বিশ্ব

মালিতে সোনার খনি ধসে নিহত ৪৮: অবৈধ খনির ঝুঁকি ও উদ্ধারকাজ

মালির পশ্চিমাঞ্চলে গতকাল শনিবার একটি সোনার খনি ধসে অন্তত ৪৮ জন নিহত হয়েছেন। কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় সূত্রের বরাত দিয়ে এএফপি এ তথ্য জানিয়েছে। আফ্রিকার অন্যতম সেরা সোনা উৎপাদনকারী দেশ মালি, যেখানে প্রায়ই খনিতে ভূমিধসে প্রাণহানির ঘটনা ঘটে।

অবৈধ খনির পরিস্থিতি

মালিতে অবৈধ অনেক সোনার খনি রয়েছে, এবং গতকাল ধসে পড়া খনিটিও অবৈধ ছিল। এটি অনেক আগেই পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছিল। স্থানীয় কর্তৃপক্ষ অবৈধ খনি থেকে সোনা উত্তোলন নিয়ন্ত্রণে হিমশিম খাচ্ছে। বিশ্বের সবচেয়ে দরিদ্র দেশগুলোর একটি মালি, যেখানে মানুষ নিরাপত্তাব্যবস্থা ছাড়াই প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে খনি থেকে সোনা সংগ্রহ করে।

ধসের ঘটনা

গতকাল শনিবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে খনিতে ধস নামে। পুলিশের একটি সূত্র জানায়, এই ঘটনায় ৪৮ জন মারা গেছেন। নিহতদের মধ্যে একজন নারীও রয়েছেন, যিনি তাঁর পিঠে ছোট্ট শিশুকে বাঁধা অবস্থায় ছিলেন। স্থানীয় এক কর্মকর্তা এই খনিধসের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

‘কেনিয়েবা গোল্ড মাইনার্স অ্যাসোসিয়েশন’ ৪৮ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে। উদ্ধারকাজ এখনও চলছে বলে জানিয়েছেন একটি পরিবেশবাদী সংগঠনের প্রধান।

খনির ইতিহাস

যে খনিতে ধস নেমেছে, সেটি আগে চীনের একটি কোম্পানি পরিচালনা করত। কিন্তু পরে এটি পরিত্যক্ত হয়ে যায়। অবৈধ খনিগুলোতে কাজ করা শ্রমিকরা সাধারণত কোনো ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছাড়াই কাজ করেন, যা তাদের জীবনের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি তৈরি করে।

সরকারের ভূমিকা

মালির সরকার অবৈধ খনিগুলো নিয়ন্ত্রণে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হয়েছে। ফলে, শ্রমিকরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে খনিগুলোতে কাজ করতে বাধ্য হচ্ছেন। এই ধরনের ঘটনা মালির অর্থনীতির জন্যও ক্ষতিকর, কারণ সোনা উৎপাদন দেশের প্রধান অর্থনৈতিক উৎস।

আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া

মালির এই ঘটনা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। মানবাধিকার সংগঠনগুলো এই ধরনের ঘটনার জন্য সরকারের অব্যবস্থাপনাকে দায়ী করছে। তারা বলছে, অবৈধ খনিগুলোতে কাজ করা শ্রমিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সরকারের দায়িত্ব।

মালির সোনার খনি ধসের ঘটনা আবারও প্রমাণ করে যে, অবৈধ খনির কার্যক্রম কতটা বিপজ্জনক। সরকারের উচিত অবৈধ খনিগুলো বন্ধ করা এবং শ্রমিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। এই ধরনের ঘটনা প্রতিরোধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা না হলে, ভবিষ্যতে আরও প্রাণহানির ঘটনা ঘটতে পারে।

মালির জনগণের জন্য একটি নিরাপদ ও সুরক্ষিত পরিবেশ নিশ্চিত করতে হলে, সরকারের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কেও এগিয়ে আসতে হবে।

মন্তব্য করুন

Related Articles

Back to top button