বাংলাদেশ

বিএনপি প্রার্থীকে গুলি: সতর্ক থাকার আহ্বান জামায়াত আমিরের

Advertisement

চট্টগ্রাম-৮ আসনে গণসংযোগের সময় বিএনপি প্রার্থী এরশাদ উল্লাহসহ তিনজনকে গুলিবিদ্ধ করা হয়। জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমান সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।

ঘটনার বিস্তারিত

বুধবার (৫ নভেম্বর) বিকেলে চট্টগ্রাম-৮ আসনের পাঁচলাইশের হামজারবাগ এলাকায় গণসংযোগের সময় বিএনপি মনোনীত প্রার্থী ও চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ উল্লাহকে গুলি করা হয়। এসময় আরও দুইজন গুরুতর আহত হয়েছেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, নির্বাচনী প্রচারণার জন্য নেতা ও তার অনুসারীরা স্থানীয় একটি দোকান এলাকায় জড়ো ছিলেন। দোকান থেকে বের হওয়ার সময় দুর্বৃত্তরা কাছ থেকে গুলি চালায়। ভিডিও ফুটেজে দেখা যায় সাত রাউন্ডের গুলির শব্দ শোনা যায় এবং নেতাকর্মীরা আতঙ্কে ছড়িয়ে পড়ে। এরশাদ উল্লাহকে পরে লুটিয়ে পড়া অবস্থায় দেখা যায়।

চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন (উত্তর) পুলিশ কমিশনার আমিরুল ইসলাম জানান, “বিকেলে নির্বাচনী প্রচারণার সময় গোলাগুলি শুরু হয়। এরশাদ উল্লাহসহ তিনজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। একজনকে হাসপাতালে নেওয়ার পর মারা গেছেন। এরশাদ উল্লাহর বুকে গুলি লেগে পাশ দিয়ে গেছে, তিনি বর্তমানে আশঙ্কামুক্ত।”

জামায়াত আমিরের প্রতিক্রিয়া

জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমান নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে ঘটনার নিন্দা জানিয়েছেন। তিনি লিখেছেন, “আজ চট্টগ্রামে রাজনৈতিক দলের এক নেতা ও তার সহকর্মীদের ওপর সন্ত্রাসীরা হামলা চালিয়েছে। একজন নিহত হয়েছেন এবং আরও কয়েকজন আহত হয়েছেন। এটি একান্তই নিন্দনীয়। ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত এবং দোষীদের আইনের আওতায় আনা জরুরি।”

তিনি আরও বলেন, “অতীতের মতো এ ধরনের দুঃখজনক ঘটনা নিয়ে কেউ যেন ফাউল গেম খেলতে না পারে, সে বিষয়ে সতর্ক থাকা দরকার। ফাউল গেমের সুযোগ নিয়ে সন্ত্রাসীরা আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠে, যা কারোর জন্যই কল্যাণকর নয়।”

চট্টগ্রাম-৮ আসন রাজনৈতিকভাবে গুরুত্বপুর্ণ এলাকা। নির্বাচনী সময়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করে। এরশাদ উল্লাহ তার মনোনয়নপত্র প্রাপ্তির পর থেকে বিভিন্ন এলাকায় গণসংযোগ চালাচ্ছিলেন।

গত কয়েক বছরে এই অঞ্চলে নির্বাচনী প্রচারণার সময় সহিংসতার কিছু ঘটনার নজির রয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রাজনৈতিক উত্তেজনা এবং পূর্ব প্রস্তুতির অভাব এ ধরনের ঘটনা আরও বাড়াতে পারে।

প্রভাব ও প্রতিক্রিয়া

গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনা এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে। স্থানীয় ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষ অনিরাপত্তা অনুভব করছেন। রাজনৈতিক দলগুলো এ ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।

বিএনপি কেন্দ্রীয় নেতারা জানিয়েছেন, “নির্বাচনী প্রচারণার সময় এমন সহিংসতা নির্বাচনী পরিবেশকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। সরকার ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে।”

সাংবাদিক ও নিরাপত্তা বাহিনীর পর্যবেক্ষণ

স্থানীয় পুলিশ ও সাংবাদিকরা ঘটনার সঠিক তথ্য সংগ্রহে কাজ করছেন। চট্টগ্রাম বায়েজিদ থানা পুলিশ বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। আহতদের দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে এবং চিকিৎসা চলছে।

পুলিশ জানিয়েছে, তদন্তের মাধ্যমে দ্রুত দোষীদের সনাক্ত করা হবে। স্থানীয় নিরাপত্তা বৃদ্ধি ও নির্বাচনী এলাকায় অতিরিক্ত পাহারা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

বিশ্লেষণ ও বিশেষজ্ঞ মতামত

রাজনীতিবিদ ও নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নির্বাচনী এলাকায় রাজনৈতিক সহিংসতার ঘটনা সমাধানের জন্য কেন্দ্রীয় পর্যায়ে কঠোর নজরদারি প্রয়োজন। তারা আরও উল্লেখ করেছেন, রাজনৈতিক দলের অভ্যন্তরীণ সমন্বয় ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা ছাড়া সাধারণ মানুষ এবং প্রার্থীরা নিরাপদে গণসংযোগ করতে পারবে না।

বিশ্লেষকরা সতর্ক করেছেন, এ ধরনের সহিংসতা রাজনৈতিক উত্তেজনা বাড়াতে পারে এবং নির্বাচনের স্বাভাবিক পরিবেশকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।

চট্টগ্রাম-৮ আসনে বিএনপি প্রার্থীকে লক্ষ্য করে সংঘটিত গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনা রাজনৈতিক পরিবেশকে উত্তেজনাপূর্ণ করেছে। আহতদের দ্রুত চিকিৎসা এবং দোষীদের আইনের আওতায় আনা জরুরি। রাজনৈতিক দলগুলো এবং নিরাপত্তা বাহিনীকে সতর্ক থেকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।

এম আর এম – ২১০৭,Signalbd.com

মন্তব্য করুন
Advertisement

Related Articles

Back to top button