সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের জন্য ২০২৬ সালের সরকারি ছুটির তালিকা প্রকাশ করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। রোববার (৯ নভেম্বর) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। নতুন বছরের সরকারি ছুটির হিসাব অনুযায়ী, সাধারণ ছুটি ১৪ দিন এবং নির্বাহী আদেশে ছুটি আরও ১৪ দিন ধার্য করা হয়েছে।
এই প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে সরকারের লক্ষ্য হলো সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত এবং অর্ধ-স্বায়ত্তশাসিত সকল অফিসে ছুটির কার্যক্রমকে নিয়মিত ও সুশৃঙ্খলভাবে পালন নিশ্চিত করা।
সাধারণ ছুটি ও নির্বাহী আদেশে ছুটি
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ২০২৬ সালের জন্য সাধারণ ছুটি ১৪ দিন এবং নির্বাহী আদেশে ছুটি ১৪ দিন ধার্য করা হয়েছে। সাধারণ ছুটির মধ্যে সরকারি ছুটি যেমন শোক দিবস, জাতীয় দিবস এবং বিশেষ অনুষ্ঠানাদি অন্তর্ভুক্ত।
নির্বাহী আদেশের ছুটি হলো বিশেষভাবে সরকারের উচ্চ পর্যায়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী দেওয়া ছুটি। এটি সাধারণ ছুটির পাশাপাশি সরকারি অফিসগুলোতে প্রয়োগ করা হবে।
ধর্মীয় ও ঐচ্ছিক ছুটি
২০২৬ সালের জন্য ধর্মীয় ও ঐচ্ছিক ছুটির ধরনও নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রজ্ঞাপনের বিবরণ অনুযায়ী:
- মুসলিম ধর্মীয় পর্ব: মোট ৫ দিন
- হিন্দু ধর্মীয় পর্ব: মোট ৯ দিন
- খ্রিস্টান ধর্মীয় পর্ব: মোট ৮ দিন
- বৌদ্ধ ধর্মীয় পর্ব: মোট ৭ দিন
- ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর কর্মচারীদের জন্য: মোট ২ দিন
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে যে, একজন কর্মচারী তাঁর নিজ ধর্ম অনুযায়ী বছরে সর্বোচ্চ তিন (৩) দিনের ঐচ্ছিক ছুটি গ্রহণ করতে পারবেন। এই ছুটি গ্রহণের জন্য বছরে শুরুতেই সংশ্লিষ্ট অফিস/সংস্থার অনুমোদন নেওয়া বাধ্যতামূলক। সাধারণ ছুটি, নির্বাহী আদেশের ছুটি এবং সাপ্তাহিক ছুটির সঙ্গে এই ঐচ্ছিক ছুটি মিলিয়ে নেওয়া যেতে পারে।
যেসব অফিসের সময়সূচি ও ছুটি নিজস্ব আইন-কানুন দ্বারা নিয়ন্ত্রিত, অথবা যেসব অফিস সরকারের অত্যাবশ্যক হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে, সেক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান নিজস্ব নিয়ম অনুযায়ী জনস্বার্থ বিবেচনা করে ছুটি ঘোষণা করবে।
সরকারি ও আধা-সরকারি অফিসের ছুটির গুরুত্ব
সরকারি অফিস ও আধা-সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোতে ছুটির সঠিক ব্যবস্থাপনা সরকারের কর্মকাণ্ডকে সুষ্ঠুভাবে পরিচালিত করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ। ছুটি পূর্বনির্ধারিত থাকলে অফিসের কাজের পরিকল্পনা ও জনগণের সেবা প্রদানেও সুবিধা হয়।
২০২৬ সালে সাধারণ ও নির্বাহী আদেশের ছুটি মিলিয়ে মোট ২৮ দিন ছুটি পাওয়া যাবে। এর মধ্যে ৯ দিন পড়বে সাপ্তাহিক ছুটি (শুক্রবার ও শনিবার)।
ছুটির তালিকা অনুমোদন প্রক্রিয়া
আগেই, ৬ নভেম্বর ২০২৫ সালে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ আগামী বছরের সরকারি ছুটির তালিকা অনুমোদন দিয়েছিল। এরপর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় আনুষ্ঠানিক প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।
সরকারি প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে ছুটি কার্যকর করার প্রক্রিয়াটি সুনির্দিষ্ট। এটি শুধুমাত্র অফিস কর্মচারীর জন্য নয়, সরকারি ও আধা-সরকারি সংস্থা, সংবিধিবদ্ধ, স্বায়ত্তশাসিত এবং অর্ধ-স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীদের জন্যও প্রযোজ্য।
বিশেষ নির্দেশাবলী ও শর্ত
প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে, সরকার প্রয়োজন অনুযায়ী ছুটি বৃদ্ধি বা হ্রাস করার ক্ষমতা রাখে। এছাড়াও, নির্দিষ্ট অফিস ও সংস্থা তাদের নিজস্ব আইন-কানুন অনুযায়ী ছুটি ঘোষণা করতে পারবে, বিশেষ করে যেখানে জনস্বার্থে অফিস খোলা রাখা অত্যাবশ্যক।
অন্যদিকে, কর্মচারীদের জন্য তাদের নিজ ধর্ম অনুযায়ী নির্ধারিত তিন দিনের ঐচ্ছিক ছুটি গ্রহণ করা বাধ্যতামূলক। এটি সরকারি অফিসের ছুটি ও সাপ্তাহিক ছুটির সঙ্গে মিলিয়ে নেওয়া যেতে পারে।
সামগ্রিক ছুটি সংখ্যা ও পরিকল্পনা
২০২৬ সালের জন্য সরকারি ছুটি ও ঐচ্ছিক ছুটি মিলিয়ে মোট ছুটি সংখ্যা হবে ২৮ দিন। এ সংখ্যা মধ্যে ৯ দিন সাপ্তাহিক ছুটি হিসেবে বিবেচিত।
এছাড়াও, ধর্মীয় ও ঐচ্ছিক ছুটির পরিকল্পনার মাধ্যমে বাংলাদেশে বিভিন্ন ধর্মীয় সম্প্রদায়ের কর্মচারীদের জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করা হয়েছে।
সাংবাদিক ও সাধারণ নাগরিকদের জন্য তথ্য
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সরকারি ছুটি সংক্রান্ত তথ্য সকলকে সহজে উপলব্ধ করার জন্য প্রজ্ঞাপনসহ PDF আকারে প্রকাশ করেছে। যে কোনো সরকারি, আধা-সরকারি বা স্বায়ত্তশাসিত অফিস এই তথ্য ব্যবহার করে তাদের ছুটির পরিকল্পনা করতে পারবে।
২০২৬ সালের ছুটির তালিকা ডাউনলোড ও অনুসরণ
সরকারি কর্মকর্তারা এই তালিকা ডাউনলোড করে ব্যক্তিগত বা অফিসের কাজের পরিকল্পনা সহজে করতে পারবেন।
ডাউনলোড লিঙ্ক: [২০২৬ সালে সাধারণ ও নির্বাহী আদেশে ছুটি ১৪ দিন.pdf]
অন্যান্য সংবাদ ও প্রাসঙ্গিক তথ্য
- বাংলাদেশ ব্যাংকে খণ্ডকালীন চাকরি, বেতন ৮০,০০০ টাকা
- সহকারী শিক্ষকদের বেতন গ্রেড ১১ করার প্রস্তাব
এই ধরনের আপডেট সরকারি চাকরি, ছুটি ও কর্মসংস্থান সম্পর্কিত তথ্যের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট।
MAH – 13726 I Signalbd.com



