ইসরায়েলি হামলায় গাজায় নিহত ৭২ ফিলিস্তিনি, চিকিৎসা সংকট তীব্র

গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের তীব্র বোমাবর্ষণে গতকাল রোববার অন্তত ৭২ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আল-জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজা সিটি ও উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায় চালানো এই হামলায় অনেক নারী ও শিশুসহ বেসামরিক লোকজন প্রাণ হারিয়েছে। এই হামলা গাজার already সংকটপূর্ণ স্বাস্থ্য ও মানবিক পরিস্থিতিকে আরও ভয়াবহ করে তুলেছে।
গাজার আল-আহলি হাসপাতাল ‘বিপর্যয়কর পরিস্থিতি’
গাজার স্থানীয় আল-আহলি হাসপাতালের পরিস্থিতি ‘বিপর্যয়কর’ বলে বর্ণনা করেছেন আল-জাজিরার সাংবাদিক মোয়াথ আল-কাহলৌত। তিনি জানিয়েছেন, জেইতুন, সাবরা ও আল-জাওয়িয়া বাজারসহ বিভিন্ন এলাকায় আহত অসংখ্য বেসামরিক মানুষ এই হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসছেন।
হাসপাতালে পর্যাপ্ত শয্যা, ওষুধ এবং চিকিৎসা সরঞ্জাম না থাকায় অনেক আহত মাটিতে পড়ে কাতরাচ্ছে। হাসপাতালে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা অপ্রতিরোধ্য চাপের মুখে পড়েছেন। শিশুদের সহ অনেক আহতের অবস্থা মারাত্মক হলেও প্রয়োজনীয় সেবা দিতে হাসপাতালগুলো কঠিন পরিস্থিতির সম্মুখীন।
ক্ষুধার্ত ফিলিস্তিনিদের ওপরও হামলা, নিহত ৫
গাজার স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, খাদ্য সহায়তা নিতে গাজার উত্তরাঞ্চলে গাজা হিউম্যানিটেরিয়ান ফাউন্ডেশন পরিচালিত সহায়তা কেন্দ্রে জমায়েত হওয়া অন্তত পাঁচজনকে ইসরায়েলি বাহিনী গুলি করে হত্যা করেছে। এই হামলা ক্ষুধার্ত ও মানবিক সাহায্যের জন্য অপেক্ষমাণ ফিলিস্তিনিদের উপর চালানো হয়, যা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার লঙ্ঘন হিসেবে বিবেচিত।
ফিলিস্তিনে ইসরায়েলি হামলায় মৃতের সংখ্যা ভয়াবহ মাত্রায়
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে চলমান ইসরায়েলি হামলায় গাজায় এখন পর্যন্ত ৫৬ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে অনেক নারী ও শিশু রয়েছেন। অন্যদিকে, ইসরায়েলের এক সংবাদপত্র হারেৎজের গবেষণায় বলা হয়েছে, গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনে নিহতের সংখ্যা প্রায় ১ লাখের কাছাকাছি পৌঁছেছে, যা গাজার মোট জনসংখ্যার প্রায় ৪ শতাংশের সমান।
বিশ্ব সম্প্রদায়ের নীরবতা ও মানবিক সংকট
গাজার এই বর্বর হামলা ও প্রাণহানির ঘটনায় আন্তর্জাতিক মহল থেকে তীব্র নিন্দা জানানো হলেও বাস্তব পরিস্থিতিতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ হয়নি। মানুষের মৌলিক অধিকার, খাদ্য, চিকিৎসা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বৈশ্বিক সম্প্রদায়কে আরও দায়িত্বশীল ভূমিকা নিতে হবে।
গাজার এই সংকটময় পরিস্থিতি শুধু একটি এলাকার সমস্যা নয়, এটি আন্তর্জাতিক শান্তি ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের গভীর এক সংকেত। এখনই সময় বিশ্বজুড়ে মানবিক সাহায্য ও শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য সক্রিয় উদ্যোগ নেওয়ার।