বাংলাদেশ

জামায়াত আমিরের সঙ্গে ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূতের সাক্ষাৎ, হলো যে আলোচনা

Advertisement

বাংলাদেশের রাজনৈতিক দল জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমানের সঙ্গে বাংলাদেশের নিযুক্ত ফিলিস্তিন রাষ্ট্রদূত ইউসুফ সালেহ ওয়াই. রামাদানের সৌজন্য সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয় এবং ফিলিস্তিনসহ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার ইস্যু নিয়ে আলোচনা হয়

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান রোববার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বাংলাদেশের নিযুক্ত ফিলিস্তিন রাষ্ট্রদূত ইউসুফ সালেহ ওয়াই. রামাদানের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন। সাক্ষাৎটি অনুষ্ঠিত হয় ঢাকা শহরের জামায়াত কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে।

এতে দুই পক্ষের মধ্যে ফিলিস্তিনের বর্তমান পরিস্থিতি, আন্তর্জাতিক আইন ও মানবাধিকারের লঙ্ঘন এবং বাংলাদেশের জনগণের সমর্থন নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।

সাক্ষাতের বিস্তারিত

ডা. শফিকুর রহমান ফিলিস্তিনের জনগণের প্রতি বাংলাদেশের মানুষের গভীর ভালোবাসা ও সমর্থনের কথা তুলে ধরে বলেন, ফিলিস্তিনের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক চিরকাল অটুট থাকবে। তিনি ইসরায়েলের সাম্প্রতিক আগ্রাসন ও গাজায় চলমান ধ্বংসযজ্ঞের তীব্র নিন্দা জানান।

তিনি বলেন, গত দুই বছরের মধ্যে ইসরায়েলি হামলায় প্রায় ৬৫ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত এবং ১ লাখ ৭০ হাজার আহত হয়েছেন। গাজার ২ হাজার ৭০০ পরিবার পুরোপুরি ধ্বংসপ্রাপ্ত, হাসপাতাল, মসজিদ এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

ডা. শফিকুর রহমান ফিলিস্তিনি জনগণের ওপর ইসরায়েলের অবরোধ ও খাদ্যাভাবের বিষয়টিও উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, “হাজার হাজার শিশু এবং সাধারণ মানুষ অনাহারে মারা যাচ্ছে। এটি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার লঙ্ঘন।”

বাংলাদেশ ও ফিলিস্তিনের সম্পর্ক

ডা. শফিকুর রহমান বাংলাদেশের জনগণের পক্ষ থেকে ফিলিস্তিনকে সমর্থন অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতি দেন। তিনি বলেন, ফিলিস্তিন যেন একটি স্বাধীন জাতিরাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে পারে, তা বাংলাদেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূত ইউসুফ সালেহ ওয়াই. রামাদান সাক্ষাতের প্রশংসা করেন এবং বাংলাদেশের জনগণের, বিশেষ করে জামায়াতে ইসলামীর সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, “ডা. শফিকুর রহমানের সঙ্গে সাক্ষাৎ হওয়ায় আমি নিজেকে ধন্য মনে করছি।”

আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপট

ফিলিস্তিনের ওপর ইসরায়েলের আগ্রাসন ও স্থল অভিযান আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নজরে এসেছে। ডা. শফিকুর রহমান জাতিসংঘ, ওআইসি এবং অন্যান্য শান্তিকামী দেশগুলোকে আহ্বান জানান যাতে তারা ইসরায়েলকে গাজা দখল ও ফিলিস্তিনিদের বাস্তুচ্যুত করা থেকে বিরত রাখে।

তিনি উল্লেখ করেন, ইসরায়েলের এই অভিযান কেবল ফিলিস্তিনের জন্য নয়, বরং গোটা বিশ্বের শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি। এই ধরনের আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ছাড়া ফিলিস্তিনের মানুষের কষ্ট ও মানবাধিকার লঙ্ঘন প্রতিরোধ করা সম্ভব নয়।

ফিলিস্তিনের মানবিক সংকট

গাজার অবকাঠামো ব্যাপকভাবে ধ্বংসপ্রাপ্ত। হাসপাতাল, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং মসজিদগুলো বিধ্বস্ত হয়েছে। খাদ্য ও চিকিৎসা সরবরাহ ব্যাহত হওয়ায় জনসংখ্যার বড় অংশের জীবন বিপন্ন।

ডা. শফিকুর রহমান এই মানবিক সংকটের তীব্রতা তুলে ধরে বলেন, আন্তর্জাতিক সাহায্য ও সমর্থন অব্যাহত না থাকলে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ রূপ নেবে।

ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা ও প্রত্যাশা

ডা. শফিকুর রহমান ফিলিস্তিনের প্রতি বাংলাদেশের সহযোগিতা ও সমর্থন অব্যাহত থাকবে বলে আশ্বাস দেন। এছাড়া তিনি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে আহ্বান জানান, যাতে ফিলিস্তিনিদের অধিকার রক্ষা করা হয় এবং তারা একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হতে পারে।

রাষ্ট্রদূতও আশা প্রকাশ করেন, বাংলাদেশের সমর্থন ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে। এই সাক্ষাৎ ফিলিস্তিনি জনগণ ও বাংলাদেশের সম্পর্ককে আরও দৃঢ় করার প্রমাণ হিসেবে ধরা হচ্ছে।

পরিশেষে

জামায়াত আমির ডা. শফিকুর রহমান এবং ফিলিস্তিন রাষ্ট্রদূত ইউসুফ সালেহ ওয়াই. রামাদানের সাক্ষাৎ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার, ফিলিস্তিনের স্বাধীনতা এবং বাংলাদেশের সমর্থন বিষয়ক আলোচনা মূলক। এটি দুই দেশের জনগণ এবং রাজনৈতিক নেতৃত্বের মধ্যে আন্তরিক সম্পর্ক ও সহযোগিতার গুরুত্ব প্রমাণ করেছে।

পাঠকরা এখন জানার অপেক্ষায় আছেন, এই সহযোগিতা ভবিষ্যতে কিভাবে ফিলিস্তিনের পরিস্থিতির উন্নয়নে প্রভাব ফেলবে।

এম আর এম – ১২৩০,Signalbd.com

মন্তব্য করুন
Advertisement

Related Articles

Back to top button