
চীনা প্রযুক্তিপ্রতিষ্ঠান শাওমি আবারো প্রমাণ করলো তাদের শক্ত অবস্থান। বিক্রির দিক দিয়ে তারা ছুঁয়েছে এক নতুন মাইলফলক। সম্প্রতি বাজারে আসা শাওমির সেভেনটিন সিরিজ স্মার্টফোন চীনা বাজারে ঝড় তুলেছে। মাত্র কয়েক মিনিটের মধ্যেই ফোনটির সব স্টক শেষ হয়ে গেছে, যা তৈরি করেছে নতুন এক রেকর্ড।
শাওমির সেভেনটিন সিরিজ: বিক্রিতে ঝড়
শাওমি সবসময়ই প্রযুক্তিপ্রেমীদের জন্য সাশ্রয়ী দামে সেরা ফিচার আনার চেষ্টা করে আসছে। তবে এবারের শাওমি 17 সিরিজ যেন বাজারে একেবারে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। চীনে ওপেন সেল শুরু হতেই গ্রাহকদের উচ্ছ্বাস দেখা যায়। মাত্র ৫ মিনিটেই ফোনের সব স্টক বিক্রি হয়ে যায়।
শাওমির মতে, এটি তাদের জন্য একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত। কারণ কোনো সিরিজ এত দ্রুত বিক্রি হওয়ার রেকর্ড তারা আগে কখনো করেনি।
অ্যাপলের চ্যালেঞ্জে শাওমি
প্রযুক্তি জগতে শাওমি সবসময় অ্যাপল ও স্যামসাংকে টেক্কা দিতে চেষ্টা করে এসেছে। এবারের সেভেনটিন সিরিজকেও অনেকেই বলছেন “অ্যাপলকে সরাসরি চ্যালেঞ্জ”। কিছুদিন আগেই অ্যাপল তাদের নতুন আইফোন বাজারে এনেছিল, ঠিক তার পরপরই শাওমি ঘোষণা করে সেভেনটিন সিরিজের। এর ফলে বাজারে প্রতিযোগিতা আরও বেড়ে যায়।
টেক বিশেষজ্ঞদের মতে, শাওমির সেভেনটিন সিরিজ অনেক ক্ষেত্রেই অ্যাপলের সর্বশেষ আইফোনকে ছাড়িয়ে যেতে সক্ষম। বিশেষ করে ব্যাটারি, ক্যামেরা ও ডিসপ্লেতে।
ফিচার ও প্রযুক্তির নবযাত্রা
শাওমির নতুন এই সিরিজে যুক্ত করা হয়েছে বেশ কিছু অত্যাধুনিক ফিচার:
- প্রসেসর: কোয়ালকম স্ন্যাপড্রাগন ৮ এলিট জেন-৫ প্রসেসর, যা গেমিং এবং হাই-এন্ড টাস্কের জন্য অসাধারণ।
- ডিসপ্লে: সর্বশেষ OLED প্রযুক্তি, উচ্চ রিফ্রেশ রেট এবং চমৎকার রঙের নির্ভুলতা।
- ক্যামেরা: উন্নত AI ক্যামেরা সিস্টেম, নাইট মোড, 8K ভিডিও রেকর্ডিং এবং প্রফেশনাল লেভেল ফটোগ্রাফি সুবিধা।
- ব্যাটারি: ৭০০০ mAh এর শক্তিশালী ব্যাটারি, সঙ্গে 120W ফাস্ট চার্জিং।
- ডিজাইন: আরও হালকা, আকর্ষণীয় এবং ব্যবহারবান্ধব।
‘প্রো’ মডেল: গেম চেঞ্জার
শাওমি 17 সিরিজে বিভিন্ন মডেল এসেছে। এর মধ্যে ‘প্রো’ মডেলগুলোকে বলা হচ্ছে “গেম চেঞ্জার”। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই ফোনগুলো শুধু সাধারণ ব্যবহারকারীদের নয়, পেশাদার ফটোগ্রাফার, গেমার ও কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের জন্যও এক অসাধারণ সমাধান হবে।
বাজারে প্রভাব
শাওমির এই সাফল্য শুধু চীনের ভেতরেই সীমাবদ্ধ থাকবে না। আগামীতে বিশ্ববাজারে এই ফোনের বিক্রিও ব্যাপকভাবে বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ভারত, বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার বাজারেও শাওমি সবসময়ই জনপ্রিয়। ফলে সেভেনটিন সিরিজ এখানেও বিপুল সাড়া ফেলবে বলে আশা করা হচ্ছে।
টেক বিশ্লেষকদের মতে, সাশ্রয়ী দামে উন্নত ফিচার দেওয়ার কারণেই শাওমি দ্রুত বিশ্ববাজারে জায়গা করে নিচ্ছে।
গ্রাহকদের প্রতিক্রিয়া
গ্রাহকদের মধ্যে শাওমির প্রতি আস্থা ক্রমেই বাড়ছে। সেভেনটিন সিরিজ বাজারে আসার পর অনলাইনে বিভিন্ন রিভিউতে দেখা গেছে, ব্যবহারকারীরা ফোনটির ব্যাটারি ও ক্যামেরা নিয়ে বেশ সন্তুষ্ট। অনেকেই বলছেন, এই দামে এত শক্তিশালী ফোন পাওয়া সত্যিই এক নতুন অভিজ্ঞতা।
প্রতিযোগিতায় শীর্ষে শাওমি?
প্রশ্ন এখন, অ্যাপল ও স্যামসাংকে পিছনে ফেলে কি শাওমি বাজারের শীর্ষে উঠে আসতে পারবে? বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, যদি শাওমি এই ধারা বজায় রাখে, তাহলে খুব শিগগিরই তারা বৈশ্বিক বাজারে শীর্ষস্থান দখল করতে সক্ষম হবে।
তবে কিছু চ্যালেঞ্জও রয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, আন্তর্জাতিক বাজারে ব্র্যান্ড ভ্যালু ও প্রিমিয়াম ইমেজ গড়ে তোলা এখনো শাওমির জন্য কঠিন। কিন্তু প্রযুক্তি ও ফিচারের দিক দিয়ে তারা ইতিমধ্যেই শক্ত অবস্থানে পৌঁছে গেছে।
শাওমির সেভেনটিন সিরিজ শুধু একটি ফোন নয়, বরং প্রযুক্তি জগতে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা। দ্রুততম সময়ে বিক্রি হয়ে যাওয়া এই সিরিজ প্রমাণ করেছে, গ্রাহকরা শাওমিকে কতটা ভালোবাসে। আগামী দিনগুলোতে শাওমি বিশ্ব প্রযুক্তি বাজারে আরও বড় চমক নিয়ে আসবে – এটাই এখন সকলের প্রত্যাশা।
MAH – 13071 I Signalbd.com