ফুটবল

নেপাল ম্যাচে বাংলাদেশের রোমাঞ্চকর পারফর্ম্যান্স হামজা

Advertisement

বাংলাদেশের ফুটবলপ্রেমীদের জন্য আজকের দিনটি বিশেষ। রাজধানীর জাতীয় স্টেডিয়ামে সন্ধ্যা আটটায় শুরু হতে যাচ্ছে বাংলাদেশ বনাম নেপাল ফিফা প্রীতি ম্যাচ, যেখানে দলে ফেরেছেন দেশের তারকা মিডফিল্ডার হামজা চৌধুরী। এ ম্যাচে হামজার অভিজ্ঞতা ও দক্ষতা নেপাল দলকে যথেষ্ট রোমাঞ্চিত করেছে।

হামজা চৌধুরী, যিনি ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগসহ আন্তর্জাতিক ক্লাবে খেলার অভিজ্ঞতা রাখেন, খেলবেন বাংলাদেশ দলে। তার মতো খেলোয়াড়ের সঙ্গে খেলতে নেপাল দল পুরোপুরি প্রস্তুত এবং উচ্ছ্বাসে ভরা। নেপালের জাতীয় দলের কোচ হরি খাড়কা বলেছেন, “হামজা এবং শমিতের মতো খেলোয়াড়দের কারণে বাংলাদেশের শক্তি আরও বেড়েছে। তবে ফুটবল এক ব্যক্তির খেলা নয়। আমাদের দল প্রস্তুত এবং আমরা ভালোভাবে খেলতে চাই।”

নেপাল দলে আছেন আটজন খেলোয়াড়, যারা সম্প্রতি বাংলাদেশের ঘরোয়া লিগে অংশ নিয়েছেন। এ দলের অধিনায়ক কিরণ চেমজং সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “সেপ্টেম্বরে কাঠমান্ডুর ম্যাচে আমরা হামজাকে দলে চাইছিলাম, কিন্তু তখন তিনি আসেননি। এবার ঢাকায় এসে তার সঙ্গে খেলতে পারছি, যা আমাদের জন্য নতুন ও উত্তেজনাপূর্ণ অভিজ্ঞতা।”

বাংলাদেশ ও নেপালের পূর্ব ইতিহাস

বাংলাদেশ ও নেপালের ফুটবল দ্বৈরথ দীর্ঘদিনের। সর্বশেষ ২০২০ সালের ১৩ নভেম্বর দুই দলের খেলা ড্র হয়। এর আগে বাংলাদেশ নেপালকে হারিয়েছিল ২০১৮ সালে। বাংলাদেশ কোচ হাভিয়ের কাবরেরা মনে করেন, এই ম্যাচ ভারতের বিপক্ষে এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বের প্রস্তুতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ। তিনি সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “ভারত ম্যাচের আগে নিজেদের যাচাই করার জন্য নেপালের সঙ্গে খেলা জরুরি। আমরা এই ম্যাচে ১৭ জন খেলোয়াড়কে মাঠে আনা চাই, যাতে দলীয় সমন্বয় ও কৌশল পরীক্ষা করা যায়।”

বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া দর্শকদের মাঠে উপস্থিত থাকার জন্য অনুরোধ করেছেন। তিনি বলেন, “নেপালের বিরুদ্ধে জয় আমাদের আত্মবিশ্বাস বাড়াবে। দর্শকদের সমর্থন আমাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।”

ম্যাচের চ্যালেঞ্জ এবং প্রস্তুতি

নেপাল দলও এ ম্যাচকে গুরুত্ব দিয়ে নিয়েছে। কোচ হরি খাড়কা বলেন, “নেপাল-বাংলাদেশ সবসময়ই চ্যালেঞ্জিং ম্যাচ হয়। আমাদের মূল লক্ষ্য দলগত সমন্বয়। হামজা এবং শমিতকে মোকাবিলা করতে আমরা মানসিকভাবে প্রস্তুত।”

বাংলাদেশ দলের জন্য এই ম্যাচ কেবল প্রস্তুতি নয়, বরং নেপালের বিরুদ্ধে ভালো খেলার মাধ্যমে ভারত ম্যাচের জন্য আত্মবিশ্বাস তৈরি করা। কোচ হাভিয়ের কাবরেরা মনে করেন, “ভারতের বিপক্ষে এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বে জয় পাওয়ার জন্য এই ম্যাচে দলের সামর্থ্য যাচাই করা জরুরি।”

লম্বা ভ্রমণ শেষে শমিত সোম ঢাকায় পৌঁছেছেন। তার ফিটনেস এবং একাদশে খেলার বিষয়টি কোচ ম্যাচের আগে ঠিক করবেন। অপরদিকে, শেখ মোরছালিন চোটের কারণে অনুশীলনে অংশ নিতে পারেননি।

বাংলাদেশের শক্তি

বাংলাদেশ দলের সবচেয়ে বড় শক্তি হলো দলীয় সমন্বয় এবং অভিজ্ঞ খেলোয়াড়। হামজা চৌধুরীর মতো খেলোয়াড় কেবল স্কিল নয়, ম্যাচের মানসিক চাপ সামলাতেও দারুণ। জামাল ভূঁইয়া ও অন্যান্য অভিজ্ঞ খেলোয়াড় দলের নেতৃত্ব এবং কৌশল নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবেন।

বাংলাদেশের ঘরোয়া ফুটবল লিগে খেলোয়ারদের অভিজ্ঞতা দলের মান বাড়িয়েছে। নেপাল দলের বেশিরভাগ খেলোয়াড় এই লিগে খেলে অভিজ্ঞতা অর্জন করেছে, তাই ম্যাচটি কেবল খেলোয়াড়দের জন্য নয়, দর্শকদের জন্যও উত্তেজনাপূর্ণ।

দর্শক আগ্রহ ও টিকিটের অবস্থা

ভারত ম্যাচের সব টিকিট মাত্র ৬ মিনিটে শেষ হয়ে যায়। কিন্তু নেপাল ম্যাচের টিকিট অর্ধেক বিক্রি হয়েছে। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া সামাজিক মাধ্যমে প্রচারণা চালিয়ে দর্শক আনার চেষ্টা করছেন। কোচ হাভিয়ের কাবরেরা ও খেলোয়াড়রা দর্শকদের উপস্থিতি ম্যাচের উত্তেজনা বাড়াবে বলে মনে করেন।

বাংলাদেশ দলে প্রত্যাশা

কোচ কাবরেরা মনে করেন, এই ম্যাচ বাংলাদেশ দলের জন্য নতুন কৌশল ও সমন্বয় পরীক্ষা করার সুযোগ। তিনি সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “আমাদের লক্ষ্য ভারত ম্যাচ। নেপালের বিরুদ্ধে ম্যাচটি আমাদের প্রস্তুতি যাচাই করার জন্য আদর্শ।”

অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়াও নিশ্চিত করেছেন, “নেপালের বিরুদ্ধে জয় আমাদের আত্মবিশ্বাস বাড়াবে। আমরা এই ম্যাচ জিততে চাই এবং দলের সমন্বয় ও শক্তি পরীক্ষা করতে চাই।”

MAH – 13791 I Signalbd.com

মন্তব্য করুন
Advertisement

Related Articles

Back to top button