বানিজ্য

২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম কমে দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ৭ হাজার ৯৫৭ টাকায়

Advertisement

বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস) দেশের বাজারে আবারও স্বর্ণের দাম কমিয়েছে। নতুন হিসাব অনুযায়ী ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম কমে দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ৭ হাজার ৯৫৭ টাকায়। এই দাম সোমবার (২৭ অক্টোবর) থেকে কার্যকর হবে।

বাজুসের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, স্থানীয় বাজারে তেজাবি স্বর্ণের (পিওর গোল্ড) মূল্য হ্রাস পাওয়ায় এই নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে।

নতুন দাম ও ভ্যাটসহ হিসাব

নতুন সমন্বয় অনুযায়ী, দেশের বাজারে প্রতি ভরি (১১.৬৬৪ গ্রাম) স্বর্ণের দাম নিম্নরূপ:

  • ২২ ক্যারেট: ২ লাখ ৭ হাজার ৯৫৭ টাকা
  • ২১ ক্যারেট: ১ লাখ ৯৮ হাজার ৪৯৮ টাকা
  • ১৮ ক্যারেট: ১ লাখ ৭০ হাজার ১৪৩ টাকা
  • সনাতন পদ্ধতি: ১ লাখ ৪১ হাজার ৪৯৬ টাকা

বিজ্ঞপ্তিতে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, স্বর্ণের বিক্রয়মূল্যের সঙ্গে সরকার নির্ধারিত ৫% ভ্যাট এবং বাজুস-নির্ধারিত ন্যূনতম মজুরি ৬% যুক্ত করতে হবে। তবে গহনার ডিজাইন এবং মানভেদে মজুরির তারতম্য হতে পারে।

দেশের বাজারে রুপার দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। ২২ ক্যারেটের এক ভরি রুপা বিক্রি হচ্ছে ৫ হাজার ৪৭০ টাকায়, ২১ ক্যারেট রুপা ৫ হাজার ২১৪ টাকা, ১৮ ক্যারেট রুপা ৪ হাজার ৪৬৭ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি রুপা ৩ হাজার ৩৫৯ টাকায়।

স্বর্ণের দাম কমানোর কারণ

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আন্তর্জাতিক বাজারে স্বর্ণের দর কমার প্রভাব দেশের বাজারেও পড়েছে। এছাড়াও, তেজাবি স্বর্ণের দাম হ্রাস পেয়েছে যা স্থানীয় বাজারে সমন্বয় প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করেছে।

বাজুসের কর্মকর্তারা জানান, স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিক স্বর্ণ বাজারের পরিস্থিতি বিবেচনা করে প্রতি কয়েকদিন অন্তর দাম সমন্বয় করা হয়। অক্টোবর মাসেই দেশজুড়ে স্বর্ণের দাম কমানোর এই দ্বিতীয় দফা ঘটলো।

চলতি বছরের স্বর্ণের বাজার সমন্বয়

২০২৫ সালে দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম মোট ৬৮ বার সমন্বয় করা হয়েছে। এর মধ্যে ৪৮ বার দাম বৃদ্ধি পেয়েছে, আর ২০ বার দাম কমানো হয়েছে। তুলনামূলকভাবে ২০২৪ সালে মোট ৬২ বার দাম সমন্বয় করা হয়েছিল, যেখানে ৩৫ বার দাম বাড়ানো হয়েছিল এবং ২৭ বার দাম কমানো হয়েছিল।

অর্থনীতিবিদরা বলছেন, এই সমন্বয় বাজারকে স্থিতিশীল রাখার পাশাপাশি স্বর্ণ ক্রেতাদের জন্যও সহায়ক। তবে দাম ওঠানামা অনেকটাই আন্তর্জাতিক স্বর্ণের বাজারের সঙ্গে সম্পর্কিত।

আন্তর্জাতিক বাজারের প্রভাব

বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দর কমার কারণে বাংলাদেশে দাম কমানো হয়েছে। আন্তর্জাতিক বাজারে স্বর্ণের মূল্য হ্রাস পেলে স্থানীয় বাজারও প্রভাবিত হয়। এছাড়া বিদেশি বিনিয়োগ ও রেমিট্যান্সের প্রবাহও স্বর্ণের বাজারে প্রভাব ফেলে।

সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপে বাজার বিশ্লেষকরা জানিয়েছেন, “বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দামের ওঠানামা এবং বিনিয়োগের চাহিদার পরিবর্তন দেশীয় বাজারে দামকে সরাসরি প্রভাবিত করে।”

ক্রেতাদের জন্য প্রভাব

স্বর্ণের দাম কমার ফলে গহনা ক্রেতাদের জন্য সুবিধা তৈরি হয়েছে। বিশেষ করে বিবাহ ও অন্যান্য অনুষ্ঠানের জন্য ক্রেতারা স্বল্প খরচে স্বর্ণ কিনতে পারবেন।

বাজারে বিক্রেতাদের মতে, দাম কমার ফলে ক্রেতাদের আগ্রহ বেড়ে গেছে। তারা আশা করছেন, আগামী সপ্তাহে ক্রেতাদের ভিড় আরও বাড়বে।

বাজারের প্রতিক্রিয়া ও বিশ্লেষণ

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, স্বর্ণের দামের হ্রাস সাময়িক হলেও বাজারের লিকুইডিটি বাড়াতে সহায়ক। তবে যদি আন্তর্জাতিক বাজারে আবার দাম বাড়ে, স্থানীয় বাজারেও সমন্বয় করা হবে।

তারা আরও বলেন, “ক্রেতাদের জন্য এই মুহূর্তটি উপযুক্ত সময় স্বর্ণ বিনিয়োগের। তবে দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক বাজারের অবস্থান লক্ষ্য করা গুরুত্বপূর্ণ।”

দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম কমানো ক্রেতাদের জন্য সুখবর হলেও আন্তর্জাতিক বাজারের ওঠানামা ভবিষ্যতে স্থানীয় দামে প্রভাব ফেলতে পারে। চলতি বছরের বিভিন্ন দামের সমন্বয় ক্রেতা ও ব্যবসায়ীদের জন্য নজরদারির প্রয়োজনীয়তা তৈরি করেছে।

এম আর এম – ১৯৫৩,Signalbd.com

মন্তব্য করুন
Advertisement

Related Articles

Back to top button