বাংলাদেশ

৯২৫ কোটি টাকায় ১.৭ লাখ টন সার আমদানি করবে সরকার

Advertisement

সরকার কৃষি খাতের উৎপাদন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে এক লাখ ৭০ হাজার মেট্রিক টন সার আমদানি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই আমদানিতে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৯২৫ কোটি ৯ লাখ টাকা, যা দেশের কৃষি উৎপাদন ও খাদ্য নিরাপত্তায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

রোববার অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির ৪৪তম বৈঠকে এই প্রস্তাবের অনুমোদন দেওয়া হয়। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন শিল্প ও কৃষি মন্ত্রণালয়ের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, সরকারের পরিকল্পনা অনুযায়ী ৬০ হাজার টন টিএসপি (ট্রিপল সুপার ফসফেট) এবং ১ লাখ ১০ হাজার টন ইউরিয়া সার আমদানি করা হবে। এসব সার দেশের কৃষকদের চাহিদা মেটাতে সরবরাহ করা হবে।

সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে ইউরিয়া সার আমদানি

শিল্প মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবের ভিত্তিতে, সংযুক্ত আরব আমিরাতের ফার্টিগ্লোব ডিস্ট্রিবিউশন লিমিটেড থেকে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য দ্বিতীয় লটের ৪০ হাজার টন বাল্ক গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার আমদানির অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এই লটের মোট খরচ ধরা হয়েছে ১৯৫ কোটি ৪৩ লাখ ৩৬ হাজার ৩২০ টাকা, যা প্রতি টন হিসেব করলে ৩৯৯.১৭ মার্কিন ডলার হবে।

এই আমদানির মাধ্যমে দেশের কৃষকদের ইউরিয়া সার সহজলভ্য হবে এবং ধানের উৎপাদন ও সবজি চাষে সহায়তা করবে।

সৌদি আরব থেকে ইউরিয়া সার আমদানি

সৌদি আরবের সাবিক কৃষি-পুষ্টি কোম্পানি থেকে ২০২৫-২৬ অর্থবছরে ৭ম লটের ৪০ হাজার টন বাল্ক গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এই লটের খরচ দাঁড়িয়েছে ১৯০ কোটি ৯৪ লাখ ৪০ হাজার টাকা, প্রতি টনের দাম ৩৯০ মার্কিন ডলার

সৌদি আরব থেকে আমদানি করা এই সার দেশের বাজারে সরবরাহ নিশ্চিত করবে এবং মৌসুমী চাষিদের উৎপাদন বাড়াতে সহায়ক হবে।

কাফকো থেকে ইউরিয়া সার আমদানি

দেশের অভ্যন্তরীণ উৎপাদনকে শক্তিশালী করতে কর্ণফুলী ফার্টিলাইজার কোম্পানি লিমিটেড (কাফকো) থেকে ৮ম লটের ৩০ হাজার টন ব্যাগড গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার ক্রয়ের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। লটের মোট ব্যয় হবে ১৩৯ কোটি ৬৯ লাখ ৩৯ হাজার ৫০০ টাকা, যা প্রতি টন ৩৭৯.৫০ মার্কিন ডলার

কাফকো থেকে সরাসরি আমদানির মাধ্যমে সার সরবরাহে সময়মতো বণ্টন সম্ভব হবে এবং কৃষি চাহিদা পূরণ হবে।

মরক্কো থেকে টিএসপি সার আমদানি

কৃষি মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে মরক্কোর ওসিপি নিউট্রিক্রপস এবং বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি) এর মধ্যে স্বাক্ষরিত চুক্তির আওতায় ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য ১১ম লটের ৩০ হাজার টন টিএসপি সার আমদানির অনুমোদন দেয়া হয়েছে। লটের খরচ হবে ১৯৯ কোটি ৫১ লাখ ২ হাজার টাকা, যা প্রতি টন ৫৪২ মার্কিন ডলার

এই টিএসপি সার দেশের মাটির উর্বরতা বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে এবং সবজি ও ধান চাষে উৎপাদন বৃদ্ধি করবে।

সদৃশভাবে, ১২ম লটের ৩০ হাজার টন টিএসপি সার আমদানিও একই মূল্যে অনুমোদিত হয়েছে।

সরকারের পরিকল্পনার প্রভাব

এই পদক্ষেপ দেশের কৃষি খাতের জন্য এক বিশাল সহায়তা হিসেবে ধরা হচ্ছে। সরকারের লক্ষ্য হলো:

  1. দেশীয় উৎপাদন বৃদ্ধি করা।
  2. কৃষকদের সার সরবরাহ নিশ্চিত করা।
  3. খাদ্য নিরাপত্তা ও উৎপাদন খরচ নিয়ন্ত্রণ করা।
  4. বিশ্ববাজারে সার আমদানি সংক্রান্ত ব্যয় সাশ্রয় করা।

সরকার মনে করছে, এই আমদানির ফলে কৃষি চাষীরা পর্যাপ্ত সার পাবে, যা ধানের ফলন বৃদ্ধি ও সবজি উৎপাদনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।

MAH – 13710 I Signalbd.com

মন্তব্য করুন
Advertisement

Related Articles

Back to top button