সরকারি প্রাথমিক স্কুলে নিয়োগ ফিরে পেতে আন্দোলন

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে বাতিল হওয়া নিয়োগ ফিরে পাওয়ার দাবিতে রাজধানীর শাহবাগের জাতীয় জাদুঘরের সামনে অবস্থান করছেন আন্দোলনকারীরা। আজ মঙ্গলবারও তারা সেখানে অবস্থান করছেন।

আন্দোলনের পটভূমি

শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ খালিদ মনসুর প্রথম আলোকে জানান, “কিছু লোকজন জাতীয় জাদুঘরের সামনে অবস্থান করছেন। তবে তাঁরা আজ সড়ক অবরোধ করেননি।” আন্দোলনকারীরা দাবি করছেন, তৃতীয় ধাপে ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগে ৬ হাজার ৫৩১ জনের নিয়োগের জন্য তারা আন্দোলন করছেন।

নিয়োগের প্রক্রিয়া

আন্দোলনকারীরা জানান, প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি তিনটি ধাপে দেওয়া হয়েছিল। প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপের চূড়ান্ত নিয়োগ কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে, কিন্তু তৃতীয় ধাপ নিয়ে প্রহসন চলছে। গতকাল আন্দোলনকারীরা সড়ক অবরোধ করলে শাহবাগ মোড় দিয়ে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

পুলিশের হস্তক্ষেপ

বেলা দুইটার দিকে পুলিশ আন্দোলনকারীদের সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। একপর্যায়ে পুলিশ লাঠিপেটা, জলকামান ও সাউন্ড গ্রেনেড ব্যবহার করে আন্দোলনকারীদের সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। পুলিশের লাঠিপেটায় বেশ কয়েকজন আন্দোলনকারী আহত হন।

রাতভর অবস্থান

গতকাল পুলিশের লাঠিপেটার পর আন্দোলনকারীরা সড়ক ছেড়ে জাতীয় জাদুঘরের সামনে অবস্থান নেন। তারা জানান, গতকাল রাতভর সেখানে অবস্থান করেছেন এবং আজও সেখানে আছেন। দাবি আদায় না হলে তারা সরবেন না।

আন্দোলনকারীদের দাবি

আন্দোলনকারীদের সংবাদ বিজ্ঞপ্তির তথ্যমতে, ২০২৩ সালের ১৪ জুন তৃতীয় ধাপের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়। লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় ২০২৪ সালের ২৯ মার্চ। লিখিত পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয় ২১ এপ্রিল। ১২ জুন সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়। আইন মন্ত্রণালয় ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অনুমতি নিয়ে ৩১ অক্টোবর ফল প্রকাশিত হয়। এতে ৬ হাজার ৫৩১ জন চূড়ান্তভাবে সুপারিশপ্রাপ্ত হন। তবে সুপারিশপ্রাপ্ত না হওয়া ৩১ জন হাইকোর্টে রিট করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে ৬ হাজার ৫৩১ জনের নিয়োগ কার্যক্রম ৬ মাসের জন্য স্থগিত করা হয়।

হাইকোর্টের রায়

৬ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্টের রায়ে তৃতীয় ধাপে ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগে চূড়ান্ত ফলাফলে উত্তীর্ণ ৬ হাজার ৫৩১ জনের নিয়োগ কার্যক্রম বাতিল করা হয়। এই রায়ের পর আন্দোলনকারীরা তাদের দাবি আদায়ের জন্য আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন।

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগ ফিরে পাওয়ার জন্য আন্দোলনকারীদের এই সংগ্রাম একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। তারা তাদের অধিকার আদায়ের জন্য দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। আশা করা যায়, সরকার তাদের দাবি শুনবে এবং দ্রুত সমাধান করবে।