যেভাবে চীনা সরঞ্জাম ব্যবহার করে ভারতের অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করে পাকিস্তান

ভারত-পাকিস্তান আকাশসীমায় সাম্প্রতিক সময়ে ঘটে যাওয়া বড় ধরনের সংঘর্ষে পাকিস্তানের হাতে ভারতের অত্যাধুনিক রাফাল যুদ্ধবিমান ভূপাতিত হওয়ার খবর আন্তর্জাতিক মহলে ব্যাপক আলোড়ন তুলেছে। পাকিস্তান যে চীনা প্রযুক্তি ও সরঞ্জাম ব্যবহার করে এই সাফল্য অর্জন করেছে, সেটি এখন সামরিক বিশেষজ্ঞদের নতুন আলোচনার বিষয়।
৭ মে রাতের সেই ঐতিহাসিক আকাশযুদ্ধ
গত এপ্রিল মাসে জম্মু ও কাশ্মীরের পেহেলগামে ভয়াবহ হামলার পর থেকেই ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা চরমে ওঠে। ৭ মে মধ্যরাতের কিছু পরেই পাকিস্তানি বিমান বাহিনীর সদর দপ্তরের অপারেশন রুমে একের পর এক তথ্য ভেসে আসে। ভারতীয় যুদ্ধবিমান সীমান্তের দিকে এগিয়ে আসছে বলে ধারণা পায় ইসলামাবাদ।
সেই মুহূর্তে পাকিস্তানি বিমান বাহিনীর প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল জহির সিধু দ্রুত সিদ্ধান্ত নেন। তিনি নির্দেশ দেন, ফরাসি প্রযুক্তির গর্ব রাফালকে টার্গেট করতে এবং যেকোনো মূল্যে আকাশ থেকে নামাতে।
চীনা জে-১০সি ও পিএল-১৫ ক্ষেপণাস্ত্রের ভূমিকা
পাকিস্তানের ব্যবহৃত চীনা তৈরি জে-১০সি মাল্টিরোল যুদ্ধবিমান এই অভিযানের মূল অংশ ছিল। আধুনিক এই যুদ্ধবিমান দূরপাল্লার পিএল-১৫ ক্ষেপণাস্ত্র বহন করতে সক্ষম। পাকিস্তানি সূত্রে জানা গেছে, জে-১০সি থেকে ছোড়া পিএল-১৫ ক্ষেপণাস্ত্র প্রায় ২০০ কিলোমিটার দূর থেকে লক্ষ্যভেদ করে রাফালকে আঘাত হানে।
এটি আধুনিক সামরিক ইতিহাসে অন্যতম দীর্ঘ পাল্লার আকাশ থেকে আকাশে আক্রমণের সফল উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করা হচ্ছে। ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থার ধারণা ছিল যে পিএল-১৫ এর পাল্লা সর্বোচ্চ ১৫০ কিলোমিটার, কিন্তু বাস্তবে তা আরও বেশি হওয়ায় ভারতীয় পাইলটরা নিরাপদ দূরত্বে আছে ভেবে ভুল করেছিলেন।
গোয়েন্দা তথ্যের ব্যর্থতা এবং পাকিস্তানের সাফল্যের রহস্য
এই সংঘর্ষের ফলাফল দেখিয়ে দিয়েছে, শুধু উন্নত যুদ্ধবিমান থাকলেই জয় নিশ্চিত হয় না। সঠিক গোয়েন্দা তথ্য ও প্রযুক্তিগত সমন্বয়ই এখানে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছে।
রয়টার্স এবং আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকদের প্রতিবেদন অনুসারে, পাকিস্তান তাদের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা, চীনা প্রযুক্তি এবং নিজস্ব ডেটা লিংক সিস্টেমের মাধ্যমে একটি সমন্বিত ‘কিল চেইন’ তৈরি করেছিল। এই সিস্টেমের মাধ্যমে স্থলভিত্তিক রাডার, নজরদারি বিমান এবং যুদ্ধবিমান—সব একসঙ্গে কাজ করছিল। এর ফলে পাকিস্তানি পাইলটরা দূর থেকে রাডার বন্ধ রেখেই ভারতীয় বিমানগুলোকে ট্র্যাক করতে সক্ষম হয়।
অবসরপ্রাপ্ত ব্রিটিশ এয়ার মার্শাল গ্রেগ ব্যাগওয়েল বলেন, “যে পক্ষ যুদ্ধক্ষেত্রে সবচেয়ে ভালো পরিস্থিতি সম্পর্কে অবগত থাকে, সেই পক্ষই জিততে পারে। এই ঘটনায় প্রযুক্তি নয়, বরং সঠিক তথ্য ও তা ব্যবহার করার দক্ষতাই সাফল্যের মূল চাবিকাঠি ছিল।”
আক্রমণের পর ভারতীয় প্রতিক্রিয়া
যুদ্ধবিমান ভূপাতিত হওয়ার খবর ভারতীয় পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকার করা হয়নি। তবে আন্তর্জাতিক সূত্রের বরাত দিয়ে জানা যায়, ভারত পরবর্তী কয়েক সপ্তাহে পাল্টা প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপ নেয়।
ভারতীয় বিমান বাহিনী পাকিস্তানের সামরিক স্থাপনা লক্ষ্য করে আক্রমণ শুরু করে এবং নিজেদের কৌশল পরিবর্তন করে। দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি ব্রহ্মোস সুপারসনিক ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে পাকিস্তানের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ভেদ করার চেষ্টা চালানো হয়।
চীন-পাকিস্তান সামরিক সহযোগিতা নিয়ে নতুন প্রশ্ন
এই ঘটনায় ভারত অভিযোগ করেছে, সংঘর্ষ চলাকালীন পাকিস্তান চীন থেকে সরাসরি তথ্য পেয়েছে। যদিও ইসলামাবাদ এই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে, তবুও এই যুদ্ধের পর চীনের সামরিক সহায়তা ও প্রশিক্ষণের বিষয়টি আরও গুরুত্বের সঙ্গে আলোচনায় এসেছে।
চীনের পক্ষ থেকেও এই ঘটনার পর পাকিস্তানের জে-১০সি ব্যবহারের পদ্ধতি নিয়ে আগ্রহ দেখা গেছে। জুলাই মাসে চীনের বিমান বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা পাকিস্তান সফর করে ‘মাল্টি ডোমেইন অপারেশন’ কৌশল ঘনিষ্ঠভাবে পর্যালোচনা করেন।
ভবিষ্যতের জন্য কী শিক্ষা
এই আকাশযুদ্ধ থেকে আন্তর্জাতিক সামরিক বিশেষজ্ঞরা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তুলে ধরেছেন—শুধু উন্নত প্রযুক্তির বিমান বা ক্ষেপণাস্ত্র নয়, গোয়েন্দা তথ্যের সঠিকতা এবং পরিস্থিতি মূল্যায়নের ক্ষমতাই আধুনিক যুদ্ধে সবচেয়ে বড় অস্ত্র।
বর্তমানে ভারত ও পাকিস্তান উভয়েই নিজেদের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এবং গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহের কৌশল আরও আধুনিক করার দিকে মনোযোগ দিচ্ছে।
শেষ পর্যন্ত এই ঘটনার প্রভাব শুধু ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকছে না, বরং আন্তর্জাতিক সামরিক বাজারেও চীনা প্রযুক্তির চাহিদা এবং পশ্চিমা সামরিক সরঞ্জামের কার্যকারিতা নিয়ে নতুনভাবে প্রশ্ন তুলেছে।
এম আর এম – ০৬৩৮, Signalbd.com