যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা করেছেন, গাজায় দ্রুতই আন্তর্জাতিক বাহিনী পাঠানো হবে। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা বৃহস্পতিবার এই খবর প্রকাশ করেছে। ট্রাম্প বলেন, “খুব শিগগিরই গাজায় আন্তর্জাতিক বাহিনী পৌঁছাবে। হামাস যদি সমস্যার সৃষ্টি করে, তবে খুব শক্তিশালী দেশের একটি জোট হস্তক্ষেপ করবে।”
ট্রাম্প আরও উল্লেখ করেন, ইসরায়েলের কিছু বিরতি লঙ্ঘনের ঘটনা থাকলেও গাজায় শান্তি এবং বিরতি কার্যকর হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র আঞ্চলিক দেশ ও মিত্রদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছে এবং পরিস্থিতি স্থিতিশীল রাখার চেষ্টা করছে।
আন্তর্জাতিক বাহিনীর পরিকল্পনা
যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন এই আন্তর্জাতিক বাহিনী গাজায় শান্তি ও স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনার উদ্দেশ্যে পাঠানো হচ্ছে। পরিকল্পনা অনুযায়ী, বাহিনীর সদস্যরা ফিলিস্তিনি উপত্যকায় প্রবেশ করে সেখানকার নিরাপত্তা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ এবং হামাসসহ অন্যান্য সশস্ত্র গোষ্ঠীর কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করবেন।
জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ গাজায় দুই বছরের জন্য অন্তর্বর্তী সরকার এবং স্থিতিশীল বাহিনী গঠনের বিষয়ে আলোচনা শুরু করেছে। ট্রাম্প আশা প্রকাশ করেছেন, এই বাহিনী উপস্থিত থাকলে মধ্যপ্রাচ্য অঞ্চলে শান্তি ও স্থিতিশীলতা দ্রুত ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে।
গাজা উপত্যকা দীর্ঘদিন ধরে রাজনৈতিক অস্থিরতা ও সংঘর্ষের শিকার। ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে নিয়মিত সংঘর্ষ, রকেট হামলা এবং সশস্ত্র প্রতিক্রিয়ার কারণে সাধারণ মানুষ সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় দীর্ঘদিন ধরে এই অঞ্চল শান্তির জন্য পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানাচ্ছে।
গাজায় আন্তর্জাতিক বাহিনী পাঠানোর সিদ্ধান্তের পেছনে যুক্তরাষ্ট্র এবং আঞ্চলিক দেশগুলোর সমন্বয় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। ট্রাম্প জানান, যুক্তরাষ্ট্র মধ্যপ্রাচ্য ও মধ্য এশিয়ার দেশগুলোর সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছে এবং সিরিয়ার সঙ্গে অগ্রগতির বিষয়েও সমন্বয় তৈরি হচ্ছে।
প্রভাব ও প্রতিক্রিয়া
বিশ্লেষকরা বলছেন, আন্তর্জাতিক বাহিনী গাজায় পৌঁছালে যুদ্ধবিরতি বজায় রাখা এবং সাধারণ নাগরিকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করা সহজতর হবে। তবে হামাসের প্রতিক্রিয়া এবং স্থানীয় রাজনৈতিক পরিস্থিতি গুরুত্বপূর্ণ। ট্রাম্প ইতিমধ্যেই হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, হামাস যদি এ নিয়ে সমস্যার সৃষ্টি করে, শক্তিশালী জোট হস্তক্ষেপ করবে।
জাতিসংঘের বিভিন্ন পর্যবেক্ষক এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছেন। তাদের মতে, আন্তর্জাতিক বাহিনী গাজায় স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে এবং মানবিক সহায়তা কার্যক্রমকে কার্যকরভাবে পরিচালনা করতে সহায়ক হবে।
বিশ্লেষণ ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
মধ্যপ্রাচ্য বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, আন্তর্জাতিক বাহিনী গাজায় গেলে স্থানীয় সশস্ত্র গোষ্ঠীর কার্যক্রম মনিটর করা সহজ হবে। এটি ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘর্ষ কমাতে এবং সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা স্বাভাবিক করতে সহায়ক হবে।
ট্রাম্প আশা প্রকাশ করেছেন, এই পদক্ষেপের মাধ্যমে গাজা অঞ্চলে ধীরে ধীরে শান্তি এবং স্থিতিশীলতা ফিরে আসবে। তিনি বলেন, “আমরা চাই এই অঞ্চলটি ধীরে ধীরে শান্তির দিকে অগ্রসর হোক এবং সাধারণ মানুষ নিরাপদে জীবন যাপন করতে পারে।”
গাজায় আন্তর্জাতিক বাহিনী পাঠানোর ঘোষণা মধ্যপ্রাচ্য শান্তি প্রক্রিয়ায় একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। ট্রাম্পের এই ঘোষণা এবং জাতিসংঘের উদ্যোগ মিলিতভাবে ফিলিস্তিনি অঞ্চলে নিরাপত্তা এবং স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনার সম্ভাবনা বৃদ্ধি করবে। তবে সফলতা নির্ভর করছে স্থানীয় রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং সশস্ত্র গোষ্ঠীর প্রতিক্রিয়ার ওপর।
এম আর এম – ২১৪৫,Signalbd.com



