চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে আফগানিস্তানের পরাজয়

চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি ২০২৫-এ নিজেদের অভিষেক ম্যাচে আফগানিস্তান দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে ১০৭ রানের বড় ব্যবধানে পরাজিত হয়েছে। করাচির ন্যাশনাল স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত এই ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকা টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয়, যা তাদের জন্য সুফল বয়ে আনে।
দক্ষিণ আফ্রিকার শক্তিশালী ব্যাটিং
দক্ষিণ আফ্রিকা প্রথমে ব্যাট করে ৫০ ওভারে ৬ উইকেটে ৩১৫ রান সংগ্রহ করে। তাদের ইনিংসের মূল ভিত্তি ছিলেন ওপেনার রায়ান রিকেলটন, যিনি তার প্রথম ওয়ানডে সেঞ্চুরি করেন। ১০১ বলে ৭ চার ও ১ ছক্কার সাহায্যে ১০৩ রান করে রানআউট হন তিনি। অধিনায়ক টেম্বা বাভুমা ৫৮, রাসি ফন ডার ডুসেন ৫২ এবং এইডেন মার্করাম অপরাজিত ৫২ রান করে দলের স্কোরকে সমৃদ্ধ করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। শেষ ৮৭ বলে ১১৪ রান যোগ করে দক্ষিণ আফ্রিকা প্রতিপক্ষের সামনে চ্যালেঞ্জিং লক্ষ্য স্থাপন করে।
আফগানিস্তানের ব্যাটিং বিপর্যয়
৩১৬ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে আফগানিস্তান শুরুতেই বিপর্যয়ের মুখে পড়ে। দুই ওপেনার রহমানউল্লাহ গুরবাজ (১০) ও ইব্রাহিম জাদরান (১৭) দ্রুত ফিরে যান। দলের পক্ষে একমাত্র উল্লেখযোগ্য ইনিংস খেলেন রহমত শাহ, যিনি ৯০ রান সংগ্রহ করেন। তবে তার এই প্রচেষ্টা দলকে জয়ের পথে এগিয়ে নিতে যথেষ্ট ছিল না। রশিদ খান ও আজমতউল্লাহ ওমরজাই উভয়েই ১৮ রান করে অবদান রাখেন। শেষ পর্যন্ত আফগানিস্তান ৪৩.৩ ওভারে ২০৮ রানে অলআউট হয়।
দক্ষিণ আফ্রিকার বোলিং আক্রমণ
দক্ষিণ আফ্রিকার বোলাররা নিয়ন্ত্রিত বোলিং প্রদর্শন করেন। কাগিসো রাবাদা ৩৬ রানে ৩ উইকেট নিয়ে আফগানিস্তানের ব্যাটিং লাইনআপকে চাপে রাখেন। তাদের সিম আক্রমণ করাচির পিচের বাউন্স ও পেসকে ভালোভাবে ব্যবহার করে আফগান ব্যাটসম্যানদের জন্য কঠিন পরিস্থিতি সৃষ্টি করে।
ম্যাচ পরবর্তী প্রতিক্রিয়া
ম্যাচ শেষে দক্ষিণ আফ্রিকার অধিনায়ক টেম্বা বাভুমা বলেন, “এটি একটি চমৎকার পারফরম্যান্স ছিল। টস জিতে ব্যাটিং নেওয়া আমাদের জন্য সুফল বয়ে এনেছে। পিচে কিছুটা বাউন্স ও ভেরিয়েবল বাউন্স ছিল, যা আমাদের বোলাররা ভালোভাবে ব্যবহার করেছে।”
অন্যদিকে, আফগানিস্তানের অধিনায়ক হাশমতউল্লাহ শাহিদি পিচের চ্যালেঞ্জিং কন্ডিশন সম্পর্কে বলেন, “টস গুরুত্বপূর্ণ ছিল, এটি করাচির সাধারণ পিচের মতো ছিল না। আমরা আমাদের পরিকল্পনা অনুযায়ী খেলতে পারিনি, তবে আমাদের সামনে আরও দুটি ম্যাচ আছে, যেখানে আমরা ভালো করার চেষ্টা করব।”
পরবর্তী চ্যালেঞ্জ
এই পরাজয়ের পর আফগানিস্তানের সেমিফাইনালে পৌঁছানোর সম্ভাবনা টিকিয়ে রাখতে পরবর্তী ম্যাচগুলোতে জয় অর্জন করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাদের পরবর্তী ম্যাচ ইংল্যান্ডের বিপক্ষে লাহোরে অনুষ্ঠিত হবে, যেখানে জয় পেতে হলে দলকে সেরা পারফরম্যান্স প্রদর্শন করতে হবে।
অন্যদিকে, দক্ষিণ আফ্রিকা তাদের পরবর্তী ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার মুখোমুখি হবে রাওয়ালপিন্ডিতে। প্রথম ম্যাচে জয়ের আত্মবিশ্বাস নিয়ে তারা পরবর্তী ম্যাচেও ভালো করার আশাবাদ ব্যক্ত করেছে।
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির এই পর্যায়ে প্রতিটি ম্যাচই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, এবং দলগুলো তাদের সেরা খেলাটি প্রদর্শন করে সেমিফাইনালে পৌঁছানোর জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করবে।