রাজনীতি

পিআর ও ‘জুলাই সনদ’ বাস্তবায়ন দাবিতে জামায়াতের ১২ দিনের কর্মসূচি

Advertisement

মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫) মগবাজারের আল ফালাহ মিলনায়তনে জামায়াতে ইসলামী তাদের দ্বিতীয় ধাপের ১২ দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। দলটির সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর মিয়া গোলাম পরওয়ার জানান, ১ থেকে ৯ অক্টোবর দেশের বিভিন্ন এলাকায় গণসংযোগ ও মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হবে। ১০ অক্টোবর ঢাকাসহ বিভাগীয় শহরে গণমিছিল এবং ১২ অক্টোবর প্রত্যেক জেলায় জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি প্রদান করা হবে। এই কর্মসূচির মূল লক্ষ্য পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন, ‘জুলাই সনদ’ বাস্তবায়নের আইনি ভিত্তি নিশ্চিতকরণ এবং পাঁচ দফা দাবি বাস্তবায়নে প্রভাব সৃষ্টি করা।

জামায়াতের পাঁচ দফা দাবি

১. জাতীয় সংসদ নির্বাচন জুলাই সনদের ভিত্তিতে আয়োজন।
২. নির্বাচন পদ্ধতি হিসেবে প্রোপোরশনাল রিপ্রেজেন্টেশন (পিআর) পদ্ধতি গ্রহণ।
৩. সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিতকরণ, প্রতিটি দলকে সমান সুযোগ ও নিরাপত্তা প্রদান।
৪. জুলাই-আগস্টের গণপ্রতিষ্ঠানের সময়কালের গণহত্যা ও অতীত নির্যাতনের বিচার দৃশ্যমান করা।
৫. বিশেষ ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে ভারতীয় অনুপ্রবেশকারী ও ফ্যাসিবাদী ষড়যন্ত্রের সহযোগীদের বিচার ও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধকরণ।

জামায়াত দাবি করে, এই পাঁচ দফা বাস্তবায়ন হলে নির্বাচনী প্রক্রিয়া গ্রহণযোগ্য হবে এবং জনগণের আস্থা ফিরে আসবে।

কর্মসূচির ধাঁচ ও কৌশল

  • ১-৯ অক্টোবর: এলাকায় এলাকায় গণসংযোগ, মতবিনিময় সভা, গোলটেবিল ও সেমিনার।
  • ১০ অক্টোবর: ঢাকাসহ বিভাগীয় শহরে গণমিছিল।
  • ১২ অক্টোবর: জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি প্রদান।

এই তিন স্তরের কর্মসূচি জনমত গঠন, গণচাপ সৃষ্টি ও প্রশাসনিক নথিভুক্তির সমন্বয় ঘটাবে।

‘জুলাই সনদ’—প্রেক্ষাপট ও আইনি দাবি

‘জুলাই সনদ’ ২০২৪ সালের গণআন্দোলনের প্রেক্ষাপটে গঠিত একটি জাতীয় কাঠামোগত চুক্তি, যা সংবিধানিক ও প্রশাসনিক সংস্কারের সুপারিশ করে। জামায়াত এই সনদকে আইনি রূপ দিতে ‘সংবিধান আদেশ’ জারি বা গণভোটের মাধ্যমে বৈধতা দেওয়ার দাবি জানায়। দল মনে করে, আইনগত ভিত্তি ছাড়া গণআন্দোলন ও সুষ্ঠু পরিবর্তন ঝুঁকিপূর্ণ হবে।

পিআর পদ্ধতির গুরুত্ব

জামায়াতের মতে, পিআর পদ্ধতি ভোটের সংখ্যা নয়, রাজনৈতিক মত ও গোষ্ঠীর সঠিক প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করে। এটি ভোটকেন্দ্র দখল, কালো টাকা ও পেশিশক্তি প্রদর্শনের মতো অনিয়ম কমায় এবং মানসম্মত সংসদ গঠনে সহায়ক।

রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট ও সম্ভাব্য প্রভাব

২০২৪ সালের গণ-অভ্যুত্থান ও অন্তর্বর্তী সরকারের কাজের পরিপ্রেক্ষিতে জামায়াত মনে করে, অনেক সংস্কার অসম্পূর্ণ রয়েছে। তাদের দাবি, এই কর্মসূচি বিরোধী শক্তিকে সংগঠিত করে জনমত গঠন করবে। তবে প্রশাসনিক ও নিরাপত্তা ব্যবস্থার প্রতিক্রিয়া কী হবে তা সময়ই বলবে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ হলেও সরকারের নজরদারি ও আইনি কাঠামো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

সংক্ষেপে পাঠকের জন্য

  • কী: জামায়াত ১-৯ অক্টোবর গণসংযোগ, ১০ অক্টোবর গণমিছিল, ১২ অক্টোবর স্মারকলিপি প্রদান করবে।
  • কেন: পিআর পদ্ধতি, ‘জুলাই সনদ’ বাস্তবায়ন, লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড, গণহত্যার বিচার ও নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতা নিশ্চিত করতে।
  • কীভাবে: জনমত গঠন থেকে প্রশাসনিক দাবি নথিভুক্তি পর্যন্ত সমন্বিত কর্মসূচি।

MAH – 13093 I Signalbd.com

মন্তব্য করুন
Advertisement

Related Articles

Back to top button