বিয়ের কর বাতিল: অনলাইনে সত্যায়ন এখন সহজলভ্য
আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন, বিয়ের ক্ষেত্রে আরোপিত কর বাতিল করা হয়েছে। এ ছাড়া ডকুমেন্ট সত্যায়ন প্রক্রিয়াকে সম্পূর্ণ অনলাইনভিত্তিক করার মাধ্যমে জনগণের ভোগান্তি কমানো হয়েছে।
বিবাহ কর বাতিল
সংবাদ সম্মেলনে আইন উপদেষ্টা জানান, বিয়ের সময় কর প্রদানের নিয়মটি অযৌক্তিক এবং তা জনগণের জন্য একটি বাড়তি চাপ তৈরি করছিল। তিনি বলেন,
“বিয়ের ট্যাক্সে আজকে সাইন করলাম। এখন থেকে যে কেউ কর ছাড়া বিয়ে করতে পারবেন।”
উল্লেখ্য, বিয়ের ফরমে থাকা ‘বিবাহিতা নাকি কুমারী’ শব্দ পরিবর্তন করে আরও সম্মানজনক শব্দ ‘অবিবাহিতা’ ব্যবহার করা হয়েছে। এটি নারীদের মর্যাদা রক্ষার একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ বলে তিনি উল্লেখ করেন।
ডকুমেন্ট সত্যায়ন এখন অনলাইনে
আইন মন্ত্রণালয়ের অধীনে ৩৬ ধরনের ডকুমেন্ট সত্যায়নের কাজ এখন অনলাইনভিত্তিক প্রক্রিয়ায় সম্পন্ন হচ্ছে। গত বছরের ১৩ ডিসেম্বর থেকে এই প্রক্রিয়া চালু হয়। উপদেষ্টা জানান,
“আমাদের মন্ত্রণালয়ের সামনে আগে সত্যায়নের জন্য দীর্ঘ লাইন থাকত। এখন অনলাইনে ঘরে বসে মাত্র দুই-এক দিনের মধ্যেই সত্যায়নের কাজ শেষ করা যাচ্ছে।”
এই নতুন ব্যবস্থায় বাংলাদেশি নাগরিকদের বিদেশি দূতাবাসে অতিরিক্ত সার্ভিস ফি প্রদান করতে হচ্ছে না। উপদেষ্টার মতে, এতে বছরে প্রায় ৫০০ থেকে ৭০০ কোটি টাকা জনগণের সাশ্রয় হচ্ছে।
আইন সংস্কারে বড় পরিবর্তনের ইঙ্গিত
আইন ব্যবস্থার বিভিন্ন ক্ষেত্রে সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। ফৌজদারি কার্যবিধির ১৫ থেকে ২০টি জায়গায় ইতোমধ্যে পরিবর্তনের প্রস্তাব চিহ্নিত করা হয়েছে। উপদেষ্টা বলেন,
“আমাদের লক্ষ্য আগামী ছয় মাসের মধ্যে এই সংস্কার কার্যক্রম সম্পন্ন করা। আমরা আশা করি, সবগুলো সংস্কার একত্রে বাস্তবায়িত হবে।”
বিচার বিভাগের উন্নয়নে বিশেষ উদ্যোগ
আইন উপদেষ্টা আরও জানান, বিচার বিভাগের সংস্কার ও সমন্বয় নিশ্চিত করতে সরকারের পক্ষ থেকে একটি কমিশন কাজ করছে। এই কমিশনের সহায়তায় আইন মন্ত্রণালয় একটি সুসংগঠিত এবং কার্যকর আইনি কাঠামো প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে।
নতুন পদক্ষেপের ইতিবাচক প্রভাব
বিয়ের কর বাতিল এবং ডকুমেন্ট সত্যায়নের প্রক্রিয়া অনলাইনে নিয়ে আসার ফলে জনগণের সময়, অর্থ এবং শ্রম সাশ্রয় হচ্ছে। এ উদ্যোগগুলো নাগরিক সেবার মান উন্নত করতে সহায়ক হবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
সংক্ষেপে প্রধান পয়েন্ট
- বিয়ের ক্ষেত্রে কর বাতিল হয়েছে।
- বিয়ের ফরমে ‘বিবাহিতা’ শব্দ পরিবর্তন করে ‘অবিবাহিতা’ করা হয়েছে।
- ৩৬ ধরনের ডকুমেন্ট সত্যায়নের প্রক্রিয়া এখন সম্পূর্ণ অনলাইনভিত্তিক।
- অনলাইনে সত্যায়নের ফলে জনগণের ৫০০-৭০০ কোটি টাকা সাশ্রয় হচ্ছে।
- ফৌজদারি কার্যবিধির ১৫-২০টি জায়গায় সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
এই উদ্যোগগুলো সরকারের ডিজিটাল রূপান্তর এবং জনগণের জন্য সহজ, দ্রুত ও সম্মানজনক সেবা নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতির অংশ।