৪০ টাকা, যা গতকাল ৪০ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। বড় লেবুর দাম ১০০ টাকার আশপাশে।
বেগুনের দাম প্রতি কেজি ৪৫ থেকে ৬৫ টাকা, হাইব্রিড শসা ৫০-৬০ টাকা ও দেশি শসা ৮০-১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সপ্তাহখানেক আগে বেগুন ও শসার দাম কেজিতে ১০-২০ টাকা কম ছিল।
রোজার পণ্যের দাম
এদিকে, রোজার পণ্যের দাম স্থিতিশীল রয়েছে। সরকার খেজুর আমদানিতে শুল্ক-কর কমানোর ফলে আমদানি বেড়েছে। ব্যবসায়ীরা জানান, কম শুল্ক ও সরবরাহ বেশি থাকায় গত এক মাসের মধ্যে মানভেদে খেজুরের দাম কেজিতে ২০ থেকে ২০০ টাকা কমেছে। ছোলার দামও কেজিতে ১৫ টাকার মতো কমে ১০৫ থেকে ১১৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
সয়াবিন তেলের সংকট
বাজারে বোতলজাত সয়াবিন তেলের সরবরাহ সংকটের তেমন উন্নতি হয়নি। ঢাকার তিনটি বাজার ঘুরে মাত্র কয়েকটি দোকানে স্বল্প পরিমাণে বোতলজাত সয়াবিন তেল পাওয়া গেছে। ভোক্তারা অভিযোগ করেন, রোজার আগে সয়াবিন তেলের জন্য দোকানে দোকানে।