শিক্ষা

১১তম গ্রেডের আশ্বাসে প্রাথমিক শিক্ষকদের আন্দোলন প্রত্যাহার

Advertisement

বেতন কাঠামোর পরিবর্তনের আশ্বাসে সরকার ও শিক্ষক নেতাদের বৈঠকের পর কর্মসূচি স্থগিত

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা ১১তম গ্রেড বাস্তবায়নের আশ্বাসে চলমান আন্দোলন প্রত্যাহার করেছেন। সোমবার (১০ নভেম্বর) শিক্ষকদের প্রাথমিক শিক্ষক দাবী বাস্তবায়ন পরিষদ এবং প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক সংগঠন ঐক্য পরিষদের নেতৃবৃন্দ অর্থ বিভাগ ও প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকের পর এ সিদ্ধান্ত নেন।

বৈঠকে শিক্ষক নেতাদের দাবী ও সরকারের প্রাথমিক প্রতিশ্রুতির আলোকে আন্দোলন স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। শিক্ষক নেতৃবৃন্দ জানান, দীর্ঘ সময় ধরে চলা আন্দোলনের পর সরকারি পক্ষের আশ্বাসে তারা এখন শান্তি বজায় রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

বৈঠকের বিস্তারিত

বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন অর্থ বিভাগের সচিব ড. মো. খায়েরুজ্জামান মজুমদার। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব আবু তাহের মোঃ মাসুদ রানাসহ উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। শিক্ষক নেতৃবৃন্দ তাদের তিন দফা দাবী আলোচনা করেন, যা মূলত সহকারী শিক্ষকদের পদোন্নতি, বেতন কাঠামো এবং উচ্চতর গ্রেডের স্থায়ী সমাধান সম্পর্কিত।

শিক্ষক নেতাদের বক্তব্য অনুযায়ী, প্রাথমিক সহকারী শিক্ষকরা দীর্ঘদিন ধরে দশম গ্রেডে বেতন প্রদানের দাবি জানিয়ে আসছিলেন। যদিও মূল দাবি দশম গ্রেডের ছিল, সরকারের পক্ষ থেকে ১১তম গ্রেড বাস্তবায়নের আশ্বাস পাওয়ায় শিক্ষকরা আন্দোলন স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

সরকারি প্রাথমিক শিক্ষকদের আন্দোলন দীর্ঘদিন ধরে চলছিল। শিক্ষকেরা তাদের বেতন কাঠামো ও পদোন্নতির ক্ষেত্রে অন্যান্য সরকারি কর্মচারীদের সাথে সমান সুবিধা পেতে চাইছিলেন। পূর্বে সহকারী শিক্ষকদের আন্দোলনে বিভিন্ন বিদ্যালয় ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ক্লাস বন্ধ ও কর্মবিরতি দেখা গিয়েছিল।

শিক্ষক নেতারা অভিযোগ করেছিলেন যে, দীর্ঘদিন ধরে বেতন কাঠামোর উন্নয়ন ও পদোন্নতির ক্ষেত্রে দেরি হওয়ায় শিক্ষকেরা ন্যায্য সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। আন্দোলনের ফলে সরকারের নীতিনির্ধারকরা তাদের দাবি গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করতে বাধ্য হন।

প্রভাব ও প্রতিক্রিয়া

অভ্যন্তরীণ পর্যবেক্ষকরা বলছেন, সহকারী শিক্ষকদের আন্দোলন স্থগিত হওয়ায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলিতে শিক্ষার স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরতে শুরু করেছে। পাশাপাশি, শিক্ষক সমাজের মধ্যে ইতিবাচক মনোভাব তৈরি হয়েছে, কারণ সরকার তাদের দাবি বাস্তবায়নের আশ্বাস প্রদান করেছে।

অন্যদিকে, কিছু বিশ্লেষক মনে করেন যে, শিক্ষকদের আন্দোলন স্থগিত হওয়া মানে সব সমস্যা সমাধান হয়েছে এমন নয়। বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া নিরীক্ষণ ও নিয়মিত তদারকি না হলে ভবিষ্যতে আবারও আন্দোলন দেখা দিতে পারে।

বিশেষজ্ঞ মতামত

শিক্ষা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সরকার যদি যথাযথ সময়সীমার মধ্যে ১১তম গ্রেড বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে পারে, তাহলে প্রাথমিক শিক্ষা খাতের কর্মসংস্থানের মানোন্নয়ন হবে। এক শিক্ষাবিদ বলেন, “শিক্ষকদের স্থায়ী পদোন্নতি এবং বেতন কাঠামোর উন্নয়ন শিক্ষার মান বৃদ্ধির জন্য অত্যন্ত জরুরি। সরকারি আশ্বাস যথাযথ বাস্তবায়ন হলে এটি শিক্ষার পরিবেশেও ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।”

১১তম গ্রেড বাস্তবায়নের আশ্বাসে প্রাথমিক শিক্ষকদের আন্দোলন প্রত্যাহার করা হলেও, এটি কেবল একটি প্রথম ধাপ। সরকারি প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত শিক্ষক সমাজের মধ্যে সতর্ক অবস্থান থাকবে। বিশ্লেষকদের মতে, আগামী কয়েক মাসে বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ার গতিবিধি লক্ষ্য করা শিক্ষকদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হবে।

শিক্ষকরা আশা করছেন, সরকার তাদের আশ্বাসে স্থির থাকবে এবং বেতন ও পদোন্নতি সংক্রান্ত দাবী যথাযথ সময়ে সমাধান করা হবে। যদি তা সম্ভব হয়, প্রাথমিক শিক্ষা খাতের কর্মসংস্কৃতি এবং শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার পরিবেশ আরও উন্নত হবে।

এম আর এম – ২১৭৩,Signalbd.com

মন্তব্য করুন
Advertisement

Related Articles

Back to top button