
বাংলাদেশ ব্যাংক আগামী মঙ্গলবার থেকে ১০০ টাকার নতুন নোট বাজারে ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আজ রোববার (১০ আগস্ট) বাংলাদেশ ব্যাংকের কমিউনিকেশন্স অ্যান্ড পাবলিকেশন্স বিভাগের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দেশের ঐতিহাসিক ও প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপত্যের নকশা সংযোজন করে সব মূল্যমানের নোটের নতুন সিরিজ চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এই ধারাবাহিকতায় ১০০০, ৫০ এবং ২০ টাকার নতুন নোটের পর এবার আসছে ১০০ টাকার নতুন নোট।
গভর্নরের স্বাক্ষরিত নোট
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুরের স্বাক্ষরিত এই ১০০ টাকার নতুন নোট প্রথম পর্যায়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের মতিঝিল অফিস থেকে বাজারে ছাড়ানো হবে। পরে দেশের অন্যান্য শাখা থেকেও এই নোট ইস্যু করা হবে। বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, নতুন নোট বাজারে আনার মূল লক্ষ্য হলো অর্থ লেনদেনে আধুনিকতা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।
নোটের নকশা ও নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য
নতুন ১০০ টাকার নোটে দেশের ঐতিহাসিক স্থাপত্যের ছবি ব্যবহার করা হয়েছে, যা নোটকে আরও দৃষ্টিনন্দন করেছে। নিরাপত্তার জন্য এতে উন্নতমানের সিকিউরিটি থ্রেড, ওয়াটারমার্ক, মাইক্রোপ্রিন্টিং, ল্যাটেন্ট ইমেজ এবং বিশেষ কালি ব্যবহার করা হয়েছে। এসব বৈশিষ্ট্য নকল নোট শনাক্ত করাকে সহজ করবে এবং লেনদেনের নিরাপত্তা বাড়াবে।
পুরনো নোটের অবস্থান
বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে, নতুন ১০০ টাকার নোট বাজারে আসলেও বর্তমানে প্রচলিত পুরনো নোট একইভাবে বৈধ মুদ্রা হিসেবে লেনদেনযোগ্য থাকবে। অর্থাৎ, গ্রাহক ও ব্যবসায়ীরা পুরনো এবং নতুন উভয় ধরনের নোট ব্যবহার করতে পারবেন। ধীরে ধীরে বাজারে নতুন নোটের পরিমাণ বাড়ানো হবে।
পূর্ববর্তী নোট পরিবর্তনের ধারাবাহিকতা
এর আগে বাংলাদেশ ব্যাংক ১০০০, ৫০ এবং ২০ টাকার নোটের নতুন ডিজাইন বাজারে এনেছে। প্রতিটি নোটেই ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক গুরুত্বসম্পন্ন স্থাপনার ছবি সংযোজন করা হয়েছে। নতুন সিরিজের নোট চালুর মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংক দেশের মুদ্রা ব্যবস্থায় আধুনিকতা ও বৈচিত্র্য আনার প্রচেষ্টা চালাচ্ছে।
অর্থনীতিতে প্রভাব
নতুন নোট চালুর ফলে বাজারে মুদ্রা লেনদেনের প্রক্রিয়ায় নতুনত্ব আসবে বলে আশা করছেন অর্থনীতিবিদরা। উন্নত নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্যের কারণে নকল নোট প্রতিরোধে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। এছাড়া, নতুন নোটের দৃষ্টিনন্দন নকশা জনগণের মাঝে আকর্ষণ সৃষ্টি করবে, যা নগদ লেনদেনের সময় ভোক্তাদের আস্থা বাড়াতে সহায়ক হবে।
বিশেষজ্ঞ মতামত
আর্থিক খাতের বিশ্লেষকরা মনে করেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের এই উদ্যোগ অর্থনীতির জন্য ইতিবাচক সংকেত। একদিকে নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য উন্নত হওয়ায় নকল নোটের ঝুঁকি কমবে, অন্যদিকে মুদ্রার নকশা পরিবর্তন জনগণের কাছে মুদ্রার প্রতি আগ্রহ বাড়াবে। তবে তারা মনে করিয়ে দেন, কেবল নোট পরিবর্তন নয়, বরং নোট ব্যবস্থাপনায় প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ানোও জরুরি।
সারসংক্ষেপ
আগামী মঙ্গলবার থেকে বাজারে আসছে নতুন ১০০ টাকার নোট, যা একদিকে দৃষ্টিনন্দন নকশা, অন্যদিকে আধুনিক নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য বহন করবে। পুরনো নোটও চলবে সমানভাবে, ফলে বাজারে কোনো ধরনের মুদ্রা সংকট তৈরি হবে না। নতুন নোটের মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংক মুদ্রা ব্যবস্থায় একধাপ এগিয়ে গেল।
এম আর এম – ০৭৮২, Signalbd.com