বিশ্ব

এয়ার ফোর্স ওয়ান বিমান ঘাঁটিতে রহস্যময় প্যাকেট, খুলতেই অজ্ঞান সাত কর্মী

Advertisement

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটনের কাছে মেরিল্যান্ড প্রিন্স জর্জেস কাউন্টিতে অবস্থিত জয়েন্ট বেস অ্যান্ড্রুজ বিমান ঘাঁটিতে রহস্যময় এক প্যাকেট খোলার পর সাতজন কর্মী অজ্ঞান হয়ে পড়েছেন। প্যাকেটটি ছিল সাদা পাউডারযুক্ত এবং তা খোলার সঙ্গে সঙ্গে অবস্থা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। আহতদের স্থানীয় হাসপাতাল ম্যালকম গ্রোভ মেডিক্যাল সেন্টারে ভর্তি করা হয়েছে।

ঘটনার সময়ে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বিমান ঘাঁটিতে উপস্থিত ছিলেন না। তবে কিভাবে এই সন্দেহজনক প্যাকেট নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে প্রবেশ করতে পারলো, তা নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে।

প্যাকেটের সাদা পাউডার এবং প্রাথমিক প্রতিক্রিয়া

বিমান ঘাঁটির কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে জানা গেছে, প্যাকেটটি খোলার পর তৎক্ষণাৎ সাতজন কর্মী অজ্ঞান হয়ে পড়েন। প্রাথমিক ফিল্ড টেস্টে কোনও বিপজ্জনক রাসায়নিক পদার্থ শনাক্ত হয়নি। তবে নিরাপত্তার কারণে বিমান ঘাঁটির ওই ভবন ও সংলগ্ন কিছু এলাকা খালি করে দেওয়া হয় এবং বিশেষ বাহিনী মোতায়েন করা হয়।

প্যাকেটটি পরে হ্যাজার্ডাস ম্যাটেরিয়ালস টিমের হাতে হস্তান্তর করা হয়। প্রাথমিক রিপোর্ট অনুযায়ী, এতে কোনও তেজস্ক্রিয় বা বিষাক্ত পদার্থের উপস্থিতি ধরা পড়েনি। তবে তদন্ত এখনও চলছে।

বিমান ঘাঁটির নিরাপত্তা এবং প্রতিক্রিয়া

জয়েন্ট বেস অ্যান্ড্রুজ বিমান ঘাঁটি এয়ার ফোর্স ওয়ান-এর মূল ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত। এখানে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বিমান ব্যবহার করেন এবং উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তারা বিদেশ সফরে গেলে এই ঘাঁটির সুবিধা নেন। নিরাপত্তার স্বাভাবিক ব্যবস্থা থাকলেও এমন ঘটনা ঘটায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের মধ্যে সতর্কতা বৃদ্ধি পেয়েছে।

বিমান ঘাঁটির একজন কর্মকর্তা বলেন, “প্রাথমিকভাবে ক্ষতিকর পদার্থ পাওয়া যায়নি, তবে চূড়ান্ত রিপোর্ট হাতে এলে পুরো ঘটনার রহস্য উদঘাটন হবে।”

আহতদের অবস্থা এবং চিকিৎসা

সাতজন কর্মীকে অবিলম্বে ম্যালকম গ্রোভ মেডিক্যাল সেন্টারে নেওয়া হয়। হাসপাতালের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, তাদের মধ্যে কেউই গুরুতর অবস্থায় নেই। চিকিৎসকরা তাদের পর্যবেক্ষণে রেখেছেন এবং ধীরে ধীরে সুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

ঘটনার পর বিমান ঘাঁটিতে সাধারণ কর্মপরিবেশ কিছু সময়ের জন্য স্থগিত রাখা হয়। শুধুমাত্র অনুমোদিত কর্মীদের প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয় এবং ভবনটি স্যানিটাইজ করা হয়।

তদন্ত এবং বিশেষজ্ঞের মতামত

ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্রের অফিস অব স্পেশাল ইনভেস্টিগেশন (ওএসআই)। প্রাথমিকভাবে হ্যাজার্ডাস ম্যাটেরিয়ালস টিম প্যাকেট পরীক্ষা করেছে। তবে চূড়ান্ত রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত প্যাকেটের প্রকৃত উৎস ও উদ্দেশ্য নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এমন ধরনের ঘটনা সামরিক ঘাঁটিতে বিরল হলেও, সঠিক প্রোটোকল না মানলে গুরুতর বিপদ ডেকে আনা সম্ভব। ভবিষ্যতে নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে আরও কঠোর করার প্রস্তাব দেওয়া হচ্ছে।

ঘটনা থেকে পাওয়া শিক্ষা

এই ঘটনার মাধ্যমে বোঝা যাচ্ছে, সবচেয়ে উচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকা সত্ত্বেও অনাকাঙ্ক্ষিত বিপদ এড়ানো সবসময় সম্ভব নয়। বিমান ঘাঁটির কর্মকর্তারা ইতিমধ্যে নিরাপত্তা প্রোটোকল পুনর্মূল্যায়ন শুরু করেছেন এবং ভবিষ্যতে এরকম ঘটনায় দ্রুত প্রতিক্রিয়া দেখানোর জন্য প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।

এয়ার ফোর্স ওয়ান বিমান ঘাঁটিতে রহস্যময় প্যাকেটের ঘটনা তাত্ক্ষণিকভাবে সাতজন কর্মীর অসুস্থতার কারণ হয়েছে। প্রাথমিক পর্যায়ে কোনও বিপজ্জনক পদার্থ পাওয়া যায়নি। তবে তদন্ত চলমান এবং পুরো ঘটনার রহস্য উদঘাটনের অপেক্ষা রয়েছে। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, সামরিক ঘাঁটিতে এমন ঘটনাকে প্রতিরোধ করতে নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে আরও জোরদার করা প্রয়োজন।

এম আর এম – ২১৪৩,Signalbd.com

মন্তব্য করুন
Advertisement

Related Articles

Back to top button