রাজনীতি

প্রধান উপদেষ্টার সাক্ষাৎ চায় জামায়াতে ইসলামীসহ ৮ দল

Advertisement

জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫’ বাস্তবায়ন ও গণভোটসহ পাঁচ দফা দাবিতে আগামীকাল সাক্ষাতের জন্য প্রধানমন্ত্রী উপদেষ্টার সঙ্গে সময় চাওয়া হবে—জামায়াতে ইসলামী ও সমমনা আট দল আজ বৈঠকে সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

সভা ও সিদ্ধান্তের বিবরণ

আজ মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর পুরানা পল্টনে অনুষ্ঠিত সমাবেশ শেষে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-র কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত আট দলের শীর্ষ নেতাদের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, আগামীকাল বুধবারের মধ্যে মুহাম্মদ ইউনূস-এর সঙ্গে আলোচনা করার জন্য সাক্ষাতের সময় চাওয়া হবে। বৈঠকে অংশ নেওয়া নেতারা বলেন, যদি আলোচনায় ফলপ্রসূ সিদ্ধান্ত না আসে, তাহলে তাদের কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা বাধ্য হবে।

বৈঠকে যা- যা সিদ্ধান্ত হয়, তার মধ্যে অন্যতম: “জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারি, ওই আদেশের ওপর গণভোট আয়োজন”সহ পাঁচ দফা দাবি কার্যকর করার জন্য প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে আলোচনা। তারা সরকারের দৃষ্টিতে দেখছেন, জুলাই সনদ-সংক্রান্ত কার্যক্রম দ্রুত না হলে আগামী নির্বাচনের সময় রাজনৈতিক পরিবেশ বিবেচনায় কঠিন হয়ে উঠবে।

‘জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫’ নামে পরিচিত এই রূপকার্যের প্রসঙ্গ গত অক্টোবর থেকে গুরুত্ব পায়। এই সনদে সংবিধান-সংস্কার, নির্বাচন প্রক্রিয়া, প্রশাসনিক কাঠামোর রূপান্তর প্রভृति বিষয় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। যদিও দুই বা ততোধিক দল সনদে স্বাক্ষর করেছে, তবুও কার্যকর বাস্তবায়ন ও গণভোট সংক্রান্ত সময়সূচি নিয়ে বিতর্কিত অবস্থান রয়েছে। 

আজকের আট দলীয় বৈঠক মূলত সেই অচলাবস্থা ভাঙতে এবং প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সরাসরি আলোচনা করেই সমস্যার সমাধান করতে চায়। দলীয় নেতারা বলছেন, “গণভোট ছাড়া নির্বাচন হবে না” এই শর্ত তাদের অনড় অবস্থান।

নেতাদের বক্তব্য ও প্রতিক্রিয়া

বৈঠকে উপস্থিত জামায়াতে ইসলামী-র আমির বলেছিলেন, “জুলাই বিপ্লবকে স্বীকৃতি দিতে হবে। আইনগত ভিত্তি না হলে নির্বাচনের কোনো ন্যায়ভিত্তিক সম্ভাবনা নেই।” অন্যদিকে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস-র আমির বলেন, “ভাঙাুশোনা হলে আন্দোলন আরও বড় রূপ নেবে।”

সরকার পক্ষ থেকে এখনও এই সাক্ষাতের বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তবে গত কয়েকদিন ধরে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এই ধরনের চেয়ে নেয়া সময়সূচি রাজনৈতিক সময়পঞ্জী ও নির্বাচনের প্রস্তুতির জন্য সংকেত হিসেবে বিবেচিত হবে।

সাম্প্রতিক রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট

বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে রাজনৈতিক দল-আন্দোলন ও নির্বাচনের পরিবেশ সবচেয়ে আলোচিত বিষয়। দীর্ঘ সময় ধরে বলছিনা, আলোচনায় রয়েছে হয়রানিমূলক মামলা-প্রক্রিয়া, নির্বাচন পূর্ব প্রস্তুতির স্বচ্ছতা, সংবিধান-সংস্কার ইত্যাদি বিষয়। তারা মূলনীতিতে এমন একটি পরিবেশ চায় যেখানে নির্বাচন হয় ন্যায়-ভিত্তিতে।

এই প্রসঙ্গে আজ আলোচনায় উঠে এসেছে এই আট দলীয় জোটের স্বার্থ ও অভিপ্রায়। তারা মূলত দলের অভ্যন্তরীণ ও বহিরাগত চাপকে মোকাবিলা করতে ‘প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে আলোচনা’কে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছে।

প্রভাব ও আগাম সম্ভাবনা

এই রকম একটি উদ্যোগ রাজনৈতিক গতিবিধিতে প্রভাব ফেলতে পারে। যদি আলোচনা সফল হয় এবং সময়সূচি নির্ধারিত হয়, তাহলে আগামী নির্বাচনের প্রস্তুতির ক্ষেত্রে রাজনৈতিক দলের প্রস্তুতিই বদলে যেতে পারে। অন্যদিকে, যদি আলোচনা ব্যর্থ হয়, তাহলে দুইপক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বাড়তে পারে এবং কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা হতে পারে যা নির্বাচন-প্রকৃতিকে আরও জটিলতা দিতে পারে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, “জুলাই সনদ”-এর বাস্তবায়ন হতে পারলে এটি পরিবর্তনের প্রতীক হতে পারে। কিন্তু সেটি শুধু ঘোষণা নয় — বাস্তব কাজ ও সময়সুচি থাকতে হবে। 

আজ জামায়াতে ইসলামীসহ আট দল নিবদ্ধ হয়েছন ‘প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাতের সময় চাওয়া’ এই সিদ্ধান্তে। কিন্তু আলোচনা সফল না হলে রাজনৈতিক উত্তেজনা বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। নির্বাচনের পূর্ববর্তী এই সময়ে কতটা প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে, রাজনৈতিক পরিবেশ কতটুকু শান্তিপূর্ণ থাকবে—এসব প্রশ্ন এখন সক্রিয়। আগামী দিনে দেখা যাবে, এই সাক্ষাতের ফল কী রূপ নেয় এবং রাজনৈতিক দল-সরকার তা কীভাবে মোকাবিলা করে।

এম আর এম – ২১৯৭,Signalbd.com

মন্তব্য করুন
Advertisement

Related Articles

Back to top button