রাজনীতি

চাঁদাবাজির বাণিজ্য কায়েমকারীদের সঙ্গে জোটের চেয়ে মরে যাওয়া ভালো: হাসনাত

Advertisement

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেছেন, স্থানীয় চাঁদাবাজি ও বাণিজ্য পরিচালনায় জড়িত নেতাদের সঙ্গে জোট করার চেয়ে মৃত্যুর দিকে যাওয়া ভালো।

তিনি বলেন, “ইতিমধ্যে যাদের ঘাড়-কোমড় চাঁদাবাজির টাকায় ভারী হয়ে আছে, তারা এলাকায় এলাকায় ত্রাস সৃষ্টি করেছে। প্রতি পাড়া, জেলা, মহল্লায় চাঁদাবাজির রমরমা বাণিজ্য যারা কায়েম করেছে, তাদের সঙ্গে জোট করে নির্বাচনের চেয়ে মরে যাওয়া ভালো।”

এই মন্তব্য তিনি সোমবার (১০ নভেম্বর) রাত সাড়ে ৮টায় চাঁদপুর জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এনসিপি আয়োজিত সমন্বয় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে করেন।

হাইব্রিড নেতারা

হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, বিএনপির মধ্যে কিছু নেতারা হাইব্রিড নেতার মতো কাজ করছে এবং তারা দলের মূল আদর্শ থেকে দূরে সরে গেছে। তিনি বলেন, “বিএনপির মধ্যে অনেক ত্যাগী মানুষ আছেন, যারা বাংলাদেশ পন্থায় বিশ্বাস করেন। যারা এখনও বিক্রি হননি এবং চাঁদাবাজিতে জড়িত হননি, তারা আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন। আমরা তাদের আমাদের দলে নিয়ে নেব ইনশা আল্লাহ।”

তিনি আরও উল্লেখ করেন, শহীদ জিয়াউর রহমানের আদর্শের প্রতি যারা বিশ্বাস রাখে, তাদের হাত থেকে কখনো চাঁদা ওঠে না এবং তারা কখনো দলীয় কোন্দলে সহিংসতা ঘটাতে পারে না।

নির্বাচনের পূর্ব শর্ত ও নির্দেশনা

সভায় হাসনাত আবদুল্লাহ আরও বলেন, নির্বাচনের পূর্বে অবশ্যই জুলাই সনদের আদেশ বাস্তবায়ন হতে হবে। এটি কোনো অর্ধ–আদেশ, অধ্যাদেশ বা প্রজ্ঞাপন নয়। আদেশটি অবশ্যই প্রযোজ্য কর্তৃপক্ষ, বিশেষ করে ড. ইউনূসকে প্রদান করতে হবে।

তিনি এনসিপি সরকারের গঠনের বিষয়ে বলেন, সরকার গঠন হবে জনাব নাহিদ ইসলামের নেতৃত্বে। তিনি মনে করান, সৎপথে পাঁচজন মানুষও যথেষ্ট হতে পারে।

সভায় অংশগ্রহণকারীরা

সভায় এনসিপির চাঁদপুর জেলার প্রধান সমন্বয়কারী মো. মাহবুব আলমের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক নাভিদ নওরোজ শাহ্, যুগ্ম মুখ্য সংগঠক মো. আতাউল্লাহ, মো. আরিফ তালুকদার, যুগ্ম সদস্য সচিব মো. মিরাজ মিয়া এবং কেন্দ্রীয় সদস্য মো. সাইফুল ইসলাম।

দলের চাঁদপুর জেলার আট উপজেলার বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা–কর্মীরা সভায় অংশগ্রহণ করেন। সভার মূল আলোচ্য বিষয় ছিল স্থানীয় চাঁদাবাজি, রাজনৈতিক জোট এবং নির্বাচনের প্রস্তুতি।

হাসনাত আবদুল্লাহ স্থানীয় চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছেন। তিনি বলেন, “রিকশাওয়ালাদের প্রশ্ন করলে দেখা যাবে, তারা কতটা বিরক্ত। ৫০ টাকা আয় করলে ৫ টাকা চাঁদা দিতে হয়। যারা এই বাণিজ্য কায়েম করেছে, তাদের সঙ্গে জোট করা মানে নৈতিকভাবে দোষারোপ করা।”

এছাড়া তিনি হাইব্রিড নেতাদের চরম সমালোচনা করেন এবং বলেন, “নেতারা যারা মূল আদর্শের প্রতি বিশ্বাস রাখে, তারা আমাদের সঙ্গে যুক্ত হতে আগ্রহী। আমরা তাদের সংহত করব।”

রাজনৈতিক বিশ্লেষণ

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, এনসিপির এই শক্ত অবস্থান স্থানীয় রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারে। দলের নেতারা চাঁদাবাজি এবং নৈতিক দুর্বলতার বিরুদ্ধে স্পষ্ট অবস্থান গ্রহণ করছে, যা ভোটারদের মধ্যে ইতিবাচক বার্তা পৌঁছে দেবে।

বিশ্লেষকদের মতে, স্থানীয় রাজনীতিতে এই ধরনের দৃঢ় অবস্থান নবগঠিত রাজনৈতিক শক্তিকে শক্তিশালী করবে এবং দলের ভেতরের ঐক্য দৃঢ় করতে সহায়ক হবে।

হাসনাত আবদুল্লাহর মন্তব্য স্পষ্টভাবে দেখাচ্ছে, স্থানীয় চাঁদাবাজি ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে দল দৃঢ় অবস্থান নিচ্ছে। নির্বাচনের আগে এই ধরনের মন্তব্য রাজনৈতিক পরিবেশকে প্রভাবিত করবে। এনসিপি আশা করছে, যারা নৈতিকভাবে বিক্রি হননি, তারা তাদের সঙ্গে যুক্ত হবেন এবং দেশের রাজনীতিতে নতুন মানদণ্ড স্থাপন হবে।

এম আর এম – ২১৮০,Signalbd.com

মন্তব্য করুন
Advertisement

Related Articles

Back to top button